প্রকাশিত: ২৪/০২/২০১৯ ৭:৪৫ এএম

নিউজ ডেস্ক::
চীনের আপত্তি সত্ত্বেও এ সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই আলোচনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গনার তাঁর সাম্প্রতিক মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। সেখানে রোহিঙ্গা সংকট ছাড়াও মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতময় পরিস্থিতির বিষয় গুরুত্ব পেতে পারে।

জানা গেছে, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ব্রিটেন এবং অস্থায়ী ৯ সদস্যের মধ্যে অন্তত ছয়টি সদস্য (বেলজিয়াম, জার্মানি, পোল্যান্ড, কুয়েত, পেরু ও ডমিনিক প্রজাতন্ত্র) মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিয়ে পরিষদের সভাপতিকে চিঠি দিয়েছেন। চীন এ ধরনের আলোচনার বিরুদ্ধে থাকলেও ঠেকাতে পারছে না। রীতি অনুযায়ী, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ৯টি সদস্য চাইলে কোনো ইস্যুতে বৈঠক করতে পারে। বৈঠক বা আলোচনায় বসার ক্ষেত্রে স্থায়ী সদস্যদের ‘ভেটো’ ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ নেই। এর আগে গত বছর অক্টোবর মাসে চীন নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে স্বাধীন সত্যানুসন্ধানী দলের ব্রিফিং অনুষ্ঠান ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারেনি।

জাতিসংঘের ওই স্বাধীন সত্যানুসন্ধানী দল মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ এনেছে। মিয়ানমারের এসব অপরাধের বিচারের জন্য তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের জন্য ইতিমধ্যে একটি কাঠামো গঠন করেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলির দপ্তর মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের গণবাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসার কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। আগামী মাসের প্রথমার্ধেই আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির দপ্তরের তদন্তদলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গনার গত মাসে কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ও পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। গত ১৫ নভেম্বর মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল। কিন্তু একজন রোহিঙ্গাও সেদিন ফিরতে রাজি না হওয়ায় প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

জেনেভায় গত শুক্রবার রাতে নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ বিষয়ক কমিটির (সিডও) সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে মিয়ানমার প্রতিনিধিরা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য তাঁরা অপেক্ষায় আছেন। রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য নানা প্রণোদনার ব্যবস্থাও করছে মিয়ানমার।

তবে সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির সফর করেছেন এমন বিদেশি কূটনীতিকরা বলেছেন, মিয়ানমারে নাগরিকত্ব, অধিকার, তাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের বিচার ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া রোহিঙ্গারা ফিরতে চায় না।

এদিকে মিয়ানমার বরাবরের মতো গত শুক্রবার সিডও কমিটির পর্যালোচনা বৈঠকেও রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগ কার্যত অস্বীকার করেছে।

পাঠকের মতামত