প্রকাশিত: ১৪/০৯/২০১৮ ১১:১২ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::
নাফ নদীর মোহনার জালিয়ার দ্বীপ ঘিরেএকটি পর্যটনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে চায় থাইল্যান্ডের সিয়াম সিয়াম ইন্টারন্যাশনাল। তাদের বিনিয়োগ প্রস্তাব বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার সমান। এ বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে কোম্পানিটি।

ঢাকার বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়কে বেজার কার্যালয়ে গতকাল বুধবার এ চুক্তি সই হয়। এ সময় বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী ও সিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিয়াটকাটি সোমিয়ুথ উপস্থিত ছিলেন।

জালিয়ার দ্বীপের আকার ২৭১ একর। এটি দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে ছিল। বেজার উদ্যোগে সেটি দখলমুক্ত করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। দ্বীপটির এক পাশে মিয়ানমার, অপর পাশে বাংলাদেশের নেটং পাহাড়। সিয়াম সিয়াম ইন্টারন্যাশনাল দ্বীপটিকে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করবে বলে জানিয়েছে বেজা। এটি হবে দেশের প্রথম দ্বীপভিত্তিক পর্যটনকেন্দ্র, যার নাম দেওয়া হয়েছে নাফ ট্যুরিজম পার্ক।

বেজা জানায়, সিয়াম সিয়াম ইন্টারন্যাশনাল থাইল্যান্ডে বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল, রিসোর্ট, বিনোদনকেন্দ্র, স্পা, ফিটনেস সেন্টারসহ পর্যটনের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ ও পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। সিয়ামের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তারা বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে ফ্যান্টাসি কিংডম নির্মাণ, ফয়’স লেকে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি এবং কক্সবাজারের রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিল।

বেজা আশা করছে, নাফ ট্যুরিজম পার্কে প্রায় ১২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। পার্কটিতে পাঁচ ও তিন তারকা হোটেল, জিমনেসিয়ামসহ অ্যাপার্টমেন্ট, রিসোর্ট, বিনোদন পার্ক, লাইভ এন্টারটেইনমেন্ট থিয়েটার ও মিউজিয়াম, মেগা শপিং মল, সিনেমা হল, বোলিং সেন্টার, ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ, ওয়াটার স্পোর্টস বিচ, গলফ ক্লাব, কেব্‌ল কার, নদী ভ্রমণ, মিউজিক্যাল ওয়াটার ফাউন্টেইন, মসজিদ, অফিস ভবন, পাওয়ার প্ল্যান্টসহ অন্যান্য অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা স্থাপনের প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছে বেজা।

অনুষ্ঠানে বেজার নির্বাহী সদস্য হারুনুর রশীদ ও সিয়াম সিয়াম ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিয়াটকাটি সোমিয়ুথ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

কিয়াটকাটি সোমিয়ুথ বলেন, আগামী পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে নাফ ট্যুরিজম পার্কের উন্নয়নকাজ শেষ হবে। প্রথম ধাপের কাজ শেষ করা হবে দেড় বছরের মধ্যে। তিনি আশা করেন, বিশ্বমানের একটি অত্যাধুনিক বিনোদন পার্ক তিনি পর্যটকদের উপহার দিতে পারবেন।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, পর্যটনশিল্পের বিকাশের জন্য বেজা জালিয়ার দ্বীপে ট্যুরিজম পার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে বিনোদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

নাফ ট্যুরিজম পার্কের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য গত বছর জার্মানিভিত্তিক ইউনিকনসাল্টকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিল বেজা। ওই সমীক্ষায় বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কক্সবাজারে কমপক্ষে ২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণে যাবে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ যাবে নাফে।

পাঠকের মতামত