প্রকাশিত: ২২/০৯/২০১৬ ৯:১৮ পিএম

নিউজ ডেস্ক::

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় বিশেষ ওয়ার্ডের একটি বিছানায় কাঁদছে এক শিশু শিক্ষার্থী। কারণ জিজ্ঞাসা করতেই কান্না আরও বাড়িয়ে দিল। অঝোরে কেঁদে কেঁেদ বলল- পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সে সর্বস্ব হারিয়েছে। এখন তার কিছুই নেই। শিশুটির বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে।

আলাপকালে জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত আটটার দিকে অষ্টম শ্রেণি পড়–য়া ১৪ বছর বয়সি শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। সে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে, ঘটনার দিন রাতে তার ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে ফুফুর বাড়িতে যাচ্ছিল। বাড়ি থেকে বের হয়ে মুছা সিরাজবিল পর্যন্ত পৌঁছলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা মো. ইকবালসহ আটজন যুবক তাকে আটকায়। এসময় তারা হুমকি দিয়ে তার ভাইকে তাড়িয়ে দেয়। পরে বাকি সাত জনের সহযোগীতায় ইকবাল তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে তার

মা’সহ এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
শিশুটি আরও জানায়, মোহাম্মদ ইকবাল (২৩) চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে একই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ইকবাল ইতিপূর্বে বহুবার তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তাকে অপহরণ, ধর্ষণ এবং জানমালের ক্ষতিসাধন করবে বলে হুমকি দিয়েছিল। এই শিক্ষিত বখাটের ভয়ে অনেক সময় স্কুলেও যেতে পারেনি সে।
শিশুটির চাচা বলেন, তার ভাতিজিকে খুব নির্যাতন চালিয়েছে ওই লম্পট। রক্তাক্ত অবস্থায় কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আশংকাজনক হওয়ায় ঘটনার পর দিন ১৪ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। মেয়েটি এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাঁদছে। অভিযুক্ত লম্পট প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছি না। তারপরও মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে তাকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ আহমদ বলেন, ওই শিক্ষার্থীর শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এই পর্যন্ত দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। রক্তের আরও প্রয়োজন হতে পারে। মেয়েটিকে কিছুক্ষণ পর পর হাসপাতালের বিছানায় কাঁদতে দেখে নিজেরও খারাপ লাগছে।
জানতে চাইলে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অংসা থোয়াই বলেন, এ ব্যাপারে ভিকটিমের চাচা বাদি হয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামি ইকবাল পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।

পাঠকের মতামত