প্রকাশিত: ০৩/০৭/২০১৮ ৯:৩০ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:১৩ এএম

শ.ম.গফুর,উখিয়া::
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত মত গড়ে ওঠা ঔষুধের দোকান ও ডাক্তার নামের গলাকাটা ব্যবসার আস্তানায় প্রশাসনের অভিযান চালানো জরুরী হয়ে দেখা দিয়েছে।অন্যথায় এসব ভুয়া ডাক্তারের দৌরাত্ম্য দিন-দিন বাড়তেই থাকবে।মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় সরকারের প্রশাসনের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এমনটাই বললেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নুরুল আবসার চৌধুরী সহ শত-শত জনতা।চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। বালুখালী পশ্চিম পাড়া রোহিঙ্গা বাজার কেন্দ্রিক ঔষুধের দোকান খুলে স্থানীয় পরিচয়ে ডাক্তারী চিকিৎসা করছে এখন ডজনের বেশী রোহিঙ্গা।তার মধ্যে ফরহাদ ফার্মেসীর আড়ালে রোহিঙ্গা ছালেহ আহমদ,তার ছেলে জকরিয়া মিলে চালিয়ে যাচ্ছে অপচিকিৎসা।রোগীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে অখ্যাত কোম্পানির নিম্নমানের ওষুধ-পথ্য।আবার মেয়াদউত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অভিযোগও কম নয়।তাদের মত এদেশের কোন প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট বিহীন ডাক্তার সেজেছে রোহিঙ্গা মুসা,আনিস উল্লাহ,স্থানীয় ম ঞ্জুর আলম ও দাবা মনঞ্জুর সহ অন্তত ডজনের বেশী রোহিঙ্গা বখাটে।ডাক্তার নামধারী এসব রোহিঙ্গারা মুলত প্রতারক, ঠকবাজ,হুন্ডি, চোরাই পণ্য,ইয়াবা,সোনা চোরাচালান,রোহিঙ্গা নারী পাচার,দেহ ব্যবসা ও মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।তারা এদেশের কোন আইনের তোয়াক্কা করছেনা।ডাক্তার নামধারী এসব রোহিঙ্গারা ফার্মেসীর আড়ালে নানা অপকর্ম আর বিদেশী জংগী কানেকশনের জঘন্য কর্মকান্ড চালাচ্ছে।তারা ফার্মেসী ব্যবসার পাশাপাশি মিয়ানমার কেন্দ্রিক চোরাই পণ্যের ব্যবসা,হুন্ডি ব্যবসা,ইয়াবা পাচার ও ব্যবসার লেনদেন করছে অবাধে।বালুখালী পশ্চিম পাড়া বাজারের অলিতে গলিতে অবৈধ ভাবে ঔষুধের ফার্মেসী খুলে রোহিঙ্গারা নিজেদের বাংলাদেশী সেঁজে ভূঁয়া পরিচয় দিয়ে চিকিৎসার নামে অবৈধ পন্থায় হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এতে প্রতারিত হয়ে স্বাস্থ্য হানিতে পড়েছে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় কয়েকটি আশে-পাশে গ্রামের লোকজন।এসবের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারী এবং দেখ ভাল না থাকায় এখন রোহিঙ্গারা স্থানীয় দাবী করে বিভিন্ন চলচাতুরী আশ্রয় নিয়ে ও জাল সনদ তৈরি করে নিজেদের নামের আগে চিকিৎসা পত্রের প্যাডে ও ডিজিটাল সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে ডাক্তার লিখে অবাধে ঔষুধ বিক্রি করে যাচ্ছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব রোহিঙ্গা ডাক্তারেরা দীর্ঘ ৭-৮ মাস ধরে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নামে বেনামে ট্রেডস লাইসেন্স ও নাগরিক সনদ নিয়ে এবং অন্যজনের নামে থাকা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের ডিপ্লোমা সনদ এলএমএএফ, ডিএমএডি, এমএফ, আরএমপি সনদ এবং ভূঁয়া সনদ বানিয়ে ডাক্তারী নামের এই মহা মানবসেবা মূলক পেশাকে কলংকিত করছে এমন অভিযোগ উঠেছে সচেতন মহলের পক্ষ থেকে।এসব ভূঁয়া চিকিৎকরা অনুমান করে মনগড়াভাবে ঔষুধ লিখে রোগীদের হাতে চিকিৎসা পত্র তুলে দিয়ে থাকে। বিভিন্ন নিম্নমানের মেডিসিন ধরিয়ে দিচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ, শিশুসহ এলাকার মানুষের হাতে। এসব অপচিকিৎসার ফলে শরীরের উল্টো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে নিরীহ অসচেতন লোকজন। বার্মাইয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ও ঔষুধের দোকান গুলো সরেজমিন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবী জানিয়েছেন উখিয়া নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও উখিয়া বাচাও আন্দোলনের আহবায়ক সাংবাদিক নুর মুহাম্মদ শিকদার। তারা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক অশিক্ষিত ভূঁয়া রোহিঙ্গা ডাক্তার ও আনাড়ি চিকিৎসকরা যত্রতত্র দোকান খুলে চিকিৎসার নামে ভূল চিকিৎসা করে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।এদিকে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাজারে যেসব ভূঁয়া রোহিঙ্গা ডাক্তারের হদিস পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে অন্যতম ছালেহ আহমদ,তার ছেলে জকরিয়া,মুসা,আনিস উল্লাহ, স্থানীয় পশ্চিম পাড়ার দাবা মঞ্জুর, ওষুধ বেপারী মঞ্জুর,অন্তত এক ডজনেরও বেশী কথিত ডাক্তার নামধারী “কসাই”আস্তানা খুলে যেমন ইচ্ছে অপচিকিৎসা করে নিরীহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জন সাধারণের মাথায় কাটাল খাচ্ছে।প্রশাসন এসব ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অপ চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য আরো বেড়েই যাবে বলে স্থানীয়রা আশংকা করছেন।এধরনের অসংখ্যা ফার্মেসী খুলে বার্মাইয়ারা মিয়ানমারের”ঝরা ওষুধ”নামক এক ধরণের পামবড়িও বিক্রি করছে।এসব ওষুধ প্রায় প্রতিটি ফার্মেসীতে অবাধে বিক্রি করছে।তাতে এদেশের কোন আইন তারা মানছেনা।এভাবে রোহিঙ্গারা
> ঔষুধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বেআইনি ভাবে।এসব অজ্ঞ ডাক্তারেরা চিকিৎসার নামে রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দিচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত নিম্নমানের ইত্যাদি ঔষুধ। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানকারী নতুন-পুরাতন আশ্রিত রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর মাঝে বিভিন্ন চিকিৎসার নামে ডাক্তার দাবী করে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে রাত-দিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কথিত ভূঁইফোড় ডাক্তারেরা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে বালুখালী পান বাজার হয়েও যাতায়াত সড়কের দুই পাশে অন্তত এক ডজনেরও বেশী ঔষুধের দোকান রয়েছে নামে বেনামে। প্রায় ১৫ টির মত ফার্মেসীতে ঔষুধ বিক্রি ও চিকিৎসা করছেন বাংলাদেশী সেঁজে কথিত রোহিঙ্গা ডাক্তারেরা। এসব ফার্মেসীর হদিস মিলে ক্যাম্পের চর্তুর পাশে।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান রবিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা বাজারসহ ক্যাম্পের ভিতরে বাইরে ও ঔষুধের দোকান খুলে যারা নিজেদের ডাক্তার দাবীকরে ভূঁয়া কাগজপত্র নিয়ে ঔষুধ বিক্রি করছে তাদের ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে অনেক রোহিঙ্গার মধ্যে এইডস রোগ পাওয়া গেছে। সুতরাং রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছি। আর ফার্মেসী খুলে অনেকেই একটা ইনজেকশনের সিরিজ ২-৩ বার ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ আমার কাছে রয়েছে। আগামী মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা যৌথ অভিযান চালিয়ে এসব ভূঁয়া ডাক্তার ও ফার্মেসীর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, কুতুপালং বাজারে যারা অবৈধ ভাবে যেসব ফার্মেসী ও প্যাথলজি সেন্টার খুলে রোহিঙ্গারা স্থানীয় ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসার নামে ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য হানি ঘটাচ্ছে সে ব্যাপারে অতি দ্রুত ড্রাগ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্বনয়ে প্রশাসনিক অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

পাঠকের মতামত