প্রকাশিত: ০৮/০৯/২০২১ ৯:৪৪ এএম

কঠোর জাতীয়তাবাদী এবং মুসলিম বিরোধী বহুল বিতর্কিত বৌদ্ধ ভিক্ষু, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিন ‘ফেস অব টেরর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল, সেই অশ্বিন উইরাথু’কে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। কি কারণে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সামরিক জান্তা। মুসলিম বিরোধী কড়া বক্তব্যের জন্য তিনি সবার কাছে পরিচিত। এর আগে অং সান সুচির বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি তিনি অনুগত বলে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। অনলাইন বিবিসির রিপোর্ট তাকে ইংরেজিতে ‘ফায়ারব্রান্ড মঙ্ক’ বা অগ্নিঝরা বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। মুসলিম, বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে হিংসাত্বক বক্তব্যের জন্য তাকে ‘বৌদ্ধদের বিন লাদেন’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি সেনাবাহিনীপন্থি র‌্যালিতে অংশ নিয়েছেন এবং জাতীয়বাদী বক্তব্য দিয়েছেন।

সমালোচনা করেছেন অং সান সুচি ও তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি নেতৃত্বাধীন সরকারের। বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা উসকে দেয়া এবং অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। অবশেষে গত বছর নভেম্বরে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তখন থেকে বিচারের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সোমবার সামরিক জান্তা ঘোষণা করেছে যে, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তুলে নেয়া হয়েছে। তবে কেন? এর কোনো উত্তর দেয়নি তারা। তবে এতে বলা হয় যে, তিনি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চান। কিন্তু তার কি সমস্যা সে সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো কিছুই বলা হয়নি।
বিবিসি লিখেছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার জন্য অভিযুক্ত উইরাথু। ৯৬৯ আন্দোলনের শীর্ষ ও সুপরিচিত নেতাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। উল্লেখ্য, ৯৬৯ আন্দোলন হলো বৌদ্ধদের জাতীয়বাদী একটি আন্দোলন। এতে নিজেদের দোকান, সম্প্রতি বিক্রি এবং বিয়ে নিজস্ব ধর্মের ভিতর করার আহ্বান জানানো হয়। জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে তখন অনলাইনে উইরাথুর ধর্মীয় বক্তব্য শোনার জন্য হাজার হাজার ভক্ত যোগ দিতেন অথবা তারা তার র‌্যালিতে যোগ দিতেন।
২০১২ সালে যখন রাখাইনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সহিংসতা দেখা দেয়, তখন তিনি জনগণের মধ্যে তার ধারণার বিস্তার ঘটান। পরের বছর যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিন তাকে তাদের প্রচ্ছদে তুলে আনে। তার ওপর করে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। এর শিরোনাম- দ্য ফেস অব বুদ্ধিস্ট টেরর? অর্থাৎ তিনিই কি বৌদ্ধ সন্ত্রাসের মুখ? ২০১৭ সালে বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে এক বছর ধর্মীয় প্রচারণা থেকে নিষিদ্ধ করে। তিনি ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্য ছড়িয়ে দেন বলে ২০১৮ সালে তার একাউন্ট বা ফেসবুক পেইজ মুছে দেয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। সুত্র: মানবজমিন

পাঠকের মতামত