প্রকাশিত: ২৫/০২/২০২০ ২:২১ পিএম

দীর্ঘ ছয় টেস্টে জয়ের দেখা না পাওয়া টাইগারদের অবশেষে টেস্টে রাজকীয় জয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরের পর দীর্ঘ ১ বছর টেস্টে জয়ের দেখা পায়নি তামিম-মুশফিকুররা। সদ্য সমাপ্ত পাকিস্তান সিরিজেও দেখতে হয়েছে ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জা। অবশেষে দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ধরা দিল সেই বিজয়। জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে একমাত্র টেস্টটি নিজেদের করে নিয়েছে মমিনুলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।

চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। দিনের শুরুতেই ফেরেন কেভিন কাসুজা। মোহাম্মদ মিঠুনের তালুবন্দি করে তাকে ফেরান তাইজুল ইসলাম। তাতে বিপদে পড়েন সফরকারীরা। পরে ক্রেগ অরভিনকে নিয়ে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন অভিজ্ঞ ব্র্যান্ডন টেইলর। তবে বাদ সাধেন নাঈম হাসান। টেইলরকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান তিনি। নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়ে তাকে ফেরান ডানহাতি অফস্পিনার। ফলে আরো চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। এ অবস্থায় সিকান্দার রাজাকে নিয়ে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন অরভিন। দারুণ খেলতে থাকেন তিনি। অপর প্রান্ত থেকে ভালো সমর্থনও পান। ফলশ্রুতিতে জমে যাচ্ছিল তাদের জুটি। তাতে ধীরে ধীরে চাপ কাটিয়ে উঠছিল জিম্বাবুয়ে। তবে হঠাৎ ছন্দপতন। রান নিতে গিয়ে কাটা পড়েন অরভিন। ফেরার আগে ওয়ানডে মেজাজে ৪৯ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ রান করেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই চোখ রাঙাচ্ছিলেন সফরকারী অধিনায়ক। অসাধারণ থ্রোতে তাকে রানআউট করেন বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন মুমিনুল হক। তাতে রাজার সঙ্গে অরভিনের ভাঙে ৬০ রানের জোট। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি সিকান্দার রাজা। মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান বিশেষজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। সাজঘরে ফেরত আসার আগে ৩ চারে তিনি করেন লড়াকু ৩৭ রান।

অভিজ্ঞ ব্যাটার ফিরলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় জিম্বাবুয়ে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে লড়তে পারেননি রেগিস চাকাভা। তাইজুলের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। সেই রেশ না কাটতেই প্রতিপক্ষ শিবিরে ছোবল মারলেন নাঈম হাসান। সবশেষ যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দিলেন এন্সলে এনদিলোভু। এনদিলোভুর উইকেটের পর টিমিসেন মারুমাকে সঙ্গ দিতে আসেন চার্লটন টিসুমা। কিন্তু টিমিসেন মারুমার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটিও নিজের করে নেন স্পিনার নাইম হাসান। ব্যক্তিগত ৪১ রানে সাজঘরে ফিরেন মারুমা। মারুমার উইকেটটি নিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে টেস্টে প্রথম পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন নাইম। এরপর টিসুমা আর ভিক্টর কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করলেও তাইজুলের ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউ’র শিকার হয়ে পরাজয় শিকার করে টিসুমা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৮৯ রান। এর ফলে ১০৬ রানে পরাজিত হয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। সিরিজের একমাত্র টেস্টে প্রথম ইনিংসে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৫৬০ রান তোলে বাংলাদেশ। ফলশ্রুতিতে ২৯৫ রানে পিছিয়ে থেকে সোমবার শেষ বিকালে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামেন জিম্বাবুইয়ানরা। তবে শুরুটা শুভ হয়নি তাদের। সূচনালগ্নেই হোঁচট খান তারা। দলীয় ৯ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। খানিক ব্যবধানে দ্রুত ফেরেন প্রিন্স মাসভাউরে ও ডোনাল্ড তিরিপানো। দুজনকেই সাজঘরে ফেরান নাঈম হাসান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৬৫/১০ (অরভিন ১০৭, মাসভাউরে ৬৪; আবু জায়েদ ৪, নাঈম ৪)
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ১৮৯/১০ (অরভিন ৪৩, মারুমা ৪১; নাঈম ৫, তাইজুল ৪)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৫৬০/৬ ডিক্লে. (মুশফিক ২০২, মুমিনুল ১৩২, শান্ত ৭১, লিটন ৫৩; এনদিলোভু ২)

পাঠকের মতামত