প্রকাশিত: ১৬/০১/২০১৭ ৫:৪৩ পিএম , আপডেট: ১৬/০১/২০১৮ ৯:৫৮ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা আশ্রয়হীন উঠতি বয়সের কিশোরীদের দিয়ে জোর করে যৌন ব্যবসা করানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ অভাবের তাড়নায় সেচ্ছায় এ পথে পা বাড়াচ্ছে। কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায় ধস নামায় একশ্রেনীর হোটেল মালিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এ সমস্ত রোহিঙ্গা কিশোরীদের নিয়ে যৌন বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে এসব রোহিঙ্গা কিশোরীরা পুলিশের হাতে আটক হলেও পেশাদার দালালদের সহযোগিতায় তারা জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো যৌন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা অসহায় এসব কিশোরীদের চাকুরী প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে নিয়ে জেলা শহর ও দেশের বিভিন্ন স্থানের নামী-দামী হোটেলে দেহ ব্যবসা করা হচ্ছে বলে ক্যাম্পের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি নতুন তৈরী করা সীমান্ত লাগোয়া বালুখালী বস্তিতে ৪ জন রোহিঙ্গা কিশোরী ধর্ষনের শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বখাটেসহ দালাল সিন্ডিকেট রোহিঙ্গাদের আশ্রয়হীনতার সুযোগ নিয়ে তাদের যৌন বানিজ্য নামানোর প্রলোভন দিচ্ছে।

অভাবের তাড়নায় নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ এ পথে নেমে পড়ছে পেটের দায়ে। এ পর্যন্ত সারা দেশে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলার পুলিশের হাতে অর্ধশত রোহিঙ্গা মহিলা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এর মধ্যে অনেক পাচারকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।আবার তাদের মধ্যে অনেকই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এছাড়াও রোহিঙ্গা বস্তি ভিত্তিক একটি শক্তিশালী পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে।

সুত্রে জানা গেছে, পাচারকারী চক্র গার্মেন্টসে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তির কিশোরীদেরকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দিচ্ছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরনের ফলে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকা করা হচ্ছে। কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে কিশোরীদের নিয়ে পাচারকারী চক্র বিক্রি করার সময় ২০ হাজার, ৫০ হাজার বা ১ লক্ষ টাকায় দরদাম করে অপর সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাও দরদাম নির্ধারিত হয় গায়ের রঙ, চেহারা ও বয়সের উপর ভিত্তি করে। সম্প্রতি কক্সবাজারের বিভিন্ন নামী-দামী হোটেলে পর্যটন মৌসূমকে কেন্দ্র করে পাচারকারী চক্র দেদারছে চালাচ্ছে রোহিঙ্গা কিশোরীদের দেহ ব্যবসা।

গেল বছর ঢাকার সূত্রাপুর থানায় কুতুপালং শিবিরের ডাকাত সর্দার নুরুল হক মাঝির মেয়ে ফাতেমা বেগম ৫/৬ জনের একদল কিশোরী নিয়ে পুলিশের হাতে হোটেলে রাত কাটানোর সময় আটক হয়। এ নিয়ে মামলাও হয়। বর্তমানে মামলাটি ঢাকা আদালতে বিচারাধিন রয়েছে। কুতুপালং এলাকায় ইউপি মেম্বার বখতেয়ার আহমদ উখিয়া নিউজ ডটকমকে জানান, কুতুপালং বস্তি ও ক্যাম্প ভিত্তিক একটি কিশোরী পাচারকারী চক্র সক্রিয় থাকলেও সংশি¬ষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা রহস্যজনক।

কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী উখিয়া নিউজ ডটকমকে জানান, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের মানুষদের কাছে বিষ ফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। তাদের অবাধ বিচরণ বন্ধ করা না গেলে এবং প্রত্যাবাসন করা না হলে বাংলাদেশের ধর্মীয় মূল্যবোধও নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আরও আন্তরিক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়েরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রোহিঙ্গা শিবির থেকে কিশোরী পাচারের বিষয়ে অবগত নয় বলে উখিয়া নিউজ ডটকমকে জানান।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...