প্রকাশিত: ১৩/০৩/২০১৭ ১১:০১ এএম

নিউজ ডেস্ক::

ফলের রাজা আম খেতে পছন্দ করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়াই ভার। নানা স্বাস্থ্য উপকারিতার গুণে সুস্বাদু এই ফলটি কিন্তু আমাদের সকলেরই প্রিয়। তবে শুধু আম নয়, এর পাতাও কিন্তু সমান উপকারী। এতে ভিটামিন সি, এ ও বি, এনজাইম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ প্রভৃতি নানা উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেই ভূমিকা রাখে না, একইসঙ্গে শরীরের আরও নানা সমস্যার সমাধান করে। রোগ নিরাময়ে তাই প্রাচীনকাল থেকেই আম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। আম পাতা পানিতে সেদ্ধ করে বা গুঁড়ো করে খাওয়া যায়। অনেকে আবার রোগ মুক্তিতে আম পাতা পানিতে ভিজিয়ে চায়ের মত করেও পান করেন।

এবার জেনে নিন আম পাতার নানা ওষুধি গুণ সম্পর্কে-

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
কচি আম পাতায় ট্যানিনস নামক অ্যান্থোসায়ানিডিন থাকে, যা ডায়াবেটিসের প্রাথমিক পর্যায়ের রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ও হাইপারগ্লাইসেমিয়া কমাতে সাহায্য করে এই আম পাতা। তাই নিয়মিত এটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। কচি আম পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো রাখতে পারেন। আবার গরম পানিতে সেদ্ধ করে চায়ের মতো পান করতে পারেন অথবা তাজা পাতা পানিতে ভিজিয়ে সারা রাত রেখে দিয়ে সকালে এ পানি ছেঁকে নিয়ে এ পানি পান করতে পারেন।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে আম পাতা। এতে হাইপোট্যান্সিভ নামে এমন এক উপাদান রয়েছে, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। টানা তিন সপ্তাহ ধরে নিয়মিত আম পাতার চা পান করলে পরিবর্তনটা নিজেই টের পাবেন।

ক্লান্তি দূর করে
উদ্বেগ বা বিষণ্নতার কারণে যারা ঘুমাতে পারেন না, তাদের জন্য ভালো ঘরোয়া ওষুধ এই আমপাতা। এজন্য গোসলের আগে কয়েকটি আম পাতা পানিতে দিয়ে রাখুন। দেখবেন গোসলের পর শরীর কেমন শান্ত এবং সতেজ হবে।

উদ্বিগ্নতা কমায়
আম পাতা ভেজানো পানি ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে খেলে শান্ত বা স্থির হতে সাহায্য করে। যেহেতু আম পাতায় রক্তচাপ কমানোর উপাদান আছে তাই এটি উদ্বিগ্নতা দূর করতেও খুব ভালো কাজ করে।

কিডনি ও পিত্তথলির পাথর দূর করে
আম পাতার চা কিডনি ও পিত্তথলির পাথর ভাঙ্গতে ও তা দেহ থেকে বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে। পাথর অপসারণের জন্য এক গ্লাস পানিতে আম পাতা চূর্ণ মিশিয়ে পান করুন।

মাড়ির সমস্যায়
আম পাতার ছাই দাঁত ব্যথা কমতে সাহায্য করে। আম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে কুলকুচি করলে মুখের বিভিন্ন প্রকার সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।

শ্বাসকষ্ট দূর হয়
ঠাণ্ডা, হাঁপানি ও অ্যাজমায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্যও আম পাতা উপকারী। আমপাতা ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে মধু যুক্ত করে খেলে কাশি দূর হয়।

ডায়রিয়া ঠেকায়
রক্ত আমাশয় ঠেকাতে আম পাতার জুরি মেলা ভার। এ পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে দিনে দু-তিনবার খেলে ডায়রিয়া দূর হয়।

আঁচিল নিরাময়ে
আঁচিল নিরাময়ে পরিপক্ক আম পাতা পুড়িয়ে কালো করে গুঁড়া করে নিন। এতে সামান্য পানি মিশিয়ে পেস্টের মত তৈরি করে আঁচিলের উপরে লাগালে আঁচিল দূর হবে। আঘাত প্রাপ্ত স্থানে রক্ত বন্ধ করার জন্যও এই পেস্ট ব্যবহার করা যায়। এছাড়া পোড়া ক্ষত সারাতে আম পাতা পোড়ানো ছাই ক্ষততে লাগালে ত্বকে স্বস্তি মেলে।

পেটের জন্য ভালো
গরম পানিতে কয়েকটি আম পাতা ছেড়ে দিয়ে সারারাত ঢেকে রাখুন। সকালে ওই পানি ছেঁকে পান করুন কয়েক দিন। এতে পেট পরিষ্কার হবে।

সতর্কতা
বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করলেও আম পাতার চায়ে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা হয় কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন। পাতায় আম গাছের আঠা বা কষ আছে কিনা তাও দেখে নিন। তা না হলে এই কষ শরীরে প্রবেশ করলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। আবার এই কষ ত্বকে লাগলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই আগে থেকেই সাবধান হন এবং ক্ষতির হাত থেকে বাঁচুন।

পাঠকের মতামত