প্রকাশিত: ১৫/১১/২০১৮ ৭:৩৭ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
বহুল প্রতীক্ষিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার প্রথম দফা বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়ার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে রোহিঙ্গাদের আপত্তির কারণে এই প্রক্রিয়া আপাতত শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা বুধবার রাতে উখিয়া নিউজ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ৫০টি রোহিঙ্গা পরিবারের দেড়শ’ জনকে মিয়ানমারে পাঠানোর কথা ছিল। তবে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাকে তারা বলেছে, তারা কেউই মিয়ানমারে ফিরতে চায় না। এরপরই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।

জানা গেছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দেশের কর্মকর্তারাই প্রস্তুত ছিলেন। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ট্রানজিট ক্যাম্প দিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে প্রত্যাবাসন শুরু করারও কথা ছিল।

রোহিঙ্গাদের দাবি, রাখাইনে ফেলে আসা বাড়িঘর ফিরে না পেলে এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত না হলে সেখানে ফিরে যাবে না তারা। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার অফিসের মুখপাত্র ফিরাস আল খাতেব জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদার সঙ্গে। রাখাইনে পরিস্থিতি এখনো রোহিঙ্গাদের অনুকূলে নয়। এই পরিস্থিতিতে রাখাইনে ফিরে যেতে নিরাপদ মনে করছে না রোহিঙ্গারা।

ইউএনএইচসিআরের এই কর্মকর্তা আরো জানান, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পর বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ সরকারের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এখন এই বিষয়ে দুই দেশের সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কাজে নিয়োজিত সরকারের অতিরিক্ত সচিব শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, প্রত্যাবাসন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাভিত্তিক হতে হবে। এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সংকট সমাধানে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইউএনএইচসিআরও এ ব্যাপারে কাজ করছে। আশা করছি, তাদের দেশে নিরাপদে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা সম্মত হবে।

গেল বছরের ২৩ নভেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমার সম্মত হয়েছিল। এ লক্ষ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। কমিটির প্রথম সভায় প্রত্যাবাসনের জন্য আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে এ পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গার বিষয়ে মিয়ানমার ছাড়পত্র দেয়।

পরে ছাড়পত্র দেয়া এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে প্রত্যাবাসন শুরু করবে বলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশও এতে সম্মত হয়। তবে রাখাইনে পরিস্থিতি অনুকূল না হলে রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে রাজি নয়।

জানা যায়, বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে তালিকাভুক্ত অনেক রোহিঙ্গা এরই মধ্যে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এতে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারাও পড়েছেন বেকায়দায়।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিতে জাহাজ আসবে এ সপ্তাহেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফের ...