প্রকাশিত: ২৯/০৭/২০১৬ ৮:২২ পিএম

pic [Max Width 640 Max Height 480]জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ::
টেকনাফ সীমান্তে “আইনসি”র কদর দিন দিন বাড়ছে। মিয়ানমারের ফল হলেও আইনসি প্রতিনিয়ত টেকনাফের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন এখন সৌখিন করে আইনসি গোলা খেয়ে থাকেন। এক সময় শুধু মিয়ানমারের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন  আইনসি গোলা খেত। সে সময় এই ফলকে “মগ” গোলা নামে ডাকা হত। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, আইনসি মিয়ানমারের বর্ষাকালীন একটি ফল। এটি আবার মিয়ানমারের অত্যধিক জনপ্রিয় ফল। সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এই ফল বাজারে আসে। আমের মৌসুমের পর পরই পুরোদমে আইনসির মৌসুম শুরু হয়। এই ফল ব্যাথা, ডায়বেটিস, এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে বলে আইনসি সংশ্লিষ্ট স্থানীয় লোকজন  জানিয়েছেন। আবার অনেকে বলছেন আইনসি নেশা জাতীয় ফল। এটি মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ এই ফলের গুণাগুণ সর্ম্পকে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। সাধারণত বাইরের আবরণ ফেলে দিয়ে সিদ্ধ করে তেল-মশলা এবং পরিমাণ মত লবণ দিয়ে রান্না করে আইনসি খাবারের উপযোগী করা হয়ে থাকে। মিয়ানমার ছাড়া টেকনাফ সীমান্তেও এই ফলের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এক সময় আইনসি চোরাইপথ ব্যবহার করে টেকনাফে এনে বেছাবিক্রি করা হত। সে সময় এই ফলের চাহিদা অনেকটা কম ছিল। চোরাইপথে আইনসি আমাদানী করতে গিয়ে অনেক সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক জব্দ করে কাষ্টমসে জমা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পর্যায়ক্রমে চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে ফলটি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে আসে। আইনসি এখন আর আগের মত চোরাইপণ্য হিসেবে টেকনাফ সীমান্তে আসে না। বর্তমানে বৈধ পথে স্থলবন্দর ব্যবহার করে “আইনসি গোলা” আমদানী করা হচ্ছে। আমদানীকারক সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি কেজিতে ৮টাকা ভ্যাট দিয়ে বন্দর ব্যবহার করে আইনসি আমদানী করা হচ্ছে। আমদানীকারকরা জানান, কেজিতে ৪০-৫০টি কোষা সহ আইনসি ধরে থাকে। আইনসির ভেতরের বীজি ১শ পিচ হিসেবে কাঁচা বিক্রি করা হয়। প্রতি শতকে ২০০/৩০০টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়া উপাদান মিশ্রিত সিদ্ধ আইনসি প্রতি পিচ ৪/৫টাকা করে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

টেকনাফ পৌরসভার জ্বালিয়াপাড়া এলাকার কামাল হোসেন, নুরুল আলম, মোঃ রাসেলের মত শত শত যুবক মিয়ানমারের আইনসি বিক্রি করে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা আয় করছেন। উপজেলা যুবলীগ নেতা সংবাদকর্মী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, আইনসি বর্ষাকালীন মজাদার ফল। এটি শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে। টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানী ও রপ্তানীকারক নাছির উদ্দিন আইনসি গোলা বৈধ ভাবে আমদানী করা হচ্ছে জানিয়ে   বলেন, আইনসি বর্ষামৌসুমে টেকনাফের মানুষের সৌখিন ফল। পুলিশ কর্মকর্তা (এসআই) শাফায়েত আহমদ আইনসি বর্ষাকালীন সুস্বাদু ফল জানিয়ে  বলেন, এক সময় এই ফল খাইতেই মন চাইত না। এখন না খেলেই আর ভাল লাগে না। টেকনাফস্থ কাষ্টমস সুপার নু-চ-প্রু আম কাঠালের মত আইনসিও সীমান্তে অনেকটা মৌসুমী ফল জানিয়ে   বলেন, মিয়ানমার থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে আইনসি আমদানী হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, আইনসির পুষ্টিগুণ কি? তা জানার জন্য ইতিমধ্যে আমরা ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। এছাড়া ফলটির পুষ্টিগুণ যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ইনষ্টিটিউটে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম না জানার কারণে পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না। তবে টেকনাফ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ এনামুল হক আইনসির স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগত গুণাগুণ সর্ম্পকে সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও   বলেন, এই ফল খেলে নাকি গ্যাস হয়। যে হারে মিয়ানমারের এই ফল রীতিমত টেকনাফের বাজার দখল করছে ফলটির স্বাস্থ্যগত গুণাগুণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। সচেতন মহল এবং স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন জরুরী ভিত্তিতে মিয়ানমারে উৎপাদিত ফল আইনসি’র পুষ্টিগুণ যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...