প্রকাশিত: ২১/০৯/২০১৮ ১০:২২ পিএম

একটা পরিণত বয়সে গিয়ে বিয়ে সব তরুণ-তরুণীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সঙ্গী নির্বাচন, বিয়ের প্রস্তুতি, কেনাকাটা, বিয়ে পরবর্তী বিভিন্ন পরিকল্পনাকে ঘিরেই একটি বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিয়ে মানেই যে শুধু এসব আয়োজনেই শেষ, তা নয়। বিয়ে মানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাকি জীবন কাটানো। তাই সঙ্গীর সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে এবং শারীরিক-মানসিক সুস্থতায় থাকলে হলে পাত্র-পাত্রীকে কিছু বিয়ের আগেই চিকিৎসা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার শরনাপন্ন হওয়া উচিৎ।

১. বিয়ের আগে পাত্রপাত্রী দুজনেরেই ব্লাড কাউন্ট, হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ যাতে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা রয়েছে কিনা জানা যাবে। অ্যানিমিয়া থাকলে শরীরে দুর্বলতা থাকবে, সংক্রমিত রোগ হতে পারে, সন্তান হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। অ্যানিমিয়া ধরা পড়লে তার চিকিৎসা নিন।

২. ব্লাড সুগার পরীক্ষা করে ডায়বেটিস বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নেয়া উচিৎ। ডায়বেটিস থাকলে ইনসুলিন নিতে হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদানে মায়ের বিশেষ চিকিৎসা, বিশেষ লাইফস্টাইলের প্রয়োজন। তাই বিয়ের আগে ডায়বেটিস ধরা পড়লে তার চিকিৎসা শুরু করাতে হবে।

৩. লিভার টেস্ট করে দেখে নেওয়া উচিত লিভার ফাংশন ঠিক রয়েছে কিনা। হেপাটাইটিস এ, বি, সি ঠিক রয়েছে কিনা। কারণ এগুলো সংক্রামিত হয়ে সঙ্গী ও সন্তানের শরীরে চলে যেতে পারে। আর বিয়ের আগেই দুজনেরই হেপাটাইটিস-এ ও বি ভ্যাকসিন নিয়ে রাখা উচিত।

৪. কোলেস্টেরল, লিপিড প্রোফাইলসহ কিছু আনুসাঙ্গিক পরীক্ষা করে নেয়া উচিত, যাতে হার্টের অবস্থা বোঝা যায়। কোলেস্টেরল বেশি থাকলে ওষুধের সাথে জীবনযাত্রা সংযত রাখাও প্রয়োজন। ফলে আগাম পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় কোলেস্টেরল বেশি তার চিকিৎসা করা উচিত।

৫. ইউরিয়া টেস্ট করে দেখা উচিত কিডনির ফাংশন কেমন রয়েছে। ইউরিয়া বেশি থাকলে তার থেকে বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে আগে থেকেই চেকআপ করিয়ে নেয়া ভালো। সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করে নেয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে থাইরয়েড পরীক্ষাও করে নিন। কারণ থাইরয়েড সমস্যা থেকে পরবর্তীতে সন্তান নেয়ায় সমস্যা হতে পারে।

৬. রুটিন চেকআপ হিসেবে দাঁত এবং চোখের পাওয়ার, রেটিনা একবার পরীক্ষা করে নেয়াও ভালো।

গাইনোকলজিকাল চেকআপ

গাইনোকলজিস্টের কাছে পাত্রীর পরীক্ষা করে নেয়া উচিত ইউটেরাস, ওভারি, জেনিটাল ট্র্যাকে কোনো সমস্যা আছে কিনা। সমস্যা থাকলে চিকিৎসা নেবেন। আর ব্রেস্ট পরীক্ষা করে দেখে নেয়া উচিত ব্রেস্টে কোন লাম্প আছে কিনা, তারও চিকিৎসা জরুরি। আর পাত্রপাত্রীদের দুজনেরই সেক্সুয়াল হেলথ চেকআপের প্রয়োজন আছে।

মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা

বিয়ের আগে নিজেকে মানসিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত করে নিতে হবে। ভেবে নিন বিয়ে নিয়ে কোনো ভয় বা সমস্যা মনের মধ্যে আছে কিনা। আপনার সঙ্গীকেও এ বিষয়ে জানতে ও জানাতে সাহায্য করুন। কোনো সমস্যা বোধ হলে কাউন্সেলরের সঙ্গে কাউন্সেলিং করুন। ভাবুন বিয়ের পর তিনি নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে শারীরিক, মানসিকভাবে মানিয়ে চলার জন্য আপনি প্রস্তুত আছেন কিনা।

পাঠকের মতামত