প্রকাশিত: ২২/০৩/২০১৯ ১১:০৭ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::
গেল সপ্তাহের শুক্রবারেই নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদের ইমাম গামাল ফৌদা মুখোমুখি হয়েছিলেন ভয়ঙ্কর এক খুনির। আর আজ জুমার নামাজে সেই ইমামই দেখলেন অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা এবং সমবেদনা।

আজ আল নূর মসজিদে ওই হামলার এক সপ্তাহ পর জুমার নামাজে সমবেত হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। নৃশংস ওই হামলায় নিহত ৫০ জনের সম্মানে নিউজিল্যান্ড ও আশপাশের দেশগুলোতে পালন করা হয়েছে নীরবতা।

সমবেতদের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নও ছিলেন। সেখানে সবার উদ্দেশে সেই ইমাম ফৌদা বলেন, নিউজিল্যান্ডের প্রতিটা মানুষকে ধন্যবাদ, প্রত্যেকের চোখ দিয়ে যে অশ্রু পড়েছে তার জন্য ধন্যবাদ, ধন্যবাদ হাকার জন্য, ধন্যবার ফুলের জন্য।

তিনি আরও বলেন, ধন্যবাদ তোমাদের ভালোবাসার জন্য। ধন্যবাদ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে। ধন্যবাদ আপনার নেতৃত্বের জন্য, এটা বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকল।

‘ধন্যবাদ তাদের প্রত্যেককে যারা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের মূল্য, আমাদের বুঝিয়েছেন যে আমাদের কেউ ভোলেনি।’

পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমাম বলেন, আমাদের জীবন বাঁচাতে আপনারা প্রতিদিন নিজেদেন জীবন ঝুঁকিতে ফেলেন। সেই প্রতিবেশিদেরও ধন্যবাদ যারা সেদিন খুনির হাত থেকে বাঁচতে তাদের ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।

mosque

গেল শুক্রবারের স্মৃতিচারণ করে এই ইমাম বলেন, গত শুক্রবারে আমি এই মসজিদে দাঁড়িয়েই দেখেছি এক সন্ত্রাসীর চোখে ঘৃণার আগুন, যে নিরপরাধ ৫০টি মানুষকে খুন করল, আরও ৪২ জনকে আহত করল আরা সারা বিশ্বের লাখো মানুষের হৃদয় ভেঙে চুরমার করে দিল।

আর আজ সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হাজারো মানুষের চোখে আমি ভালোবাসা আর সমবেদনা দেখছি। আর এতে ভালোবাসায় পূর্ণ হচ্ছে আরো লাখো মানুষের হৃদয় যাদের সবাই হয়তো সশরীরে এখানে উপস্থিত নেই, কিন্তু মানসিকভাবে তারা আমাদের সঙ্গে আছেন।

তিনি আরও বলেন, এই সন্ত্রাসী চেয়েছিল তার কুদর্শন দিয়ে আমাদের আলাদা করতে। কিন্তু আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে নিউজিল্যান্ডকে ভাঙা যাবে না।

ফৌদা বলেন, সারা বিশ্বের উচিৎ নিউজিল্যান্ডের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং একতার শিক্ষা নেয়া।

তিনি বলেন, ‘আমাদের হৃদয় ভেঙেছে, কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছে, একে অপরের পাশে আছি। কেউ আমাদের বন্ধনে চিড় ধরাতে পারবে না। আমরা কেবল ভালোবাসবো একে অন্যকে।’

‘এই হামলায় যত মানুষ মারা গেছেন সে সংখ্যাটা সাধারণ নয়, আর হামলার পর নিউজিল্যান্ড যে সংহতি দেখিয়েছে সেটা অসাধারণ।’

নিহতের পরিবারের উদ্দেশেও কথা বলেন ফৌদা। কথা বলেন ইসলাম ফোবিয়া নিয়েও।

পাঠকের মতামত