প্রকাশিত: ২৪/০৯/২০১৭ ৫:৩৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:০৭ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা জাতিসংঘের চিকিৎসক দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা প্রচুর আহত নারী দেখছেন, যারা ধর্ষণসহ শারীরিক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

গত ২৫ আগস্টের পর থেকে রাখাইন থেকে পালিয়ে ৪ লাখ ২৯ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

এসব নারী ও শিশুরাই সবচেয়ে বেশি যৌন নিপীড়ন ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জাতিসংঘের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

তারা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মীর বর্ণনা ও মেডিকেল টেস্টের ফলাফলের ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে ধর্ষণের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন।

শরণার্থী হয়ে আসা নারীরা যৌন উৎপীড়ন থেকে শুরু করে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আর মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হাতেই বেশিরভাগ ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

রয়টার্স কক্সবাজারের আটজন স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা অন্তত ২৫ জন ধর্ষণের শিকার নারীকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এসব সূত্রে উঠে এসেছে, ধর্ষণের পর রোহিঙ্গা নারীদের ওপর নিপীড়নের বিভৎস বর্ণনা।

তবে শুরু থেকেই মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। সেনাবাহিনীর একটি ‘বৈধ অভিযানের’ সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এই ‘প্রোপাগান্ডা চালানো’ হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি’র মুখপাত্র জ হুতাই জানিয়েছেন, যেকোনো অভিযোগরই তাদের কাছে এলে তদন্ত করবেন।

তিনি এও বলেন, ‘যারা বলছেন, তারা গণধর্ষণের শিকার। এসব ধর্ষিত নারীদের আমাদের কাছে আসা উচিত। আমরা তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেব। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলেও এ বিষয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি মিয়ানমারের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চিকে।

মেডিকেল দল সত্যিকার অর্থে তাদের রোগীদের ওপর কি ঘটেছে, তা বলতে চায়নি। তবে তারা এসব ধর্ষিত নারীদের মুখে যা শুনেছেন, তাতে এটুকু পরিষ্কার ধর্ষণকাণ্ডের মূলহোতা বর্মিসেনারা।

স্পর্শকাতর হওয়ায় জাতিসংঘের চিকিৎসক কিংবা সংস্থা কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো অভিযোগ করেছে, তা বিরল।

শরণার্থীদের চিকিৎসায় থাকা দ্য লেদা ক্যাম্পের এক চিকিৎসক রোগীর নাম গোপন রেখে রয়টার্সের কাছে এমনই একটি ঘটনা তুলে ধরেছেন। তিনি ১০ সেপ্টেম্বর ২০ বছরের এক নারীকে চিকিৎসা শুরু করেন। সাত দিন পর ওই ধর্ষিতা জানান, তাকে মিয়ানমারের এক সেনা সদস্য ধর্ষণ করেছে।

এখানেই শেষ না। ধর্ষণের আগে ওই নারীকে চুলে মুঠি ধরে এবং রাইফেল দিয়ে সেনা সদস্য মারপিট করেন।

আইওএম’র মেডিকেল অফিসার ডা. তাসনুবা নওরিন জানান, ‘আমরা স্কিন টেস্ট করে দেখতে পেয়েছি, সেখানে নির্দয়ভাবে আঘাত করা হয়েছে। তাদের ওপর জোর করা হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, অনেক নারীর ভেজাইনা রক্তাক্ত হয়েছে। শরীরে কামড়ের চিহ্ন রয়েছে। এসবই স্পষ্ট করে, রোহিঙ্গা নারীদের কতটা ভয়াবহ নিপীড়ন করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

ইরানের ভয়ে তটস্থ ইসরায়েল!

ইসরায়েলে বড় ধরনের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা আসন্ন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ...