বিশেষ প্রতিবেদক:
২০১৩ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারী জামায়াত শিবিরের তান্ডব থেকে কক্সবাজার শহরকে রক্ষার অন্যতম নায়ক বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী পুলিশ অফিসার বাবুল আজাদ এবার পুলিশ পরিদর্শক হয়ে কক্সবাজারে যোগদান করেছেন। সাহসি পুলিশ অফিসার ২০১২ সালে বৌদ্ধমন্দিরের হামলার রাতে মাত্র ২ জন পুলাশ নিয়ে একাই রক্ষা করেছেন কক্সবাজার শহরের প্রাচীনতম বৌদ্ধ মন্দিরটি। রামুর বৌদ্ধমন্দির হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে সেই সময় বাবুল আজাদসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে নাশকতাকারীদের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিলো।
কক্সবাজার সদর থানার উপ পরিদর্শক থাকাকালীন অবস্থায় বাবুল আজাদ ছিলেন নাশকতাকারীদে আতংক। ২০১৩ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তির নামে কক্সবাজার শহরে পরিকল্পিত তান্ডব শুরু করেছিলো জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। ঐ দিনের তান্ডবে প্রথম বাধা প্রদান করে তৎকালীন এসআই বাবুল আজাদ। শহরের হাশেমিয়া মাদ্রাসার সামনে বাবুল আজাদের নেতৃত্বে পুলিশ নাশকতাকারীদের বাধা প্রধান করে। ঐ সময় হাজার হাজার নাশকতাকারী বাবুল আজাদ সহ তার ফোর্সের উপর হামলা চালায়। ঐ সময় নাশকতাকারীদের হামলায় মারাযায় ৩ নিরীহ পথচারী। জামায়াত-শিবিরের আক্রমন থেকে বাবুল আজাদকে রক্ষা করতে এসে ঐ সময় আহত হয়েছিলেন তৎকালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আকতার, কক্সবাজার সদর থানার ওসি জসিম উদ্দিনসহ শতাদিক পুলিশ সদস্য।
১৫ ফ্রেব্রুয়ারর তান্ডবের প্রত্যক্ষদর্শী কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু তাহের আজাদ বলেছেন, ঐ দিন এস আই বাবু আজাদ যেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে সেটি কক্সবাজারবাসীর আজীবন স্মরণ রাখবে। বাবুল আজাদ ঐ দিন হাশেমিয়া মাদ্রাসার সামনে যদি বাধা প্রদান না করতো, তাহলে নাশকতাকারীরা পুরো কক্সবাজার শহর জ্বালিয়ে দিতো।
ঐ দিনের ঘটনায় জামায়াত-শিবির ঐতোটাই ক্ষিপ্ত ছিলো যে বাবুল আজাদসহ কক্সবাজার পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও জেলা আওামীলীগ ও ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২ টি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলো।
বাবুল আজাদ শুধু ১৫ ফেব্রুয়ারীর নায়ক নন। তিনি ২০১২ সালে ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বৌদ্ধমন্দির হামলার সময় একাই রক্ষা করেছিলেন শহরের ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ মন্দির। শুধু মাত্র ২ জন পুলিশ নিয়ে বাবুল আজাদ বৌদ্ধমন্দির রক্ষা করেছিলে।
কক্সবাজার পৌর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা ডালিম বড়ুয়া জানিয়েছেন, ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর যখন পুরো জেলায় বৌদ্ধ মন্দিন গুলোতে হামলা চালানো হয় কখন শহরে বৌদ্ধ মন্দির রক্ষায় সাহসি ভূমিকা রাখেন বাবুল আজাদ। বাবুল আজাদের সাহসি ভূমিকার কারনেই শত বছরের পুরনো এই বৌদ্ধমন্দিরটি রক্ষা পেয়েছে।
বৌদ্ধমন্দির হামলার পরপর এই হামলার মূল পরিকল্পানাকারী নাইক্ষংছড়ির উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা তোফায়েলকে গ্রেপ্তারে বাবুল আজাদের নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করা হয়। সেই সময় জামায়াত নেতা তোফায়েলকে গ্রেপ্তারে নাইক্ষ্যংছড়ির গহিন জঙ্গরে অভিযানে যায় বাবুল আজাদ। ঐ সময় জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা বাবুল আজাদসহ ৫ পুলিশকে অস্ত্রের মুখে আটক করে। এই সময় সন্ত্রাসীরা বাবুল আজাদকে জবাই করে হত্যার প্রস্তুতি নেয়। পরে কক্সবাজার ও বান্দরবনের পুলিশ এবং বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে হাত-পা বাধা অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে।
এসআই বাবুল আজাদ পদোন্নতি পেয়ে এখন পুলিশ পরিদর্শক হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি সফলতার সাথে বাঁশখালী ও ফেনিতে পরির্দশকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পুলিশের চট্টগ্রাম রেন্জের আদেশে বাবুল আজাদ পরিদর্শক হয়ে কক্সবাজার জেলায় যোগদান করেছেন।
পাঠকের মতামত