প্রকাশিত: ০৭/০৭/২০১৮ ২:২৩ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:০৩ এএম

নিউজ ডেস্ক::
বিরল ঘটনার জন্ম দিলেন শাহাবুদ্দীন! তিনি নিজে নিজে পবিত্র কুরআন মুখস্ত করে হাফেজ হন। তাও আবার খুব কম সময়ে। এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে থেকে। তিনি কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ৬ষ্ঠ ব্যাচের (শেষ বর্ষ) ছাত্র। ২০১৩-১৪ সেশনে মেডিকেলে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। শুরুতে মেডিকেলের অন্তর্ভুক্ত কালোর দোকানস্হ সপ্তম তলায় হোস্টেলের একটি কক্ষে উঠে। ঐ কক্ষেই উনারর হাফেজ হওয়ার যাত্রা শুরু।

তিনি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা পালং গ্রামে ১১ই জানুয়ারি,১৯৯৫ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। উনার পিতার নাম সব্বির আহমদ ও মাতার নাম গোল চেহের বেগম। ৭ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। পরিবারের সবার আদরের একজন।

তিনি ২০১৫ সালে কুরআন মাজিদ হাতে নেন। প্রথম বছরেই মাত্র দু‘ মাসে ১০ পারা মুখস্ত করেন। পরের বছর ২০১৬ সালে আরো ১০ পারা মুখস্ত করেন। ২০১৭ সালে নতুন ক্যাম্পাসে নতুন হোস্টেলে আসার পর সে মারাত্মক পেপটিক আলসারে আক্রান্ত হন। এ কারণেই তিনি ঐ বছর কুরআন মুখস্ত করতে পারেন ৫ পারা।

প্রতি বছর রমযান মাস আর প্রফেশনাল পরীক্ষার পরের এক মাস উনার কুরআন মুখস্ত করার গুরুত্বপূর্ণ সময়। প্রতি বছর মে মাসে প্রফেশনাল পরীক্ষা থাকার কারণে উনাকে একাডেমিক পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হতেন। এই বছর অর্থাৎ ২০১৮সালের সামনে নভেম্বর মাসে উনারফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসেবে চলতি বছরের রমযান মাসটা উনার জন্য কম ব্যস্তময় ছিল। এই বছর শাহাবুদ্দীন রমযানের শেষ দশ দিন মসজিদে ইতিকাফ থাকেন। সেখানে বসেই বাকি শেষ ৫ পারা মুখস্ত করে হেফজ শেষ করেন।

উনার সুললিত কন্ঠে কুরআন তেলাওয়াত সত্যি মুগ্ধ হবার মত। ক্যাম্পাসে মসজিদ হবার আগে ২০১৭ সাল পুরো বছর সবাই উনার পেছনে নামায পড়ার জন্য উৎসুক থাকত।এছাড়া আরবি ব্যাকরণ, ফিকহ্, হাদিস ও তাফসির বিষয়ে উনার যথেষ্ঠ দখল আছে। হোস্টলে বসেই কিন্তু উনার এসব জ্ঞানের হাতেখড়ি।

তিনি চাকবৈঠা পালং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে। ঐ বছর তিনি ট্যালেন্টপুলে প্রাথমিক বৃত্তি লাভ করেন। এরপর মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হবার প্রবল বাসনায় পিতা-মাতাকে না বলে স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করেন। পরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পিতা-মাতার প্রবল ইচ্ছায় উনি উখিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু করেন। তিনি ২০১০ সালে এসএসসি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন ‘এ+’ পেয়ে পাস করেন। এরপর ২০১২ সালে কক্সবাজার হার্ভাড ইন্টারন্যাশনাল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করেন। ২০১৩ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে কক্সবাজার মেডিকেলে ক্লাস শুরু করে।

বর্তমানে তিনি ফাইনাল ইয়ারের একজন নিয়মিত ছাত্র। মূলত, ছোটবেলায় হাফেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হবার প্রবল বাসনায় উনাকে মেডিকেল হোস্টেলে বসে নিজে নিজেই কুরআন মুখস্ত করতে ঊদ্বুদ্ধ করেন। কুরআনের পেছনে লেগে থাকলেও প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় তিনি নিয়মিতভাবে পাস করেন।

শাহাবুদ্দীন ব্যক্তিগত জীবনে খুব সাদামাটা জীবন যাপন করেন। মেডিকেলে সবার কাছে তিনি জাকির নায়েক, হাফেজ সাহেব, হুজুর ইত্যাদি নামে পরিচিত। স্যারদের কাছেও উনার বেশ সুনাম। সিনিয়র, জুনিয়র, বন্ধু ও কর্মচারীদের মাঝে তিনি খুব সমীহ-সম্মানের একজন।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...