প্রকাশিত: ০২/০৯/২০১৭ ২:৫৯ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:১১ পিএম

মহিলারা সাজবেন না তাও কি কখনও হয়? বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক তাদের নিত্যসঙ্গী৷ ক্রিমের মধ্যে আজকাল আবার বিভিন্ন ধরন রয়েছে৷ অ্যান্টি এজিং ক্রিম, ব্রণ তাড়ানোর ক্রিম, ফর্সা হওয়ার ক্রিম ইত্যাদি৷ গর্ভাবস্তায়ও মহিলারা বিভিন্ন কসমেটিক্স ব্যবহার করে থাকেন৷ কিন্তু আপনি জানেন কি গর্ভবস্থায় এই কসমেটিক্সের ব্যবহার আপনার সন্তানের উপর কি প্রভাব ফেলে? একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, একজন মহিলা প্রতিদিন ১২ ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকে৷ তবে গর্ভবস্থায় কিছু ধরনের প্রসাধনী এড়িয়ে চলাই ভালো৷

যদিও চিকিৎসকেরা এই ধরনের কোনো পরামর্শ দেন না৷ গবেষণায় দেখা গেছে, রেটিনয়েডস, লেড, পারাবেনস বর্তমান প্রসাধনী ব্যবহার করলে দেহে হরমোনের পরিবর্তন দেখা যায় এবং এতে গর্ভজাত সন্তান বিকলাঙ্গ বা মানসিক ভারসাম্য হীন হতে পারে৷

পারাবেনস নামক উপাদানটি প্রায় সবধরনের প্রসাধনীতেই থাকে যেমন, লোশন, ক্রিম, টোনার, ফাউন্ডেশন৷ প্রসাধনীর গায়ে এই নামের উল্লেখ থাকলে এটি ব্যবহার না করাই ভালো৷

স্যালিসিলিক অ্যাসিড মূলত ব্রণ দূর করার ক্রিম, অ্যান্টি এজিং ক্রিমে ব্যবহার হয়ে থাকে যা মূলত মুখ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে৷ অ্যাসপ্রিনে যেহেতু স্যালিসিত অ্যাসিড আছে তাই এটি ত্যাগ করাই ভালো৷ অতিরিক্ত অ্যাসপ্রিন ব্যবহার করলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে৷

রেটিলন হল একধরনের ভিটামিন এ যা বলিরেখা ও ব্রণ দূর করে ত্বকের কোলাজেনের সমতা বজায় রাখে৷ তবে অতিরিক্ত ভিটামিন এ সন্তানের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে৷ তাই গর্ভাবস্থায় ভিটামিন এ যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করবেন না৷

প্যাথালেটস ব্যবহার হয় নেইলপলিশ তৈরিতে৷ এছাড়াও এটি পারফিউম, বডি স্প্রে ও হেয়ার স্প্রেতেও ব্যবহার করা হয়৷ ২০০৫ সালের একটি পরীক্ষাতে দেখা গেছে প্যাথালেটস যারা বেশি ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে গর্ভজাত জিনের ক্ষতিকর পরিবর্তন হয়৷

গর্ভাবস্থায় এমন কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত না যা ত্বক দ্রুত শুষে নিতে পারে এবং রক্তের সঙ্গে মিশে যায়৷ তাই গর্ভাবস্থায় হেয়ার রিমুভাল ক্রিম, পারফিউম ব্যবহার করা উচিত নয়৷ অনেকেরই গায়ে প্রচুর অবাঞ্ছিত লোম থাকে৷ তারা নিরাপদ থাকতে চাইলে ওয়াক্সিং করিয়ে নিতে পারেন৷

দাঁত সাদা রাখতে এখন প্রচুর টুথ পেস্টে পেরোক্সাইড ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ এটি একটি ব্লিচিং পদ্ধতি তাই এটি ত্যাগ করা উচিত৷ তবে হোয়াইটেনিং টুথপেস্ট গর্ভজাত সন্তানের উপর কি প্রভাব পরে তা চিকিৎকেরা বলতে না পরলেও গর্ভাবস্থায় এটি পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন৷

সানস্ক্রিন লোশনে অক্সিবেনজোন থাকে৷ একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে অক্সিবেনজোন যুক্ত সানস্ক্রিন যারা ব্যবহার করে থাকেন তাদের সন্তানের ওজন কম হতে পারে৷ এছাড়াও ওই উপাদান হরমোনকে অনেকবেশি সংবেদনশীল বানাতে পারে৷ তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে গা ঢাক জামা পরুন৷ এথবা সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বাইরে যাওয়া ত্যাগ করুন৷ তবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হলে জিঙ্ক অক্সাইড বা টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড যুক্ত সানস্ক্রিন লোসন ব্যবহার করুন৷ এটি সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করবে এবং এটি রক্তে মিশবে না৷

লিপস্টিক তৈরিতে লেড বা শিসা ব্যবহার করা হয়৷ সম্প্রতি এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, শিসার ফলে ক্যানসার বা শিশু বিকলাঙ্গ হতে পারে৷ নামী কোম্পানীর লিপস্টিকেও শিসা পাওয়া গেছে৷

গর্ভাবস্থায় প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত৷ তাই বলে সমস্ত প্রোডাক্টেই যে খারাপ উপাদান থাকে তা নয়৷ তবে সবচেয়ে ভাল উপায় যদি প্রকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যায়৷

গর্ভবস্থায় সময় হরমোনের পরিবর্তন হয় তাইমুখে ব্রণ ওঠে৷ সেসময় অ্যাকুটেন, রেটিন-এ ও টেট্রাসাইক্লিন ব্যবহারে সিসুর জন্মগত সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ তাই ওই সময় কোন ওষুধ না খেয়ে নিমপাতা, হলুদ বাটা লাগাতে পারেন৷ অনেক সময় গর্ভাবস্থায় মহিলারা অ্যান্টি এজিং ক্রিম পেটে মেখে থাকেন৷ এমন না করাই ভাল৷ এক্ষেত্রে অলিভ ওয়েল ম্যাসাজ করুন৷ এসময় চুলে হাইলাইটস করবেন না৷ এছাড়াও প্রতিদিন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খেতে পারেন৷ তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী

তথ্য ও ছবি : কেএন

পাঠকের মতামত