প্রকাশিত: ১৯/০৫/২০১৮ ৯:৪৫ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৪৮ এএম

তবে আগামী ১ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া এই দুই পরীক্ষায় বিষয় ও নম্বর কমানোসহ বড় ধরনের পরিবর্তন আসন্ন বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটি’। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে আগামী রোববার সভা ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ৮ মার্চ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটির সভায় চলতি বছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় নানা রকম পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আলোচনা হয়। পরীক্ষার্থীদের চাপ কমাতে এ বছর থেকে দুই পরীক্ষার বিষয় কমিয়ে সাতটি করার সুপারিশ করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা। এ ছাড়া ১৫০ নম্বরের পরিবর্তনে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশও করেন তারা। কৃষি শিক্ষা ও গার্হস্থ্য অর্থনীতির মতো ঐচ্ছিক বিষয়ে আলাদা করে পরীক্ষা নেওয়ার বদলে শ্রেণিকক্ষেই ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রস্তাব করা হয় ওই সভায়। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ নম্বরের পরীক্ষা তুলে নেওয়ার সুপারিশ জানানো হয়। এতে জিপিএ গ্রেড নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়বে না বলেও জানানো হয়। সভার প্রস্তাবনা সেদিনই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে রোববারের বৈঠক ডাকা হয়। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক সমকালকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকেই এসব প্রস্তাবনা কার্যকর হবে। তবে এমসিকিউ আগের মতোই থাকবে।

মাধ্যমিক স্তরের প্রশ্নপত্রের নম্বর বিভাজন করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বোর্ডের সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান সমকালকে বলেন, এ বছরের পরীক্ষায় এমসিকিউতে কোনো পরিবর্তন আসছে না। আগে যেভাবে ছিল, এবারও সেভাবেই থাকছে। তবে বাংলা ও ইংরেজি থেকে ৫০ নম্বর করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শুনেছেন- এমনটা জানিয়ে অধ্যাপক মশিউজ্জামান আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলে নম্বর বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেবো। ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হলে এমসিকিউতে থাকবে ৩০ নম্বর। কীভাবে তা সমন্বয় করা হবে রোববারের সভায় তা নির্ধারণ হতে পারে।

গত বছর জেএসসি ও জেডিসির ১৩টি বিষয়ের মধ্যে চারু ও কারুকলা, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ের ওপর পরীক্ষা তুলে নেওয়া হয়। এই তিনটি বিষয় শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে ১০টি বিষয়ে ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলা প্রথমপত্র ১০০, দ্বিতীয়পত্র ৫০, ইংরেজি প্রথমপত্র ১০০, দ্বিতীয়পত্র ৫০, গণিত এবং বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং ধর্ম, গার্হস্থ্য অর্থনীতি/কৃষিশিক্ষা বিষয়ে ১০০ করে ৮০০ নম্বর এবং তথ্য প্রযুক্তি ৫০ নম্বর।

চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলাকালে বেপরোয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের জন্য চারটি কারণ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে অন্যতম এমসিকিউ। গত ৩ মে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঘোষণা দেন, এমসিকিউ পদ্ধতি নিয়ে নানা পরিকল্পনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বড় সংস্কার ও পরিবর্তন আনা হবে।

মন্ত্রীর এমন ঘোষণায় জেএসসি ও জেডিসি পর্যায়ের চলতি বর্ষের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। হুট করে পদ্ধতি পাল্টালে শিক্ষার্থীদের চাপ বাড়বে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরাও সংশ্নিষ্ট মহলকে শিক্ষাবর্ষের মধ্যভাগে নতুন পদ্ধতি প্রণয়ন না করার পরামর্শ দেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব সমকালকে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে একটি নতুন পদ্ধতি প্রণয়নের আগে দীর্ঘ গবেষণা হয়। সবার মতামত নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু প্রতিষ্ঠানে সেই পদ্ধতি চালু হয়। ইতিবাচক সাড়া পেলে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। হুট করে নতুন পদ্ধতি চালু করে সুফল না পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

পাঠকের মতামত

নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, এখন বিসিএস ক্যাডার

গল্প-আড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়জীবনটা উপভোগের সুযোগ আবদুল মোত্তালিবের হয়নি। দুপুর গড়ালেই তাঁকে ছুটতে হতো কাজে। অসচ্ছলতার কারণে ...