প্রকাশিত: ১৬/০১/২০১৮ ২:১৯ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৮:০১ এএম
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা

উখিয়া নিউজ ডটকম::

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা

আগামী দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের শর্ত রেখে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। এ চুক্তির ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সরকারি পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হল।

আজ (মঙ্গলবার) সকালে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠক শেষে এ চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।

মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিয়ুর রহমান এ সম্পর্কে বলেন, “আমরা একটি ভালো চুক্তি করেছি, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমরা বলেছি যখন থেকে প্রত্যাবাসন শুরু হবে তার দুই বছরের মধ্যে ‘প্রেফারেবলি’ শেষ হবে। এটি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে এবং মিয়ানমার এ প্রস্তাবে রাজি হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রস্তাব করেছিলাম প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত পাঠাব। কিন্তু তারা ওই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। তারা নিজেরা রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করেছে। ফলে প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩০০ করে সপ্তাহে এক হাজার ৫০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পর্যালোচনা করে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে।”

রাষ্ট্রদূত বলেন, “এই ব্যবস্থার অধীনে একটি পরিবারকে একটি ইউনিট হিসেবে গণ্য করা হবে অর্থাৎ একটি ফরমে পুরো পরিবারের তথ্য থাকবে এবং মিয়ানমার এটি গ্রহণ করবে। ফলে প্রক্রিয়াটি সহজ হবে।”

তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থাকে বাংলাদেশ কাজে লাগাবে এবং মিয়ানমার তাদের সময়মতো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।’

রাষ্ট্রদূত সুফিয়ুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশে আর না আসে তার ব্যবস্থা করবে মিয়ানমার। এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্তে অপেক্ষমান সাত হাজার রোহিঙ্গাকে তারা সেখান থেকে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করবে। ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখবে এবং এটি কখনোই ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড ক্যাম্পে পরিণত হবে না বলে মিয়ানমার জানিয়েছে।”

এদিকে, মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, “রোহিঙ্গারা যাতে আর বাংলাদেশে আসতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশে ট্রানজিট ক্যাম্প হবে পাঁচটি এবং মিয়ানমারে অভ্যর্থনা ক্যাম্প হবে দু’টি। বাংলাদেশ থেকে নিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের লা পো থং নামক একটি জায়গায় অস্থায়ীভাবে রাখা হবে। তারপর ঘরবাড়ি সংস্কার করে তাদের সেখানে পাঠানো হবে।”
এতে আরও বলা হয়, “সহিংসতায় যেসব শিশু অনাথ হয়েছে এবং বাংলাদেশে যাদের জন্ম হয়েছে তাদেরকেও এই অ্যারেঞ্জমেন্টের আওতায় ফেরত পাঠানো হবে। এজন্য দু’টি টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। একটি রোহিঙ্গাদের যাচাই বাছাইয়ের জন্য এবং অন্যটি প্রত্যাবাসনের জন্য।”
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হামলা শুরুর পর জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। তাদের কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হলেও শুরু থেকেই বাংলাদেশের দাবি ছিল, নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে হবে মিয়ানমারের নাগরিকদের। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের কূটনৈতিক চাপের পর ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সমঝোতা সই হয়, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয় মিয়ানমার।

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...