প্রকাশিত: ২৬/০৯/২০১৮ ১০:২৯ পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::
কক্সবাজার শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মো. রাইয়ান নামে দেড় বছর বয়সী এক শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে তিনটায় ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে এঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই লাপাত্তা হয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিহত শিশুটি উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মরিচ্যা পাগলির বিল এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে।

রোগির স্বজনেরা জানান, গত শুক্রবার গরম পানি পড়ে কোমর থেকে নিচের অংশে কিছুটা পুড়ে যায় শিশু রাইয়ানের। পরে তাকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সোমবার (২৪ image সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার শহরের ফুয়াদ আল খতিবে ভর্তি করা হয়। সেখানে হাসপাতালের ৫ম তলার ৫০৬ নম্বর কেবিনে রাখা হয়। পরে বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটায় শিশু রাইয়ানের মৃত্যু হয়।

নিহত রাইয়ানের চাচা মোহাম্মদ আলম জানান, সোমবার ভর্তি করানোর পর থেকেই হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুল কবির খানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল রাইয়ানের। পরে মঙ্গলবার বিকেলে রাইয়ানকে হাসপাতালে দেখতে ডা. আব্দুস সালাম নামে তাদের পরিচিত এক দেখতে আসেন। ডা. সালাম দেখতে আসাতে ক্ষেপে যান ডা. নুরুল কবির খান। পরে ডা. সালাম চলে যাওয়ার পর তিনি (নুরুল কবির খান) রোগির ফাইল ছুড়ে ফেলে দেয়। ডা. সালামকে হাসপাতালে ডেকে আনাতে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এক পর্যায়ে হাসপাতাল থেকে লাথি মেরে বের করে দেবেন বলে হুমকি দেন।

তিনি আরও জানান, মূলত ডা. সালাম হাসপাতালে আসাতেই রাইয়ানের চিকিৎসায় অবহেলা শুরু করেন চিকিৎসক নুরুল কবির খান। এক পর্যায়ে ওভার ডোজ দিয়ে রাইয়ানকে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ তার।

রাইয়ানের মামা মিজানুর রহমান সোহেল জানান, রাইয়ান মারা যাওয়ার পর ফাইল খুজতে গেলে উল্টো টাকা দাবী করে বসে রিসিপশনের দায়িত্বরতরা। টাকার জন্য বিলের কপিও একটি ধরিয়ে দেন। পরে বিকাল সাড়ে পাঁচটায় লাশটি তাদের কাছে হস্তান্তর করে।

তিনি আরও বলেন, রাইয়ান মারা যাওয়ার পর হইহুল্লোড় শুরু হওয়ায় চিকিৎসকসহ পুরো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গায়েব হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বিকাল সাড়ে তিনটায় রাইয়ান মারা গেলেও ছাড়পত্রে বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় উল্লেখ করে লেখা হয়েছে ‘শিশু রাইয়ানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করতে’। অথচ এর দুই ঘণ্টা আগে রাইয়ান মারা যায়।

হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সেলিম উল্লাহ সুজন জানান, ‘ঘটনাটি শুনেছি। সত্য, মিথ্যা জানিনা। হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ হাসপাতাল থেকে হঠাৎ সবাই লাপাত্তা হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

মুঠোফোনে ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. শাহ আলম বলেন, ‘মুমূর্ষু রোগীকে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করি না। এই শিশুটা আদৌ ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে কিনা আমি নিশ্চিত নই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

হলদিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হন। তিনি জানান, শিশুটা মারা যাওয়ার দুই ঘণ্টা পর ছাড়পত্রে লেখা হলো, সরকারি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য যোগাযোগ করার জন্য এবং শিশু মারা যাওয়ার পর পরই সবাই লাপাত্তা হয়ে যায়। হাসপাতালের কেউ কথা বলতে চাচ্ছে না। এর থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সত্য।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন খন্দকার বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...