প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০১৯ ৬:৩৩ পিএম , আপডেট: ১৯/০৯/২০১৯ ৬:৩৯ পিএম

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজারের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে সহায়তার লক্ষ্যে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো যৌথভাবে এই এলাকার স্থানীয় জনগণকে গ্যাস স্টোভ ও এলপিজি বিতরণ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) মোট ১৪,০০০ মানুষের মধ্যে এলপিজি বিতরণ করছে। এই ১৪,০০০ মানুষ বিশ^ খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিওএফপি)-এর জীবিকা কর্মসূচিতে (লাইভলিহুড প্রোগ্রাম) অংশগ্রহণ করছে।
এই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে, যা আইওএম, ডব্লিওএফপি এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর যৌথ উদ্যোগে সমন্বিত সেইফ প্লাস কার্যক্রমের একটি অংশ। এই অঞ্চলে বন ও গাছপালা ধ্বংস রোধ করে গাছপালা উজাড় হয়ে গেছেÑ এমন অঞ্চলে পুনরায় বনায়ন শুরু করাই এই সেইফ প্লাস কার্যক্রমের লক্ষ্য।
আইওএম-এর বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান ম্যানুয়েল পেরেইরা বলেন, “এই এলপিজি বিতরণ চমৎকার একটি কার্যক্রম, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জ¦ালানী খরচ কমে আসবে এবং এর পাশাপাশি বন ও গাছপালা ধ্বংস হ্রাস করা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলপিজি-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছে। আমাদের এই কার্যক্রম এই সাফল্যেরই ধারাবাহিকতা। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে আইওএম কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এই উদ্যোগের মাধ্যমে আরও স্থানীয় মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়ে তাদেরকে সহায়তা দিতে চাই।”
জ¦ালানীর প্রয়োজনে গাছপালা ধ্বংস রোধ করার লক্ষ্যে এই এলপিজি বিতরণের পাশাপাশি, এই পর্যন্ত কক্সবাজারের ৮০ হেক্টর ভূমিতে নতুন করে গাছ লাগানো হয়েছে। এই অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা এবং হুমকির মুখে থাকা প্রাণীদের রক্ষা করতে বিভিন্ন আদি জাতের বৃক্ষ রোপন করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় বিভিন্ন রকমের বৃক্ষ রোপন করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে লম্বা শিকড়বিশিষ্ট ঘাস, শিমজাতীয় বৃক্ষের বীজ, গাছের চারা ও বাঁশ গাছ।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর ইমার্জেন্সী রেসপন্স কোঅর্ডিনেটর পিটার এগনিউ বলেন, “এই এলপিজি বিতরণের উদ্যোগ ও বনায়ন কর্মসূচি পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত, যা মূলত সমন্বয়ের মাধ্যমে শুরু করা হয়েছিল যেন এই অঞ্চলের সকল মানুষ উপকৃত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “ক্যাম্প ও ক্যাম্পের বাইরে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় রেখে এই বনায়ন কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে, যার লক্ষ্য হলো ভূমিধ্বস ও বন্যা রোধ করে গুরুত্বপূর্ণ আবাদযোগ্য জমিকে রক্ষা করা। এছাড়াও, এই বনায়ন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর ফলে ভূগর্ভস্থ পানির উৎসগুলোতে পুনরায় পানি ফিরিয়ে আনা যাবে, যা ইতোমধ্যেই পানির অভাবে থাকা এই অঞ্চলের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
ডব্লিওএফপি-এর জীবিকা কর্মসূচিতে (লাইভলিহুড প্রোগ্রাম) অংশগ্রহণকারীগণ গ্যাসের চুলা পেয়েছেন, কারণ কক্সবাজারের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগণের কথা মাথায় রেখে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এই কার্যক্রমে অংশ নেওয়া মানুষেরা দুই বছর ব্যাপী এক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে নগদ অর্থ সহযোগিতা পাবেন, যা দিয়ে তাঁরা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। দুই বছর মেয়াদী এই কার্যক্রমের পুরোটা সময়জুড়েই এতে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিমাসে ভাতা পাবেন। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ব্যবসার উদ্যোক্তা তৈরি করা ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গণনা, স্বাক্ষরতা এবং সমঝোতা ও দরকষাকষির মতো মৌলিক দক্ষতা সৃষ্টি করা অন্যতম।
ডব্লিওএফপি-এর ইমার্জেন্সি কোঅর্ডিনেটর জনাব পিটার গেস্ট বলেন, “বর্তমানে ২০,০০০ স্থানীয় জনগণ এই জীবিকা কর্মসূচিতে (লাইভলিহুড প্রোগ্রাম) অংশগ্রহণ করছে, আর ইতোপূর্বে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় জনগণ নিজ নিজ এলাকায় সফলভাবে নিজের ব্যবসা শুরু করেছেন।”
এ ছাড়াও, তিনি বলেন, “ইতোপূর্বে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীগণ খাদ্য উৎপাদন, হাঁস-মুরগী ও গবাদি পশুপালন এবং সেলাইয়ের কাজ করে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপার্জন করে সচ্ছ্বলভাবে সংসার চালাচ্ছেন। আমরা এই জীবিকা কর্মসূচিকে (লাইভলিহুড প্রোগ্রাম) আরও বৃদ্ধি করছি এবং এই বছরের শেষ নাগাদ আরও ৫,৫০০ জন মানুষকে এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। এর পাশাপাশি, আইওএম ৫,৫০০ জন মানুষকে তাদের কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসবে।”
খালেদা বেগম আজ গ্যাসের চুলা ও এলপিজি পেয়েছেন। তিনি বিগত নয় মাসব্যাপী এই দুই বছর মেয়াদী জীবিকা বিষয়ক প্রশিক্ষণ (লাইভলিহুড ট্রেনিং) নিচ্ছেন। তাঁর মতে, এলপিজি তাঁর বাসায় একটি অনন্য সংযোজন। এটি ব্যবহারের ফলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং রান্নার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এলপিজি বিতরণের পর তিনি বলেন, “আজকে এটা পাওয়ায় আমি খুশি, কারণ এর ফলে আমার রান্নার কাজটা সহজ হবে।” তিনি আরও বলেন, “জ¦ালানী কাঠ সংগ্রহ করতে আমার স্বামীকে অনেকক্ষণ পরিশ্রম করতে হয়, আর বাচ্চারা বাইরে থেকে এসে বাসায় ঢুকলে জ¦ালানী কাঠের ধোঁয়ার ওদের ক্ষতি হয়।”
আজ ৭০০-এর বেশি মানুষ গ্যাসের চুলা ও এলপিজি পেয়েছেন। সারা মাসব্যাপী এই বিতরণ কার্যক্রম চলবে যার মাধ্যমে ১৪,০০০ মানুষকে গ্যাসের চুলা ও এলপিজি দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা শিবিরে ইফতার যে রকম

আব্দুল কুদ্দুস,প্রথমআলো রোববার বিকেল চারটা। কক্সবাজারের উখিয়ার প্রধান সড়ক থেকে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে ঢোকার রাস্তায় দেখা ...

লাইসেন্সের কোন কাজ নেই, টাকা দিলে লাইসেন্স লাগে না!- উখিয়ার ব্যবসায়ী সাদ্দাম

বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই কথিত লেভেল লাগিয়ে অবৈধভাবে ব্যাটারির পানি বিক্রি করেন উখিয়ার সাদ্দাম মটরসের স্বত্তাধিকারী ...