প্রকাশিত: ১৯/০১/২০১৯ ৭:৪২ এএম

ডেভিড স্টেইনবার্গ : এক পর্যবেক্ষক বললেন, ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হবে মিয়ানমারের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
টাটমাডাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীটি সীমান্ত অঞ্চলের রোহিঙ্গা বসতির ওপর আক্রমণকে যথার্থ বলে মনে করে। তাদের যুক্তি, দুর্বল অস্ত্রে সজ্জিত অল্প কিছু বিদ্রোহীর দুর্বল আঘাত।
বিভিন্ন দেশের উদ্বেগের জবাবে অং সান সু কির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক প্রশাসন অনবরত কিছু অর্থহীন একঘেয়ে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা টাটমাডাওকে খেপিয়ে তুলতে চায় না। তারা ভয় পায়, আবার না শৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণ নিয়ন্ত্রণবাদী নীতিতে ফেরত যায়।
মিয়ানমারের পশ্চিমা দেশ বিরোধী অবস্থান তাকে চীনের আরো কাছাকাছি এনেছে । চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে খোলাখুলিভাবে সমর্থন করে। নিজের দেশের মুসলিম অসন্তোষ যেমন শক্ত হাতে চীন দমন করছে তাকে যুক্তিসিদ্ধ করাও হয়তো চীনের একটি উদ্দেশ্য। রাখাইন রাজ্যে চীনের অর্থনৈতিক স্বার্থের কথাও এখানে মনে রাখতে হবে।
যদিও রোহিঙ্গা নিধনই বেশি আলোচনায় এসেছে, মিয়ানমারের চীন সীমান্তবর্তী কাচিন, শান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুর সঙ্গে জাতিগত দ্বন্দ্বও কম ভোগাচ্ছে না দেশটিকে। নিজের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে চীনও চায় সীমান্ত এলাকার এসব বিদ্রোহের অবসান। কিন্তু এসব এলাকায় পশ্চিমা কোন শক্তির উপস্থিতি সে মেনে নেবে না।
বিদেশি বিনিয়োগ আর পর্যটনের হাত ধরে মিয়ানমারে উন্নয়নের যে অপার সম্ভাবনা তা মার খেয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা সঙ্কট আর সু কি ও মিয়ানমারের সুনাম হারানোর মধ্য দিয়ে। পশ্চিমের অনেকের কাছেই সু কি নিজেই তার দেশের প্রতীক। দেশের মধ্যে সু কি আগে থেকেই জনপ্রিয় থাকলেও তার আন্তর্জাতিক খ্যাতি তৈরির পেছনে ভূমিকা আছে পশ্চিমাদের। যা এখন নষ্ট হচ্ছে পশ্চিমাদের হাতেই।
কোন সমাধানই দৃশ্যমান নয়। ২০২০ সালের নির্বাচন কাছিয়ে আসলেও সু কি, টাটমাডাও বা সু কির দল যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের মনোভাব বদলাতে পারে – এমন কোন লক্ষণই নেই। এই মনোভাবই বলে দেয়, এখন মিয়ানমারে কেমন বাতাস বইছে।
লেখক : জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান স্টাডিজের এমেরিটাস অধ্যাপক

পাঠকের মতামত