প্রকাশিত: ১৯/১০/২০২০ ১:৪৪ পিএম

মাহাবুবুর রহমান
কাগজে কলমে খোলা থাকলেও বাস্তবে কক্সবাজার পৌরসভা সহ জেলা বেশির ভাগ ইউনিয়ন পরিষদে এখনো খোলা হয়নি জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম। এতে এখনো দূর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সচেতন মহলের দাবী জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম কার্যক্রম শুরু হওয়ার খবরে আনন্দিত হয়ে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সেখানে বলা হচ্ছে এখনো শুরু হয়নি কার্যক্রম।

মুলত এখনো সার্ভার প্রস্তুত নয় বলে জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে কক্সবাজার পৌরসভা সহ বেশ কিছু জায়গায় জনপ্রতিনিধিদের জন্ম নিবন্ধন আগে অনলাইন না করার কারণে কার্যক্রম শুরু করতে দেরী হচ্ছে বলে জানান প্রশাসন। অবশ্য সব কিছু দ্রুত শেষ করে জেলায় পুরুদমে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার উপ পরিচালক।
জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে জেনে কক্সবাজার পৌরসভা কার্যালয়ে এসেছিলেন টেকপাড়ার নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন,আমি হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি এখানে জন্ম নিবন্ধনের আবেদনই জমা নিচ্ছেনা। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের দাবী ঘোষণা দিলেও বাস্তবে এখনো শুরু হয়নি জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম। তাই কোন আবেদন গ্রহন করা হচ্ছেনা।
পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক কাউন্সিলার জানান, আমার জানা মতে জন্ম নিবন্ধন চালু করার জন্য পৌর মেয়র এবং কাউন্সিলারদের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে থাকতে হবে তাই তাদের আগে জন্ম নিবন্ধন করতে হবে। আগে পৌর মেয়রের জন্ম নিবন্ধন ঝিলংজা ইউনিয়ন থেকে অনলাইনে করানো হলেও কোন কাউন্সিলারের জন্ম নিবন্ধন হয়নি। সেটা করার জন্য কাউন্সিলাদের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিতে বলা হলেও ১৬ জন কাউন্সিলারের মধ্যে মাত্র ৫ জন জমা দিয়েছেন বাকিরা এখনো দেননি। তাই আমি মনে করি জনপ্রতিনিধিদের কারণে পৌরসভার মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।

এদিকে চকরিয়া পৌরসভার সচিব ছৈয়দুল হক (আজাদ) বলেন, চকরিয়া পৌরসভাতে এখনো জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়নি। এখনো আমাদের পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়নি বা সার্ভার ওপেন করা হয়নি। তাই মানুষের কাছ থেকে আবেদনও গ্রহণ করা হচ্ছেনা। টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবদুল্লাহ মনির বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসে জন্ম নিবন্ধন নিতে তবে এখনো সার্ভার না খোলায় করা যাচ্ছেনা জন্ম নিবন্ধন। মহেশখালী পৌরসভাতেও একই অবস্থা বলে জানা গেছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জেলায় ৭১ ইউনিয়ন এবং ৪ টি পৌরসভার মধ্যে শুধু মাত্র ১৭ টি ইউনিয়নে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে তাও সীমিত আকারে। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৮ টি, রামুতে ৬টি, টেকনাফ উপজেলায় ১ টি এবং উখিয়া উপজেলায় ২ টি ইউনিয়ন। আর ৪ টি পৌরসভার খোলার কথা থাকলেও কোথাও শুরু হয়নি জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম।
এদিকে পিএমখালী ইউনিয়নে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা মোঃ ইউচুপ নামের একজন অভিভাবক বলেন, জন্ম নিবন্ধন সনদ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে গিয়ে আমার কাছ থেকে ৮ ধরনের কাগজ পত্র নিয়েছে যা কোন গ্রামের মানুষ যোগাড় করতে পারবে বলে আমার মনে হয়না। আর সে সব কাগজ পত্রের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো জোগাড় করতেও অনেক সময় লাগবে। তাই ঝামেলা এড়াতে অনেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে আগ্রহ হারাবে।
তিনি দাবী করেন পিতা মাতার আইডি বা পাসপোর্ট কপি নিয়ে সহজে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেওয়া উচিত। এদিকে এখনো জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু না হওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার উপ পরিচালক শ্রাবস্তী রায় বলেন, কক্সবাজার পৌরসভা সহ ৪ টি পৌরসভা এবং বেশ কিছু ইউনিয়ন পরিষদে এখনো জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু যায়নি এটা সত্য। কিছু যান্ত্রিক সমস্যার কারণে এখনো জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করা যায়নি। আর সেখানে বেশ কিছু তথ্য আগে থেকে আপলোড করতে হয় সেখানেও এখনো ঘাটতি আছে। আশা করছি আগামি সপ্তাহের মধ্য সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে

পাঠকের মতামত