প্রকাশিত: ১৯/১১/২০২০ ৯:০৭ এএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার আবারো হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হৃদরোগ জনিত অসুস্থতার কারণে তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন বলে জানা গেছে। ওই হাসপাতালে তিনি বিশিষ্ট হূদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সোহরাবুজ্জামানের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অধ্যাপক ডা. সোহরাবুজ্জামান ল্যাবএইডের শুধু খ্যাতিমান চিকিৎসক নয়, তিনি এক সময় প্রধানমন্ত্রীরও চিকিৎসক ছিলেন। বাংলাদেশে যারা হূদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে তাদের মধ্যে অন্যতম। রুহুল কবির রিজভী বিএনপির রাজনীতি করেন এবং সরকারের কঠোর সমালোচক।

কিন্তু তারপরও হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে ল্যাবএইডে ভর্তি হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী রিজভীর সম্বন্ধে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার একজন ব্যক্তিগত স্টাফ কে বলেছেন যে, ‘তার কোনকিছু লাগলে আমাকে বলো।’প্রধানমন্ত্রীর একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ কিছু গুণ ধারণ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও যেমন তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিপদে সবার আগে যেতেন তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করতেন, ঠিক তেমনি ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে উদারতার হাত বাড়িয়ে দেন।

রহুল কবির রিজভীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়া বা তাকে আধুনিক সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নিশ্চয়তা দেয়াটাই প্রথম ঘটনা না। এর আগেও শেখ হাসিনা এরকম একাধিক উদারতার নজির স্থাপন করেছেন।

উল্লেখ্য যে, ড. কামাল হোসেন যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রস্তাব গ্রহণ করে সাক্ষাতের জন্য গণভবনে দাওয়াত দেন। এসময় তিনি তার একজন ব্যক্তিগত স্টাফকে ড. কামাল হোসেনের কাছে পাঠান এবং তার কাছে জানতে চান যে তিনি কি খেতে চান? সে অনুযায়ী ওই বৈঠকে খাবারের আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তিনি উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য যদি কোন অর্থ সহায়তা দরকার হয় সেটাও দেয়ার অঙ্গীকার করেন।

একাধিক সূত্র বলছে যে, সিঙ্গাপুরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন তা প্রধানমন্ত্রীর অর্থানুকুল্যে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বা গণভবন সূত্র থেকে এ ধরনের কোনো খবর দেয়া হয়নি। এটাই হলো শেখ হাসিনার বিশেষত্ব তার মানবিকতা।

তিনি এই সব বিষয়গুলো কখনো প্রকাশ্যে আনতে পারেনা। বহু মানুষের চিকিৎসার জন্য তিনি সহায়তা দেন। কোনোটা প্রকাশিত হয় কোনোটা অপ্রকাশ্য রয়ে যায়। যেমনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদেরকেও বিপদের সময় আর্থিক সহায়তা দিতেন। স্বাধীনতার পর এরকম বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদকে পাওয়া যায়, যাদেরকে বঙ্গবন্ধু নিয়মিত আর্থিক সহায়তা দিতেন, যেটি কেউ জানতোনা। মওলানা ভাসানীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মতবিরোধ ছিল কিন্তু মওলানা ভাসানিকেও সহয়তা দিতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

শেখ হাসিনাও একই ধারায় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এমনকি যারা তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল তাদের প্রতিও সাহায্য এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। বেগম খালেদা জিয়ার কথাই ধরা যাক, যে বেগম খালেদা জিয়া ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন সেই বেগম খালেদা জিয়াকে উদারতা দেখিয়ে তিনি মুক্তি দিয়েছেন। এখন হাসপাতালে ভর্তি রিজভীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে শেখ হাসিনা তার মানবিক উদারতা আরেকবার প্রকাশ করলেন। এটাই হলেন শেখ হাসিনা। একজন মানবিক পরোপকারী মানুষ।

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...