প্রকাশিত: ১৪/১০/২০২১ ৬:১৪ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনার তদন্ত চলছে। এই ঘটনার পেছনে যারাই জড়িত থাকুক তাদের খুঁজে বের করা হবে।

বৃহস্পতিবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি আয়োজিত শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমীর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যেই এটার তদন্ত হচ্ছে। ব্যাপকভাবেই তদন্ত হচ্ছে। অনেক তথ্যও আমরা পাচ্ছি। এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটাবে তাদের আমরা খুঁজে বের করবই। আমরা করতে পারব, কারণ এটা প্রযুক্তির যুগ। জড়িতরা যেই হোক আর যে ধর্মের হোক না কেন তাদে বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। আমরা তা করেছি এবং করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু মানুষের ভেতরে এই দুষ্টবুদ্ধিটা আছে- যখন একটা জিনিস খুব সুন্দরভাবে চলছে সেটাকে নষ্ট করা। বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে সেই সময় এই যাত্রাটাকে ব্যাহত করা, সেই সঙ্গে দেশের ভেতরে একটা সমস্যা সৃষ্টি করা। যারা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে না, বিশ্বাস অর্জন করতে পারে না, রাজনীতি নেই, কোনো আদর্শ নেই তারাই এই ধরনের কাজ করে।’

অনুষ্ঠানে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মন্ডল বক্তব্যের শুরুতে কুমিল্লায় ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ‘গতকালের বিষয়ে আপনাকে বিব্রত করব না। শুধু এইটুকু বলব, আমাদের লোকেরা ভালো নেই, তারা ভীত। আমাদের কাছে খবর আছে আগামীকাল জুমার পর তারা ঝামেলা করতে চায়। আপনার গোয়েন্দারাও এটা জানে।’

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে কিছুটা শঙ্কার কথা পূজা কমিটির সভাপতি সাহেব বলেছেন। আমরা অবশ্যই এ ব্যাপারে জানি, আর আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। এই নীতিতেই আমরা বিশ্বাস করি।’

এ সময় স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগে বিভিন্ন মন্দিরে যেতাম, ঘুরতাম, খেতাম। এখন আর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পারি না। আমি বের হলেই জ্যাম লেগে যায়। ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশনে যেতাম। এখন একটা বড় জেলে বন্দি আছি। ২০০৭ একটা ছোটো জেলে ছিলাম।’

কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘীর উত্তরপাড়ের একটি পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। এরপর বুধবার সকাল থেকে শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ওই মণ্ডপের পূজা কমিটি বলছে, সেখানে পবিত্র কোরআন শরিফ কী করে এল সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই।

এ ঘটনার জের ধরে চাঁদপুর, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা হয়। দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসনের চাহিদা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এরই মধ্যে কুমিল্লা, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জসহ ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করেছে সরকার

পাঠকের মতামত