প্রকাশিত: ১৮/০৩/২০১৭ ১০:৪১ এএম

নিউজ ডেস্ক::

সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানায় নিহত কামাল ও তার স্ত্রী জোবাইদাসহ ৫জন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা। সাত মাস আগে তারা গ্রাম ছেড়ে চট্টগ্রামে গিয়েছিল।

নিহত জঙ্গি কামালের পিতা কৃষক মোজাফ্‌ফর আহমদ জানান, তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায় ৩০ বছর আগে মহেশখালী উপজেলা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামে পুনর্বাসিত হন। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছিলেন, তার ছেলে ও পুত্রবধূর সাম্প্রতিক চলাফেরা তার কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছিল। ফলে তিনি পুত্র, পুত্রবধূ এবং তার বোনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।

মোজাফ্‌ফর জানান, কামাল, তার স্ত্রী ও স্ত্রীর বোন, একই গ্রামের হাসান ও জহির গ্রাম ছেড়ে চট্টগ্রামে যায় ৭ মাস আগে। এরপর তাদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখতেন না। গত বৃহস্পতিবার ১৯ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে কামাল ও তার স্ত্রী জোবাইদা, একটি শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়।

বাইশারীর প্রবীণ সাংবাদিক এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল হামিদ বলেন, সীতাকুণ্ডের অভিযানে নিহত কামাল ও তার স্ত্রী বাইশারীতে থাকার সময় তাদের মধ্যে জঙ্গির কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন পেশার মানুষের সন্দেহ, তারা প্রশিক্ষণের জন্যে সীতাকুণ্ডে নব্য জেএমবির আস্তানায় গিয়েছিল। তিনি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ও বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সীতাকুণ্ডের অভিযানে নিহতদের বিষয়ে কোনো ‘ম্যাসেজ’ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত আসেনি। বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আলম কোম্পানি বিষয়টি নিয়ে বিশেষ তদন্ত চালাবেন বলে জানান। তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে সীতাকুণ্ড থানার ওসি ইফতেখার হাসান বলেন, আটক জসিমের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ছায়ানীড়ে নিহত নারী জঙ্গির নাম জোবাইদা বেগম। সে জসিমের আপন বোন।

নিহতরা তিন মাস পটিয়ায় ছিল

পটিয়া প্রতিনিধি জানান, সীতাকুণ্ডে নিহত জঙ্গিরা তিন মাস পটিয়ায় ছিল। মাসিক ৭ হাজার টাকায় পটিয়া পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আমির ভান্ডার রেলগেট এলাকার নুরুল আমিন মুন্সির ঘরের তিনতলায় ভাড়া থাকত। প্রতি মাসের ৫ তারিখ মালিককে ভাড়া দিত। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ, একজন মহিলা ও একজন শিশু ছিল। তারা সকলে সীতাকুণ্ডে অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিনে নিহত হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র ধরে পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ গতকাল শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টায় পটিয়ার ভবনটিতে তল্লাশি চালিয়েছেন এবং ভবনের মালিকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। এসময় নিহত পুরুষ, মহিলা ও শিশুর ছবি দেখালে ভবনের মালিক নুরুল আমিন জঙ্গিদের শনাক্ত করেন। ওই বাসায় বসবাসের সময় দেয়া পরিচয়পত্রটিও ভুয়া বলে নিশ্চিত হন।

ওসি শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, জঙ্গিরা আগে এই বাসায় ভাড়া থাকত। তাই যাচাই করতে আসা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়ক ও পটিয়া থানা থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরে আমির ভান্ডার রেলগেট এলাকায় নুরুল আমিন মুন্সির ভবনটি অবস্থিত। সীতাকুণ্ডে অভিযানের তিন দিন আগে ভোরে পটিয়া সদরের একই এলাকার মহিউদ্দিন টাওয়ারে যৌথবাহিনী অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কারণ চলতি মাসের শুরুতেই জঙ্গিরা সীতাকুণ্ড উপজেলার কলেজ সড়কের চৌধুরী পাড়ার ছায়ানীড় ভবনে চলে যায়। মহিউদ্দিন টাওয়ারের পাশেই নুরুল আমিন মুন্সির বাড়ি।

ভবনের মালিক নুরুল আমিন বলেন, আল্লাহ জঙ্গিদের কাছ থেকে ভাড়াটিয়া ও আমার পরিবারকে রক্ষা করেছে।

এদিকে ভাড়াটিয়াদের তালিকা ও ছবি থানায় জমা দিতে গত কয়েক দিন ধরে পটিয়া পৌর সদরে মাইকিং চলছে। জঙ্গিদের অবস্থান নিশ্চিত করতে ভাড়াটিয়াদের নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে কোনো মালিক অবহেলা করলে ও সঠিক তথ্য না দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সুত্র: অাজাদী

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...