প্রকাশিত: ২৫/০৩/২০১৮ ৭:৩৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:০০ এএম

জসিম উদ্দীন জিহাদ,

মানুষ মানুষের জন্যে

জীবন জীবনের জন্যে

একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না!

ও বন্ধু…

ভূপেন হাজারিকার এই গানের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে বারেবার। ঠিক কিভাবে লিখবো, কোন শিরোনাম দেবো- খুঁজে পাচ্ছি না।

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের একটি। গেলো ২২ মার্চ রাষ্ট্রীয় নির্দেশে ধুমধাম করে উদযাপন করা হলো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের পদার্পণের দিনটি।

বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া হলো বাংলাদেশ আর গরিব নয়, ভিখারি নয়। একটি পরিপূর্ণ উন্নত রাষ্ট্র হতে চলেছে এদেশ।

কাগজে কলমের উন্নয়নশীল রাষ্ট্র কি প্রজাতন্ত্রের একজন নাগরিকের জন্যে আমি আজ লিখছি। যিনি বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। না খেয়ে মরতে বসেছে তার ক্ষুধার্ত শিশু ও পরিবারের। দু’বেলা খাবারের জন্য তিনি তার পরিবারকে রোহিঙ্গা সাজিয়ে হলেও কোনো একটা ক্যাম্পে ঠাই দিতে অনুরোধ জানান সরকারের কাছে- তাহলেও তো খেতে পেতেন তারা।

যার কথা বলছি, তার নাম লিয়াকত আলী। কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্যম নাপিতখালী এলাকার সুলতান আহমদের পূত্র লিয়াকত আলী (৪০) দীর্ঘ পাঁছ বছর ধরে জটিল রোগে ভোগছেন। তিনি ঢাকা গেষ্টোলিভার,চট্রগ্রামে অভিজ্ঞ চিকিৎক দ্বারা প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাকালে আনুমানিক ২৫ লক্ষাধিক টাকা খরছ করেন।

প্রতি সাপ্তহে তিনবার করে রক্ত দিতে হয় রোগী লিয়াকত আলীকে। লিয়াকত আলী দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ হওয়ায় ভিটা-বাড়ী বলতে যা ছিলো, চিকিৎসার প্রথম ধাক্কায় তা হারিয়ে শেষ। লিয়াকত আলী বড় মেয়ে সাবিহা( ১৩) চোখের জলে প্রশ্ন ছুটে দিলেন, মানবতা আবার কি ? কারো জন্য কি কেউ আছে? শুনেছি বড়লোকেরা কোটি টাকা দান করে থাকেন। সরকারও নাকি অসহায় সম্বলহীনদের সহযোগীতা করেন। কই? আমরা তো কখনো কারো সাহায্য পাইনি। অথচ ডাক্তার বলেছেন, বাবা উন্নত চিকিৎসা পেলেই ভালো হয়ে যাবেন। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন ডাক্তাররা। ইন্ডিয়ায় চিকিৎসা করাতে কম করে হলেও ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজন।

সাবিহা আরো বলেন, যেখানে আমরা পরিবারের সবাই ৩ থেকে ৪ চার দিন শুধু পানি খেয়ে জীবনটা কোনরকমে বাঁচাই সেখানে এত টাকা কোথায় পাবো?

আমাদের কোন স্বজন নেই যে টাকা দিয়ে সাহয্য সহযোগীতা করবে। তাই আজ বাবা মরে যাচ্ছে বিনা চিকিৎসায়। আর আমরা মরে যাচ্ছি না খেয়ে।

অন্যদিকে হতভাগা লিয়াকতের কোন বড় ছেলে নেই যার উপরে তার পরিবারের দায়িত্ব তুলে দেওয়া যাবে। তাই তিনি কাঁদতে কাঁদতে আইচ নিউজকে বললেন, আমি সেচ্ছায় মৃত্যু চাই। আর আমার বউ এবং সন্তানদের রোহিঙ্গা মনে করে রোহিঙ্গাদের সাথে ক্যাম্পে থাকার সুযোগ যদি দেওয়া হয় অন্তত দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারবে।

লিয়াকতে দুই মেয়ে এক ছেলে। সবার বড় সাবিহা (১২)। আর সবার ছোট ছেলে বয়স (৭)।

লিয়াকতের স্ত্রী আহাজারী করে আইচ নিউজের মাধ্যমে সরকারের প্রতি আহবান করেন, আমার স্বামীকে বাঁচান। আমার পরিবারকে বেঁচে থাকার সুযোগ দিন।

জানা গেছে, রোগীর পায়খানার রাস্তা দিয়ে প্রায়শ রক্তক্ষরণ হচ্ছে। লিয়াকত আলীকে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান অসহায় পরিবারের। লিয়াকতের প্রতিবেশি প্রবাসি আমানুল এবং স্থানিয় জনপ্রতিনিধি মাহমাদুল্লাহ জানান, সরকার অথবা দানশীল লোকজন বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না আসলে পুরা পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই আমরা দেশের সবার কাছে আহ্বান জানাই, এই পরিবারকে যে যার সাধ্যমত সাহায্য করে যেন বেঁচে থাকতে সাহায্য করেন। নইলে তাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোনো রাস্তা খোলা নেই।

এই অসহায় পরিবারকে সহযোগীতা করতে সরাসরি রোগীর নাম্বারে টাকা পাঠাতে পারেন যে কেউ। বিকাশ নাম্বার হল- ০১৮১৯৫১১১৭৮।

অথবা ব্যাংকে রোগীর একাউন্টে টাকা দিয়ে সাহায্য করা যাবে। একাউন্টের নাম- লিয়াকত আলী। ইসলামী ব্যাংক। ঈদগাঁও শাখা। একাউন্ট নাম্বার- (হিসাব) ২৮৫ সেভিংস।

পাঠকের মতামত