প্রকাশিত: ১০/০১/২০১৯ ৫:৪১ পিএম

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি :
কুতুবদিয়ায় গত ডিসেম্বর মাসে ৩১৬ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর ওই সময়ে নিউমুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ১৪ শিশু। হাসপাতালের তথ্যমতে প্রতি দিন গড়ে ১০ জনেরও বেশী লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

নতুন বছরের শুরুর প্রথম সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৬ জনেরও বেশী রোগী। এসব রোগীদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল থেকে তাদেরকে কোন ঔষধ দেওয়া হয়নি এবং সেবিকারাও ভালমত দেখভাল করেন না।

ঠান্ডা জনিত কারনে রোটা ভাইরাসের সংক্রমনের ফলে নভেম্বর থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত ডায়রিয়া ও নিউমুনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী হয় বলে জানান, কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি রোগীদের করা অভিযোগ সত্য নয় বলেও জানান।

তিনি জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে শিশুদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। অভিভাবকের অসচেতনতা ও অবহেলার কারনে শিশুরা নিউমুনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়।

তিনি আরো বলেন যে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঔষধ সরবাহ রয়েছে। কোন রোগীকেই হাসপাতালে সরবরাহকৃত ঔষুধ বাহির থেকে ক্রয় করতে হয়না। প্রত্যেক ডায়রিয়া রোগীকে জিংক ট্যাবলেটসহ অন্যান্য ঔষধ পত্র ফ্রিতে দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া বর্তমানে হাসপাতালের সেবার মান অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্স রয়েছে। নার্সরা বিভিন্ন রোস্টারে ভাগ হয়ে দিন রাত রোগীদের সেবা দিচ্ছে বলেন তিনি।

৭ জানুয়ারী হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে রোগীদের সাথে কথা বলে যা জানা যায়-হাদিছা বেগম ৫ মাসের শিশু সন্তান রায়হানকে নিয়ে গত শুক্রবার থেকে তিন দিন ধরে কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে কয়েকটি খাবার স্যালাইন ও জিংক ট্যাবলেট দিয়ে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। বাকী সব ঔষধ কিনে এনেছেন পাশের ফার্মেসী থেকে।

দিনে একবার চিকিৎসকের দেখা পেয়েছেন এরপর আর নার্সরাও খবর নেন না বলে জানালেন তিনি। হাদিছা বেগম উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
গত ৬ জানুয়ারী দেড় বছরের শিশু সন্তান নাহিমকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন কুলছুমা।

শিশুকে নিয়ে তিনি দুই পা এক করতে পারেননি দু’রাত। তার শিশু সন্তানকে হাসপাতাল থেকে কোন ঔষধ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি নার্সদের বারবার ডাকার পরেও সাড়া পাননি বলে জানান অসুস্থ সন্তানের এ জননী।

উত্তর ধুরুং থেকে ৫ মাসে শিশু সন্তানকে নিয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকা নুসরাত জানান, শ্বাস কষ্টের রোগীদের জন্য হাসপাতালে নেবুলাইজার মেশিন থাকার পরেও বাইরের ডায়াগনিস্ট থেকে শিশুকে গ্যাস দিতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে । এতে তার কষ্টের সীমা নেই।

উপজেলার সতরুদ্দিন এলাকার হামিদা বেগম (৫০) বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে ফার্মেসী থেকে ঔষধ এনেছেন। হাসপাতাল থেকে কোন ঔষধ দেয়নি বলে অভিযোগ করেন এ রোগী।

হাসপাতাল থেকে ঔষধ দেওয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগের মাঝেও কয়েকজন রোগী প্রসংশা করেছেন হাসপাতালের বড় ডাক্তারের (পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা)। রোগীরা বলেছেন, তিনি (বড় ডাক্তার) আসলেই হাসপাতালের নার্সদের ছুটাছুটি বেড়ে যায়। তিনি চলে গেলে আবার নিরব হয়ে যান এসব নার্স। বড় ডাক্তার সকল রোগীর ঔষুধ হাসাপাতাল থেকে দিতে বলেন। কিন্তু নার্সরা তা দেন না । সব অভিযোগ হাসপতালে ভর্তিকৃত রোগীদের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ মানতে নারাজ।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ জয়নাল আবেদীন জানান, হাসপাতালে জনবল সংকট আছে ঠিকই। কিন্তু রোগীদের সেবার কোন ঘাটতি হচ্ছে না। রোস্টার অনুযায়ী ডাক্তার ও নার্স রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।

নিউমুনিয়ায় আক্রান্ত শিশু ও এ্যাজমা রোগীদের নেবুলাইজার ব্যবহারের ব্যপারে তিনি বলেন, সন্ধ্যায় নিয়ম মাফিক বিদ্যুতের কম ভোল্টেজ ও দিনে বিদ্যুৎ না থকার কারনে হাসপাতালে থাকা নেবুলাইজার রোগীদের কোন কাজে আসছে না।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ৫৯ সেনা-বিজিপি সদস্য

আরাকান আর্মির হামলার মুখে ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ...