প্রকাশিত: ১১/০৭/২০১৯ ৮:০৩ এএম

বর্ষা মৌসুম আসলেই আতকে উঠেন কক্সবাজার শহরবাসী।এসময় বৃষ্টি যেন অভিশাপে রূপ নেয়। দীর্ঘ বছর ধরে চলা শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজেও সমাধান মিলেনি।তাই আষাঢ়ের ভারী বর্ষণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।প্রতিটি সড়ক-উপসড়কের নাজুকতা, ড্রেইন দখল ও ক্রমন্বয়ে সরু হয়ে আসায় জলাবদ্ধতায় পৌরবাসীর কষ্টের মাত্রা বেড়েছে সীমাহীন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২২ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে।আরও কয়েকদিন টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।

সরেজমিনে দেখা যায়,দিনভর মুষলধারে বৃষ্টিপাতে শহরের নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের সাথে নালার পানি একাকার হয়ে গেছে রাস্তায়।

সমিতি পাড়া, লাইট হাউস, কলাতলী, হোটেল মোটেল জোন, বড় বাজার, লালদিঘির পাড়, বাজারঘাটা, নুরপাড়া, এন্ডারসন সড়ক, পেশকার পাড়া, টেকপাড়া, তারাবনিয়ার ছড়া, রুমালিয়ারছড়া, আলির জাহাল, বিজিবি ক্যাম্প, বাসটার্মিনাল এলাকা ও উপজেলা গেইটের আশপাশ হাটু পানির নিচে রয়েছে।

আগে থেকে শহরের সড়ক-উপসড়কে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। উঠে গেছে কার্পেটিং। টানা বৃষ্টিপাতে অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। রাস্তার ছোট গর্তগুলো মিনি পুকুরে রূপ নিয়েছে। জলাবদ্ধতায় রাস্তার গর্ত বুঝার উপায় নেই। তাতে ঘটছে দুর্ঘটনা।

এছাড়া সীমাহীন কষ্ট নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। অনেকে এলাকায় বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে নষ্ট হয়ে গেছে মূল্যবান পণ্য ও মালামাল। কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি সংকট।

বড় বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াহাব বলেন, বর্ষা আসলে তাদের কষ্টে সীমা থাকে না। রাস্তার পানি দোকানে ঢুকে নষ্ট হয়ে যায় মালামাল। ফলে লোকসান গুণতে হয় এখানকার ব্যবসায়ীদের। তিনি ড্রেইন দখলমুক্ত ও রাস্তা সংস্কারের দাবি জানান।

টেকপাড়ার ব্যাংকার বেলাল বলেন, এই এলাকার নালাগুলো খুব সরু। পানি নিষ্কাশনে ব্যঘাত হওয়ায় বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে আছে। অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। তাছাড়া গত এক বছরে এখানকার রাস্তায় সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি।

হোটেল মোটেল জোন এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ী বোরহান উদ্দিন বলেন, বিশ্বে কক্সবাজারের সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখানকার রাস্তার অবস্থা, ড্রেনেজ ও আবর্জনা ব্যবস্থা খুব নাজুক। যার কারণে পর্যটকেরা এখানে আসলে নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে ফেরেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।

“আমরা কক্সবাজারবাসীর” এইচ,এম নজরুল ইসলাম বলেন,কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং কক্সবাজার পৌরসভার মধ্যে বর্তমানে রাস্তা নিয়ে টানাটানি চলছে। এক বিভাগকে বললে তারা তাদের আওতায় সে রাস্তা পড়েনি বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে। এভাবে দায়সারা থাকলে ভবিষ্যত পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ। সবার উচিৎ কক্সবাজারের স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, শীঘ্রই সব এলাকার রাস্তা সংস্কার করা হবে। সেই সাথে উন্নত করা হবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এখানে একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। জনতার কাছে সবাই দায়বদ্ধ। তাই তাদের উন্নয়নে, কক্সবাজারের উন্নয়নে তিনি কারও সাথে কোন আপোষ করবেন বলে জানিয়ে দেন।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ নিয়ে উন্নয়ন সমন্বয়ন কমিটির সভায় আলোকপাত করা হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ব্যবস্থা গ্রহণে বলা হবে।

পাঠকের মতামত

পুলিশ থেকে বাঁচতে জীবনটাই দিলেন সিএনজিচালক

গ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ...

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চলন্ত সিএনজিতে সিলিন্ডার বি’স্ফোরণ, চালক নিহত

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চন্দনাইশ এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে ...