প্রকাশিত: ২১/০৫/২০২০ ৯:৪৯ এএম

চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফ দরবার শরীফের পীর মাওলানা কুতুব উদ্দীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন— একথা নিশ্চিত করলেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনও। বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস পরীক্ষার অন্যতম প্রধান ল্যাব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবের পরীক্ষায় মাওলানা কুতুব উদ্দীনের নমুনায় করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়। গত মঙ্গলবার (১৯ মে) ৮৫ বছর বয়সী এই ইসলামী ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

বুধবার (২০ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এমন অবস্থায় করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য সরকার নির্ধারিত নিয়ম মেনেই দাফন কাফন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রামের পুলিশ। সিএমপির উপ-কমিশনার (সিটি এসবি) আবদুল ওয়ারিশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, ‘পরিবার ও মাদ্রাসাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। তারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন জানিয়েছেন।’

মাওলানা কুতুব উদ্দীন মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরের পর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হন। সে সময় বলা হয়েছিল, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন তিনি। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে বুধবার রাতেই আইসিইউযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে মাওলানা কুতুব উদ্দীনকে রাজধানী ঢাকার আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছার পর বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তার নিকটাত্মীয় প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বুধবার বিকেল ৪টার পর থেকে হুজুরের হার্টবিট পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকরা। বিকেল সাড়ে ৫ টায় আমরা হুজুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হই।’

মাওলানা কুতুব উদ্দীন দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।

মাওলানা কুতুব উদ্দীন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আধুনগর ইউনিয়নের সূফী মিয়াজী পাড়া গ্রামের সন্তান। লেখাপড়া করেছেন চুনতী হাকিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ও চট্টগ্রাম শহরের দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসায়। তিনি ১৯৫৯ সালে স্বর্ণপদক সহ প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করে কামিল পাস করেন।

হাদিস বিশারদ ও কুরআনের তাফসিরকারক মাওলানা কুতুব উদ্দীন আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষাবিদ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান। কর্মজীবনে তিনি বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশের সেরা অধ্যক্ষের পুরস্কারও অর্জন করেন।

তিনি চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকার ধনিয়ালা পাড়ায় অবস্থিত বায়তুশ শরফের প্রতিষ্ঠাতা প্রখ্যাত সূফীসাধক মাওলানা মীর মুহাম্মদ আখতার (রহ) এবং বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার শাহ সূফী মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার (রহ) এর সান্নিধ্যে অবস্থান করে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন হন। ১৯৯৮ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি বায়তুশ শরফের পীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার লেখা একাধিক বিখ্যাত ধর্মীয় গ্রন্থও রয়েছে।

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...