প্রকাশিত: ১৮/১১/২০১৯ ১০:৫৩ এএম

চট্টগ্রামে গ্যাস বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে ৩ জন কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষার শুরুর দিন। এজন্য একটু সকাল সকালই বের হয়ে গেলেন বাসা থেকে। তবে রাস্তায় গিয়ে অপেক্ষা করছিলেন সহকর্মীর জন্য। কিন্তু সেই অপেক্ষাই কাল হলো তার। হঠাৎ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার শরীর।
বলছিলাম চট্টগ্রামের পটিয়ার মেহেরআটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এ্যানি বড়ুয়ার (৩৮) কথা। শনিবার ১৭ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা ব্রীকফিল্ড রোড এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনি নিহত হন। নিহত ৭ জনের একজন হলেন-এ্যানি বড়ুয়া। তিনি কক্সবাজারের রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপী গ্রামের কন্যা।
জানা যায়, রামুর মেধাবী কন্যা এ্যানি বড়ুয়ার সাথে পটিয়া উপজেলার উনাইনপুরা গ্রামের প্রকৌশলী পলাশ বড়ুয়ার বিয়ে হয়। এ্যানি বড়ুয়া, স্বামী পলাশ বড়ুয়া ও দুই ছেলে অভিষেক-অভিজিৎকে নিয়ে পাথরঘাটা ভাড়া বাসায় থাকতেন।
স্বামী পলাশ বড়ুয়া জানান, রোববার থেকে শুরু হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ডিউটি ছিল তার। সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে পাথরঘাটা ব্রিকফিল্ড রোডে তার সহকর্মীর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। এর মধ্যে গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে এ্যানি দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রকৌশলী পলাশ বড়ুয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আজকের পিএসসি পরীক্ষার প্রথম ডিউটিতে তাকে পরার জন্য শাড়িও আমি পছন্দ করে দিয়েছি। পছন্দের শাড়ি পরে এ্যানি ডিউটিতে যাচ্ছিলো। ও আগে বের হয়, আমি পরে বের হচ্ছিলাম। এরমধ্যে শুনি এ দুর্ঘটনা। আমাদের সাজানো গোছানো সংসার এক নিমিষেই শেষ। আমি ছেলেদের কী জবাব দেবো?’ তাদের এক ছেলে এবার চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আরেকজন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছেন।
উল্লেখ্য, নিহত হওয়া ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের মৃতদেহ সনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একটি মৃতদেহ এখনো সনাক্ত করা যায়নি। সনাক্ত হওয়া ৬টি লাশের মধ্যে কক্সবাজার জেলার ৩ বাসিন্দা রয়েছেন। তারা হলো রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপী গ্রামের এ্যানি বডুয়া, উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল গ্রামের আবদুল হামিদের পুত্র নুরুল ইসলাম (৩১) ও মহেশখালীর ভ্যানচালক মো. সেলিম। অন্য ৩ জন হলো সাতকানিয়া এলাকার একই পরিবারের ফারজানা আক্তার (মা) ও আতিকুর রহমান (ছেলে), পটিয়ার রিক্সাচালক আব্দুর শুক্কুর।

পাঠকের মতামত