প্রকাশিত: ২৬/০১/২০২০ ৯:৪৪ এএম

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
কক্সবাজার জেলার স্বনামধন্য বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীর ২০২০ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা গতকাল ২৫ জানুয়ারী-২০২০ সকাল ১১ টায় একাডেমীর মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সভাপতি বাহরুল উলুম শাহ্ সূফী হযরত মাওলানা মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (ম.জি.আ) পীর সাহেব, বায়তুশ শরফ।
প্রায় ৪৫০০ শিক্ষার্থী, বিপুল সংখ্যক অভিভাবক ও অতিথিদের উপস্থিতিতে তিনি তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দের ধন্যবাদ জ্ঞাপনপূর্বক পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ একটি ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক প্রতিষ্ঠান। বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী একটি আদর্শ মানুষ তৈরির প্রতিষ্ঠান। তিনি শিক্ষার্থীদের উন্নত জীবন গড়তে ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধন করে নিজেকে সু-নাগিরক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার তাগিদ দেন। এ সময় বায়তুশ শরফের শ্রদ্ধেয় পীর সকল শিক্ষার্থীদের সার্বিক সফলতা কামনা করে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বলেন, আলোকিত মানুষ হতে হলে পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের অবাধ্য হওয়া যাবে না। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতিকে দিক নিদের্শনা দিয়ে সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারে একমাত্র শিক্ষার্থীরাই। দেশ গঠনে আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীতে ভূমিকা পালন করবে। জিপিএ-৫ অর্জনের লক্ষ্যে শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় বিচরণ করার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, ভালো ফলাফলে তোমাদের পিতা-মাতার মুখে যে তৃপ্তির হাসি বা আনন্দ অশ্রু বিসর্জিত হবে তা তোমার মানসপটে আজীবন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, কোন সমাজ বা দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানসিক অবস্থা পরিবর্তন (উন্নতি) হওয়ায় হল উন্নয়ন। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, আগামী দিনের বাংলাদেশকে সুখী-সমৃদ্ধ স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে। এজন্য বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার উপর বেশি করে জোর দিতে হবে। একই সাথে পরিবার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতাকে সঙ্গে রেখে জীবনকে উন্নত করতে হবে।
প্রধান বক্তা হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ দিক নিদের্শনা মূলক বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে যে মানুষটি মুল কারিগর সেই মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভুমিকা রাখতে হবে। বায়তুশ শরফ এর চিন্তা-চেতনাকে যুগের প্রয়োজনীয় ও বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ হিসাবে অভিহিত করে তিনি আরো বলেন, বায়তুশ শরফ পীর আউলিয়ার প্রতিষ্ঠান যা দেশে ধর্মীয় চেতনার পাশাপাশি জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ধর্মীয় গোড়ামি পরিহার করে ধনী-গরীব বৈর্ষম্যমুুক্ত পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে যা দেশের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
উক্ত অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক ও অত্র একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, বায়তুশ শরফ কক্সবাজার অঞ্চলের একটি আলোক বর্তিকা। এটি কক্সবাজার শহরসহ সারাদেশের মানুষের সম্পদ। বায়তুশ শরফের সান্নিধ্যে যারা আসে তারা মানবিক মূল্যবোধ শিখে। তাই শিক্ষার্থীদের মানবিক মানুষ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার চীফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছৈয়দ করিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম কামাল উদ্দীন, কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দীন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট ফরিদুল আলম। কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা, মাহবুবর রহমান, দীপক শর্মা দীপু।
শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক (দিবা শাখা) মোহাম্মদ তৈয়ব ও সহকারী প্রধান শিক্ষক (প্রাতঃ শাখা) মোঃ আবদুল মালেক কুতুবী। শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন নাবিলা সাবরিন নুপুর, তাসবিউল হাসান রাউল, পুষ্পিতা পাল ও ওমর ফারুক।
১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরুল আবছারের পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীর পক্ষে মানপত্র পাঠ করেন ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনোভা জাহান স্নেহা ও বিদায়ী পরীক্ষার্থীদের পক্ষে মানপত্র পাঠ করেন নাহিয়ান মনির নোহা। উল্লেখ্য যে, এবার অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৫৪ জন শিক্ষার্থী আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সিনিয়র শিক্ষক নিজামুল বাহার ও ইমতিয়াজ হাসান।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ৫৯ সেনা-বিজিপি সদস্য

আরাকান আর্মির হামলার মুখে ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ...