প্রকাশিত: ২২/০৫/২০১৮ ৬:০৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৩৬ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক : মেডিকেল কলেজে ফাইনাল ইয়ারে পড়ছিলেন জারিন তাসনিম রাফা। আর কিছুদিন পরই ডাক্তার হয়ে বের হতেন। নেমে পড়তেন মানুষের সেবায়। কিন্তু হঠাৎই রাফার সে যাত্রা থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের রাফা দূরারোগ্য একিউট মায়েলোব্লাস্টিক ক্যান্সারে আক্রান্ত। দেশে এর কোনো চিকিৎসা এখনো নেই। ভারতে যদিও এ রোগের উন্নত চিকিৎসা রয়েছে, তবে প্রয়োজন অনেক টাকার।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যত দ্রুত পারা যায় তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। কোলকাতার টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন, ৮০ লাখ টাকার মতো প্রস্তুত রাখতে।

রাফার চিকিৎসা করাতে গিয়ে তার পরিবার ইতোমধ্যেই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। এতো টাকার ব্যয় বহন করা তাদের পক্ষে মোটেই সম্ভব না। তাই নিরুপায় হয়ে চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর খোলা চিঠি লিখেছেন রাফা।

এই মেডিকেল শিক্ষার্থী বর্তশানে অ্যাপোলো হসপিটালের হেমাটোলজিস্ট ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহর অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ডা. সালেহ পরিবর্তন ডটকমকে রাফার রোগের খারাপ অবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, ‘তার রোগটা এখন খুব একটা ভালো পর্যায়ে নেই। এটা ফার্স্টলাইন থেরাপিতে রেসপন্স করেনি। এখন বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা আবশ্যক।’

তিনি বলেন, ‘রাফার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের জন্য যে ডোনার দরকার, তার ভাইয়ের বোনম্যারোর সঙ্গে ম্যাচ করেনি। সেক্ষেত্রে বাবা-মা বা অন্য ডোনারের কাছ থেকে কালেক্ট করাটা ডিফিকাল্ট। যদি তার ভাইয়ের সাথে ম্যাচ করত, তাহলে হয়তো আমরা করে দিতে পারতাম। ফলে এখানে এটা রিস্কি হয়ে যায়।’

ডা. সালেহ আরও বলেন, ‘তার জন্য যে চিকিৎসা প্রয়োজন বাংলাদেশে তার ভালো ব্যবস্থা নেই। আমরা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। এর জন্য কমপক্ষে ৩০-৪০ লাখ টাকা লাগবে। সেক্ষেত্রে তার জন্য যদি ফান্ড জোগাড় করা যেত তাহলে ভালো হতো।’

রাফা তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর মর্মস্পর্শী এক খোলা চিঠি লিখেছেন। রাফা তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন-

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!
আজ না পেরে বাধ্য হয়ে আপনার কাছে খোলা চিঠি লিখছি। আমি জানি না- ঠিক কোন ঠিকানায় আর ফোন নাম্বারে আমি আপনাকে খুঁজে পাবো। তাই খোলা চিঠি লিখে দিলাম, কেউ যদি দয়া করে আমার এই আহাজারি আপনার নিকট পৌছায়!

আমার বয়স ২৩। আমি একজন ফাইনাল ইয়ারের মেডিকেল ছাত্রী। আজ আড়াই মাস ধরে মৃত্যুর সাথে লড়ছি! আমার একিউট মায়েলোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া ক্যান্সার যা মধ্যম পর্যায়ে ধরা পড়েছে।

আমাদের দেশের বিভিন্ন অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য ডাক্তাররা আমাকে বলেছেন, হাতে বেশি সময় নেই। আমাকে দ্রুততম সময়ে অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্টে যেতে হবে যা বাংলাদেশে এখনো শুরু হয়নি। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে এর উন্নত চিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত ব্যয়বহুল (৮০ লক্ষ টাকা) যা আমার মধ্যবিত্ত বাবা-মায়ের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়। কেমো নিয়ে নিয়ে আমরা সর্বস্বান্ত। আরও যত দেরি হবে ততই কেমো খরচ এবং আমার মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। আমার জীবনের শুরুতেই আজ মেঘের অন্ধকার নেমে এসেছে। হায়াত আল্লাহর হাতে, তবু চেষ্টা করে দেখতে যদি পারতাম! যদি আমার চিকিৎসাটা হতো! যদি আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারতাম!

আপনি তো কত অসহায়ের পাশে ছিলেন, কত পিতামাতা হারা সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমিও এই দেশের এবং আপনারই সন্তান তবে কেন আমাকে বুকে টেনে নেবেন না, এই দিনে?’

রাফার জন্য কেউ সাহায্য পাঠাতে চাইলে-

রাফার মায়ের অ্যাকাউন্ট- কোহিনুর আক্তার সিদ্দিকা, অ্যাকাউন্ট নম্বর: ১০৯১৩৩০০৫২৫১২ ইস্টার্ন ব্যাংক, বনশ্রী শাখা, ঢাকা।

রাফার অ্যাকাউন্ট জারিন তাসনীম রাফা : ০০১২৭০০০০০০০৯ সাউথইস্ট ব্যাংক, বনশ্রী শাখা, ঢাকা। যোগাযোগ ও বিকাশ- ০১৫৩৪৯৫৩৯৩৫। রকেট-০১৫৩৪৯৫৩৯৩৫-৮।

পাঠকের মতামত

নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, এখন বিসিএস ক্যাডার

গল্প-আড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়জীবনটা উপভোগের সুযোগ আবদুল মোত্তালিবের হয়নি। দুপুর গড়ালেই তাঁকে ছুটতে হতো কাজে। অসচ্ছলতার কারণে ...