প্রকাশিত: ০৫/০৭/২০২০ ৭:৪২ এএম

কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের কারণে দিন দিন কক্সবাজার পৌর শহরে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কমে আসছে।

ইতিমধ্যে গত এক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে ৪০০ করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংম্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও তথ্য সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা এবং আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। যা সম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবকদের কারণে এমনটায় মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (৪ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম কর্তৃক স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবক ও চিকিৎসকদের উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উঠে আসে।

এর আগে স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত একটি আলোচনা সভা করে স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। আলোচনা সভায় কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে আরও কীভাবে করোনা রোগী ও তাদের সংম্পর্শে আসা ব্যক্তিদের দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করা যায় এবং করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞরা নানা পরামর্শ প্রদান করেন।

আলোচনা সভায় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর বলেন, ‘এটি একটি দুর্যোগ। এই দুর্যোগে স্বেচ্ছায় পৌর আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবকরা করোনা পরিস্থিতির শুরুতেই মাঠে রয়েছে। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা আশা করি; এসব স্বেচ্ছাসেবকদের যেন সবাই সহযোগিতা করে।’

কক্সবাজার মেডিক‌্যাল কলেজের ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির বলেন, ‘স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবকরা কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ করছে। যার মাধ্যমে এখন করোনা রোগীদের শনাক্ত ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা এবং আইসোলেশন রাখা সম্ভব হচ্ছে। যার ফলে ক্রমশঃ পৌর এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নগামী।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনায় যারা আক্রান্ত হচ্ছে তারা ৯ দিন পর সুস্থ কোনো ব্যক্তিকে সংস্পর্শ করলেও করোনাভাইরাস ছড়ায়। সুতরাং এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্বিতীয়বার স্যাম্পল দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি ২১ দিন পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে এখন যে স্বেচ্ছাসেবকরা কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ করছে তাদেরকে সবাই সহযোগিতা তথ্য দিয়ে সহযোগিতার করার আহ্বানও জানান তিনি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘করোনা মহামারীতে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে স্বেচ্ছায় যে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন তারা সত্যিই একেকজন বীর। এই বীররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে বাঁচানোর জন্য করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই পরিশ্রম করছে। এখন যে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবকরা এটি সত্যিই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। কারণ, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ও তাদের সংম্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ ও তাদের সেবা দেওয়ার কাজগুলো এই স্বেচ্ছাসেবক করছেন। সুতরাং সবাই মিলে এই কাজে স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা করি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রধান মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের প্রায় সাড়ে চার জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবকরা। এর পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংম্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও সংম্পর্শে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষাসহ আইসোলেশনে রাখা সম্ভব হয়েছে। যার কারণেই কিন্তু কক্সবাজার পৌর শহরে দিন দিন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা নিম্নগামী।

‘এটি সম্ভব হয়েছে এই স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবক কারণে। এই স্বেচ্ছাসেবকরা দিন রাত বিনামূল্যে কক্সবাজারে করোনাভাইরাস মুক্ত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং তাদের জন্য এই সামান্য উপহার দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।”

আলোচনা সভার শেষে কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ে নিয়োজিত ১২টি ওয়ার্ডের ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মেডিক‌্যাল অফিসার ডা. তৌহিদুল আনোয়ার, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগ ১০ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক দীপক দাশ ও স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবক টিমের সমন্বয়ক ওয়াহিদ মুরাদ সুমন ও মো. ফয়সল হুদা।

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...