প্রকাশিত: ২৫/০১/২০২১ ১১:০০ এএম

রামু প্রতিনিধি::
রামুতে বিতর্কিত চেয়ারম্যান শাহ আলমের নেতৃত্বে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার রশিদনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম ও সহ সভাপতি সাইফুল ইসলামের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। গতকাল রবিবার চমেক হাসপাতালে নজিবুল আলমের জ্ঞান ফিরলেও রাত পর্যন্ত জ্ঞান ফিরেনি সাইফুল ইসলামের। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার সর্বস্তুরের জনতা।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেএম আজমিরুজ্জামান জানিয়েছেন-এ ঘটনায় আহত নজিবুল আলমের ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে রবিবার রামু থানায় (নং ২৭) মামলা করেছেন। মামলায় রশিদনগর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন- বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রশিদনগর ইউপি চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম। তিনি রশিদনগর জেটি রাস্তা এলাকার মৃত হোছন আলীর ছেলে। এতে অভিযুক্ত অন্যান্যরা হলেন-লাল মিয়ার ছেলে ফয়সাল, মৃত কালু মিয়ার ছেলে রমজান আলী, মৃত হোছন আলীর ছেলে লাল মিয়া, মৃত আবু শামা প্রকাশ তোফায়েল আহমদের ছেলে মো. কাশেম, শফি আলমের ছেলে মো. আলমগীর ও জাহাঙ্গীর আলম নুনু, মৃত হোছন আলীর ছেলে কালা মিয়া, মৃত ছালেহ আহমদের ছেলে বেলাল উদ্দিন ও জাফর আলম, মৃত মোজাহের ফকিরের ছেলে মো. ইসলাম, মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে মো. সেলিম, মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে মো, শাহজাহান, মৃত হোছন আলীর ছেলে শফি আলম, মৃত আবদুস সালাম বৈদ্যর ছেলে মো. সিরাজ, মৃত লাল মিয়ার ছেলে সিরাজ, আবুল কাশেমের ছেলে দিদার প্রকাশ আরিয়ান বাবু, নুর মোহাম্মদের ছেলে নুরুল আলম।
এদিকে বর্বর এ হামলার প্রতিবাদে রবিবার রাতে রশিদনগর মামুন মিয়ার বাজারের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামলাকারি চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার সর্বস্তুরের জনতা।
এ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-রশিদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বজল আহমদ বাবুল, সহ সভাপতি বজল আহমদ (এমইউপি), সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোহাম্মদ শাহীন, ভারুয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন, রশিদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি জানে আলম, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা মো. কাবুল প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন- অন্যের বাগান পাহারা দেয়া শাহ আলম বর্তমানে অবৈধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে সম্পদের মালিক হয়ে এলাকাবাসীকে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সরকারি জমি দখল, বনের গাছ উজাড়, নির্বিচারে পাহাড় নিধন, সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা এ চেয়ারম্যান করে না। প্রশাসনের এক শ্রেণির দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মোটা অংকের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করে শাহ আলম বছরের পর বছর এলাকায় নির্বিঘ্নে অনিয়ম-দূর্ণীতি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন-বর্তমানে এ ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বিএনপি আমলের চেয়ে বেশী নির্যাতিত ও অসহায় হয়ে পড়েছে। চেয়ারম্যান শাহ আলমের অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর চলে বর্বরোচিত হামলা। চেয়ারম্যান শাহ আলম একসময় বিএনপির সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজলের সহযোগি ছিলেন এবং রশিদনগর এলাকায় ওই বিএনপি নেতার মালিকানধিন নিরিবিলি রাবার বাগান দেখাশোনা করতেন। ইতিপূর্বে শাহ আলম চেয়ারম্যান ও তার লালিত সন্ত্রাসীদের হাতে হামলা ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন হাজারো মানুষ। কয়েকবছর পূর্বে হামলার শিকার হন আওয়ামীলীগ নেতা কাবুল, রশিদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি বজল আহমদ বাবুল, ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হক সহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
রশিদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও ইউপি ম্বেম্বার বজল আহমদ জানিয়েছেন-আহতরা সরকার দলীয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করে অনিয়ম-দূর্ণীতি, ত্রাণসামগ্রী লুটপাট, পাহাড় নিধন, বনাঞ্চল উজাড় সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। এরই প্রতিবাদে সাম্প্রতিক সময়ে আহত ৩ নেতাকর্মী, পরিষদের অধিকাংশ মেম্বার সহ এলাকাবাসী মানববন্ধন, সমাবেশ ও অন্যান্য প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। এরই জের ধরে চেয়ারম্যান বিভিন্নসময়ে তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলো এবং সর্বশেষ শাহ আলম চেয়ারম্যান নিজে অস্ত্র ও দা নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
উল্লেখ্য শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়া মামুন মিয়ার বাজারে রশিদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য হামলায় গুরতর আহত হন রশিদনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নজিবুল আলম, সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিজানুল করিম। এদের মধ্যে নজিবুল আলম ও সাইফুল ইসলামকে মূমূর্ষু অবস্থায় রাতেই কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা শিবিরে ইফতার যে রকম

আব্দুল কুদ্দুস,প্রথমআলো রোববার বিকেল চারটা। কক্সবাজারের উখিয়ার প্রধান সড়ক থেকে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে ঢোকার রাস্তায় দেখা ...

লাইসেন্সের কোন কাজ নেই, টাকা দিলে লাইসেন্স লাগে না!- উখিয়ার ব্যবসায়ী সাদ্দাম

বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই কথিত লেভেল লাগিয়ে অবৈধভাবে ব্যাটারির পানি বিক্রি করেন উখিয়ার সাদ্দাম মটরসের স্বত্তাধিকারী ...