প্রকাশিত: ২৩/০৩/২০২০ ৯:২৪ এএম

করোনাভাইরাস বা এই ধরনের সংক্রমণে বেশি ঝুঁকি কাদের? এককথায় বয়স্ক মানুষজন, যাদের বিপদের আশঙ্কা বেশি৷ কমবয়সি টগবগে ছেলেমেয়েদের বা সুস্থসবল মাঝবয়সিদের যেমন সংক্রমণের আশঙ্কা কম বা সংক্রমণ হলেও বিপদের আশঙ্কা তেমন নেই, তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সে রকম নয়৷ একটু এদিক থেকে সেদিক হলে তারা ঝট করে রোগে পড়ে যেতে পারেন, অবস্থা জটিল হতে পারে৷ এমনকি, মারা যাওয়াও অসম্ভব নয়৷ করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইতালিতে দেখা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৯০ শতাংশই আগে থেকে অন্য রোগে ভুগছিলেন। কাজেই যেকোনো বয়সী অসুস্থ ব্যক্তিরাও ঝুঁকিতে রয়েছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে তরুণদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন উন্নত দেশের রাষ্ট্রগুলো। এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রচার হয় যে তরুণ ও শিশু-কিশোররা এই রোগে আক্রান্ত হয় না। মূল ঝুঁকি ৪০–এর বেশি বয়সী মানুষ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, তরুণেরাও এই ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছেন। অন্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এই রোগে মারা যাচ্ছেন বেশি।

১৭ মার্চ ইতালির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের ৯০ শতাংশ আগে থেকেই অন্য রোগে ভুগছিলেন। ৭৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল থেকে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম আড়াই হাজার মানুষের ওপরে একটি জরিপ করেছে। এতে দেখা গেছে, প্রথম আক্রান্ত আড়াই হাজার মানুষের মধ্যে ৭০৫ জনের বয়স ২০ থেকে ৪৪। এত দিন ধারণা করা হচ্ছিল, তরুণদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। তা ঠিক নয়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হওয়া এসব তরুণের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তরুণদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণ এই ভাইরাস সংক্রমণে বড় ভূমিকা রাখছে। কারণ, তরুণেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলের ছুটির সুযোগ নিয়ে পার্টি করছেন এবং সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে তাঁদের এই আচরণ থেকে সরে আসা উচিত। ঘরে বসে সাবধানে থাকার জন্য তিনি তরুণদের পরামর্শ দিয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার চীনে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বয়সসীমা নিয়ে একটি জরিপ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, দুই হাজার চীনা শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, যাদের ১১ শতাংশের অবস্থা বেশ খারাপ। তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

ইতালির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাবে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশের অন্য কোনো রোগ ছিল না। ২৫ দশমিক ১ শতাংশ একটি রোগে, ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ দুটি রোগে, ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ তিনটি রোগে ভুগছিলেন, যাঁদের ৭৫ শতাংশ হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন।

পাঠকের মতামত