প্রকাশিত: ০৬/০৩/২০২০ ১০:৫২ পিএম

অধিনায়ক হিসেবে শেষটা জয়েই রাঙিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ডি/এল মেথডে ১২৩ রানে হারিয়ে মাশরাফিকে তিন ম্যাচের সিরিজটি ৩-০ তে উপহার দিয়েছেন সতীর্থরা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অধিনায়ক মাশরাফির শেষটা জয়ে রাঙানো স্বপ্নে লিটন দাস-তামিম ইকবাল ওপেনিংয়ে মিলে যেটা করলেন, সেটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেনি কেউ। টস হারলেও ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন এই দুই ওপেনার।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস উপহার দিয়েছেন লিটন দাস। তামিম ইকবাল পেয়েছেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। দুজন মিলে উদ্বোধনী তো বটেই, গড়েছেন ওয়ানডেতে যেকোনও উইকেটে দেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। রেকর্ডময় ম্যাচে রান উৎসব হয়েছে বৃষ্টি বিঘ্নিত হওয়ার পরেও। ম্যাচটি ৪৩ ওভারে নেমে আসলেও বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৩২২! ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ হয় ৪৩ ওভারে ৩৪২।

পরে বল হাতেও বিশেষ কিছু করে দেখান অধিনায়ক মাশরাফি। বোলিংয়ে এসেই উপলক্ষটা রাঙিয়ে নেন। শুরুতে টিনাশে কুমুনুকামওয়ে ফিরিয়ে পেয়েছেন প্রথম উইকেট। আউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়েন ওপেনার করেন ৪ রান।

সাইফউদ্দিন প্রথম ওয়ানডে খেলেছিলেন, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ছিলেন বাইরে। সিরিজের শেষ ম্যাচে ফিরে তার সামর্থ্য দেখালেন দ্বিতীয় উইকেট নিয়ে। সাইফউদ্দিন পেয়েছেন ব্রেন্ডন টেলরের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি। এবারের বাংলাদেশের সফরটা ভুলে যেতে চাইবেন আফ্রিকান দেশটির সাবেক অধিনায়ক। আগের দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতায় এবারও ব্যর্থ তিনি। সাইফউদ্দিনের বলে শর্ট মিড-উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে ধরা পড়ার আগে ১৫ বলে করেন ১৪ রান। তার বিদায়ে ২৮ রানে জিম্বাবুয়ে হারায় দ্বিতীয় উইকেট।

পরের উইকেটটি নেন আফিফ। লিটন-তামিমের দাপটে ব্যাট হাতে খুব বেশি কিছু করার সুযোগ হয়নি তার। তবে বোলিং দিয়ে অভিষেক রাঙানোর সুযোগ ছিল তার সামনে। সেই সুযোগটা কাজে লাগালেন মাত্র দ্বিতীয় বলে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার বল হাতে নেওয়ার দ্বিতীয় ডেলিভারিতে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন শন উইলিয়ামসকে। তিনি বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৩০ রানে।

এরপর উইকেট উদযাপন করেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনার নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ফিরিয়েছেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার রেগিস চাকাভাকে। ওপেনিংয়ে নেমে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন চাকাভা। মন্থর ব্যাটিংয়ে প্রতিরোধ গড়লেও বেশিদূর যেতে পারেননি। তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। যাওয়ার আগে ৪৫ বলে মাত্র এক বাউন্ডারিতে করেন ৩৪ রান।

এরপর দ্বিতীয় স্পেলের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট উদযাপন করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার দ্বিতীয় শিকার ওয়েসলি মাদেভেরে। চাপের মধ্যে বেশ ভালোই খেলছিলেন মাদেভেরে। হাফসেঞ্চুরির সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছিলো তার ব্যাটিংয়ে। কিন্তু হলো না, সাইফউদ্দিনের বল তার ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে উঠে গেলে পয়েন্টে দাঁড়ানো মেহেদী হাসান মিরাজ নেন সহজ ক্যাচ। মাদেভেরেকে ‍বিদায় নিতে হয় ৪২ বলে ৪২ রানে।

তার আউটের খানিক পরই রান আউট হয়ে ফিরেছেন রিচমন্ড মুটুমবামি (০)। জিম্বাবুয়ের বিপদ আরও বাড়ে টিনোটেন্ডা মুতোমবোজির (৭) বিদায়ে। তাকে আউট করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

আগের ম্যাচে তিরিপানো ঝড় তুলেছিলেন। এই ম্যাচেও হয়তো আশঙ্কা ছিল এমন কিছুর। হয়নি শেষ পর্যন্ত। তাকে ১৫ রানেই বোল্ড করেছেন তাইজুল ইসলাম। তবে এক প্রান্ত আগলে সিকান্দার রাজা লড়াই চালিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন কিছু শটস খেলে। ৫০ বলে ৬১ রান করে ফেলা সিকান্দার রাজাকে বিদায় দিয়েছেন সাইফউদ্দিন। উড়িয়ে মারলেও তাকে বাউন্ডারিতে তালুবন্দী করেন মোহাম্মদ নাঈম। এই সাইফ পরের বলে তিশুমাকে বোল্ড করেই ছেটে দেন জিম্বাবুয়ের লেজ। তারা ৩৭.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় ২১৮ রানে।

৪১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন সাইফ। দুটি নিয়েছেন তাইজুল, একটি করে নিয়েছেন মাশরাফি, মোস্তাফিজুর ও আফিফ।

পাঠকের মতামত