প্রকাশিত: ২৬/০৫/২০২০ ৬:০১ পিএম

সোয়েব সাঈদ::
চলমান বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও জনস্বার্থে কাজ করতে পরিবার পরিজন ছাড়াই প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করেছেন রামুর এক জনপ্রতিনিধি ও সরকারি বিশেষ বাহিনীতে কর্মরত এক সদস্য।

এরা হলেন, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স ও সরকারি বিশেষ বাহিনীতে কর্মরত রামুর প্রতিনিধি আবু হানিফ।

জানা গেছে, পরিবার পরিজন নিয়ে কক্সবাজার শহরেই বসবাস করেন, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স। ২ মাস পূর্বে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি নিজ ইউনিয়নের চলে আসেন। সেই থেকে নিজের পুরনো বাড়িতে একা অবস্থান করে রাত-দিন পুরো ইউনিয়ন চষে বেড়ান। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণসহ এলাকার আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এ সংকটময় সময়েও।

জোয়ারিয়ানালা বাসীকে করোনার কবল থেকে রক্ষার সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি নিজেই রয়েছেন করোনার ঝুঁকিতে। এ কারণে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে তিনি গত ২ মাস তিনি পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্য থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। যারফলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও তিনি এলাকায় অস্থান করেন। ঈদ জামাত সহ পুরোদিন করোনা সচেতনতামূলক প্রচারনার মাধ্যমে কাটিয়েছেন।

অপরদিকে আবু হানিফের বাড়ি চট্টগ্রামের সোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে। নিজের উপর অর্পিত সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রামুর জনসাধারণকে করোনামুক্ত করতে বিগত আড়াই মাস তিনি দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

আবু হানিফের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই জেলায় বিদেশফেরত ব্যক্তিদের হোমকোয়ারেন্টান নিশ্চিত করা এবং এ আইন অমান্যকারিদের প্রথম জরিমানা করেন, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা। ঝূঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইন-লকডাউন নিশ্চিত করা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে এবং অভিযানে নিজেও অংশ নিয়ে সহযোগিতা দিয়ে আসছেন তিনি। করোনাযুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধা হিসেবে রামুতে সুনামও কুড়িয়েছেন তিনি। তবে মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ হলেও তিনি নিজেই এখন করোনা সংক্রমনের ঝূঁকিতে।

এ কারণে তিনি সচেতনতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে সিদ্ধান্ত নেন ঈদে বাড়ি না যাওয়ার এবং এ দিনেও করোনা ভাইরাস রোধে কাজ করার। ৩ মাস ধরে দেখছেন না স্বজনদের মুখ। এরই মধ্যে মমতাময়ী মা, স্ত্রী, একমাত্র সন্তান আর পরিবার-পরিজনদের ছেড়ে বিষন্নতায় অন্যরকম ঈদ কাটাতে হলো তাঁকে। তবে মানুষের দুর্দিনে যে সেবা তিনি দিয়ে যাচ্ছেন এর মধ্যে কিন্তু বড় তৃপ্তি রযেছে। এটা হলো আত্মার তৃপ্তি। এ তৃপ্তিই হয়তো তাকে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ না করার বিষন্নতা মুছে দেবে।

জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স ও আবু হানিফের মত আমাদের দেশে সম্মানিত চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থকর্মী, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ি, বিত্তবান ব্যক্তি, গণমাধ্যম কর্মী, গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তি, বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তি, বেসরকারি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গসহ অনেকে স্ব-স্ব অবস্থান ও সামর্থ্য অনুযায়ি কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যোদ্ধার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। যাদের অনেকে মৃত্যুর স্বাদও গ্রহণ করেছেন। অনেকে আক্রান্ত হয়ে দূর্বিষহ সময় পার করছেন।

আল্লাহপাক যেন করোনার ভয়াল সময়ে নিজেদের উজাড় করা জনপ্রতিনিধি কামাল শামসুদ্দিন আহমদে প্রিন্স ও আবু হানিফসহ সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করেন।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...