প্রকাশিত: ২৪/০৮/২০১৬ ৯:৩৮ পিএম

আরিফ সিকদার বাপ্পী, দুবাই-আরব আমিরাত:
বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরান। হা এবার ঘুঘু ঠিকই ধরা খেয়েছে। অকুস্থল সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় শহর দুবাইয়ের বিখ্যাত শপিং সেন্টার ক্যারিফোর। আর ঘটনার মধ্যমণি হলেন বাংলাদেশ বিমানের কো-পাইলট নাদিম হাসান। নাদিম হাসান বাংলাদেশ বিমানের এয়ারবাস ৩১০ এর ফার্স্ট অফিসার।
এই নাদিম হাসানকে ক্যারিফোর শপিং সেন্টার থেকে মোবাইলসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী চুরির অপরাধে গত ১৯-৮-২০১৬ তারিখে দুবাই পুলিশ আটক করে দুবাই কারাগারে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিমানের কো-পাইলট নাদিম হাসান এই শপিং সেন্টারে প্রায় যেতেন, কখনো একা আবার কখনো পাইলট মোহাম্মদ আলী ও ক্রুদেরকে নিয়ে। আর সেখান থেকে মোবাইল, আইপ্যাড ও পারফিউমসহ অন্যান্য সামগ্রী অভিনব পদ্ধতিতে চুরে করে আসছিলেন। তার এই সব চুরির দৃশ্য শপিং সেন্টারের সিসিটিভির ফুটেজ-এ দেখে সিকিউরিটির লোকজন বহুদিন যাবত তাকে খুঁজছিলো এবং তাকেসহ অন্যান্য সহকর্মীদের মার্ক করে রেখেছিলো। কিন্তু কৌশলী নাদিম হাসানকে ধরতে পারেনি।
নাদিম হাসান চুরির সামগ্রী শপিং সেন্টারের বাথরুমে নিয়ে পণ্যসামগ্রী থেকে অ্যালার্মট্যাগ খুলে ফেলে পকেট বা ব্যাগে রেখে সিকিউরিটির চোখকে ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে আসতো। কিন্তু শিক্ষিত নাদিম হাসান ভুলেও খেয়াল করেননি যে শপিং মলে রয়েছে অত্যাধুনিক পর্যবেক্ষণ যন্ত্র, সিসিক্যামরা ও সিকিউরিটির ব্যবস্থা।
গত ১৯ আগষ্ট পাইলট মোহাম্মদ আলী ক্যারীফোরে যান শপিং করতে। পাইলট মোহাম্মদ আলী সেন্টারে ঢুকার সাথেসাথেই অটোমেটিক সিকিউরিটি এল্যার্ম বেজে ওঠে। তৎক্ষনাৎ পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সিকিউরিটি অফিসে নিয়ে বিভিন্ন টিভিফুটেজ দেখিয়ে কো-পাইলট নাদিম হাসানের ব্যপারে জানতে চায়। পুলিশের চাপেরমুখে পাইলট মোহাম্মদ আলী কো-পাইলট নাদিম হাসানকে কৌশলে শপিং সেন্টারে আসতে বলেন। নাদিম হাসান শপিং সেন্টারে আসার সাথেসাথে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলে নিয়ে যায় এবং পাইলট মোহাম্মদ আলীর কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ছেড়ে দেয় তবে তাকে দুবাই ত্যাগ করতে দেয়া হবেনা বলে পুলিশ জানিয়ে দেয়।
কো-পাইলট নাদিম হাসান একে একে ৭ বার চুরি শেষে অবশেষে ধরা পড়লেন। এ ঘটনা জানাজানির পর বিমানে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি উভয়দিকে গুরত্বসহকারে তদন্ত চলছে। এদিকে ঘটনাটি আমিরাতে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। এতে করে আমিরাতে অবস্থিত প্রায় ১৩ লক্ষ বাংলাদেশীর কপালে চুরির কালিমা লেপন হলো। এমনিতে ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশীদের জন্য আমিরাতের সকল ভিসা বন্ধ রয়েছে।

পাঠকের মতামত