প্রকাশিত: ১৯/১০/২০১৮ ৫:০২ পিএম , আপডেট: ১৯/১০/২০১৮ ৬:০০ পিএম

ক্রীড়া ডেস্ক, উখিয়া নিউজ : 


দীর্ঘদিন ধরেই লড়ছেন ফর্মের সাথে। তবুও সৌম্য সরকারের ছন্দে ফেরাটা হচ্ছিলো ঠিকঠাক। কিছুদিন আগেই নাটকীয়ভাবে ডাক পেলেন সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে। সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি সেখানেও। অনেকটা অনুমেয়ভাবেই তাই বাদ পড়লেন ঘরের মাঠে আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে৷ সেটাইকেই যেন ফেরার চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিলেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। এশিয়া কাপ থেকে ফিরে ঘরোয়া লিগে ব্যাটে-বলে বেশ উজ্জ্বল সৌম্য তাইতো জিম্বাবুয়ানদের সাথে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে পেলেন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। সেখানে আবার চেনালেন নিজের জাত, সফরকারীদের দেওয়া ১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিজেকে ফিরে পাওয়ার মঞ্চে ঠিকই তুলে নিয়েছেন নিজের ‘আআত্মবিশ্বাস’ যোগানো শতকটা। সেই সাথে জিম্বাবুয়ের সাথে প্রস্তুতি ম্যাচে জয় তুলে নিল বিসিবি একাদশ। এর এতেই ৮ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নেয় বিসিবি একাদশ।

বাংলাদেশ সফরে ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে আজ বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। নির্ধারিত ৫০ ওভারের কোটা শেষের আগেই ১৭৮ রানে অল আউট হয় তারা।
১৭৯ রানের ছোট্ট টার্গেটে খেলতে নেমে প্রথমেই খেই হারিয়ে ফেলে বিসিবি একাদশের হয়ে গোড়াপত্তন করতে আসেন দুই ব্যাটসম্যান ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমান। দলীয় ৪ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৩ রান জমা করার পর পঞ্চম ওভারে যেয়ে কিছুটা হাত খুলে খেলতে চেষ্টা করেন মিজানুর, তবে লাভ হয়নি খুব একটা। ওই ওভারে চাতারার করা বলে মিড অনেক ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে গেলে রাব্বির সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফেরেন মিজানুর।

অন্য ওপেনার জাতীয় দলে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা রাব্বি ফেরেন মাত্র ১৩ রান করে। দলীয় ৫২ রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে টেনে তোলেন জাতীয় দল থেকে সদ্য জায়গা হারানো সৌম্য সরকার ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দুজনে মিলে গড়েন ১১২ রানের জুটি।
মোসাদ্দেক ৩৩ রান করে স্বেচ্ছায় অবসরে গেলেও আরিফুলকে সাথে নিয়ে চালিয়ে যান অনেকদিন বাদে ছন্দ খুঁজে পাওয়া সৌম্য। ১৩ চার ও ১ ছয়ে কাঙ্ক্ষিত তিন অংকের দেখা এই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। সেই তার শতকের সাথে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে বিসিবি একাদশ। সৌম্য অপরাজিত থাকেন ১০২ রানে ও আরিফুল ৯ রানে।
এর আগে টসে হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরু থেকেই জিম্বাবুয়ে দলকে চেপে ধরেছিল বিসিবি একাদশের বোলাররা। এদিন শুরু থেকে বিধ্বংসী বোলিং করে চলেছেন এবাদত-সাইফুদ্দিন-মোহর শেখরা। ইনিংসের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে দলীয় ৭ ও ব্যক্তিগত ১ রানে থাকা আরভিনকে ফিরিয়ে শুরুটা এনে দেন বিসিবি একাদশের বোলার এবাদত হোসেন।
এর ঠিক পরের ওভারেই রোডেশিয়ান শিবিরে আঘাত হানেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তিনি সাজঘরে ফেরান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ব্র্যান্ডন টেইলরকে। তারপর আবার দলের ত্রাতা হয়ে আসেন এবাদত, নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে আউট করেন শেন উইলিয়ামসনকে।

১৫ রানে ৩ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে এরপর বড় ধাক্কাটা দেন আরেক পেসার মোহর শেখ অন্তর। দলীয় ২৮ ও ব্যক্তিগত ৯ রানে থাকা ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজাকে আউট করে রোডেশিয়ানদের আরো বড় বিপদের মুখে ফেলে দেন মোহর। সেখান থেকে দলীয় অধিনায়ক মাসাকাদজা ও নতুন ব্যাটসম্যান পিটার মুর ইনিংস মেরামতের কাজ করতে চাইলেও পারেননি তা। সাইফউদ্দিনের হাতে দুর্দান্ত এক ক্যাচ বানিয়ে দলীয় ৪৭ রানেই মুরকে ফিরিয়েছেন ইমরান আলি।

দলীয় ৫৭ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুকছিলো সফরকারী জিম্বাবুয়ে দল। সেখান থেকে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে সাথে নিয়ে রোডেশিয়ানদের পথ দেখান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এল্টন চিগাম্বুরা। গড়েন ১২৪ রানের পার্টনারশিপ। পরে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া সেই চিগুম্বুরাকে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান বিসিবি একাদশের বোলার মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন। এরপর এক ওভারে তিন উইকেট তুলে নেনে এবাদত হোসেন। ফলে নির্ধারিত ওভারের আগেই সব’কটি উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে।
উল্লেখ্য তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগামী ২১ মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ও সফরকারীরা।

পাঠকের মতামত