প্রকাশিত: ২১/০৭/২০১৯ ৭:৪৮ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে হঠাৎ রাজপথে সরব হওয়ার চেষ্টা করছেন নেতাকর্মীরা। তাদের আশা, ঈদুল আজহার আগেই বিএনপিপ্রধান মুক্তি পাবেন। ঈদুল ফিতরের আগেও তার মুক্তির বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত ছিলেন দলীয় সমর্থকরা। যদিও বাস্তবে সেটা হয়নি।

সূত্র মতে, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা সরকারের এক প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। বেশ কিছুদিন আগে থেকে এ আলোচনা চলছে। এরই অংশ হিসেবে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন এবং বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থীরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। আলোচনাও বেশ অগ্রগতি হয়েছে।‘খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারের বাধা হওয়ার কারণ নেই’- সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন এটা তারই ইঙ্গিত। তবে পর্দার আড়ালের এসব বিষয় সামনে আনতে নারাজ বিএনপি। রাজনৈতিক অস্তিত্ব ধরে রাখতে বিভাগীয় সমাবেশ এবং পর্যায়ক্রমে আরও কর্মসূচির দিকে ধাবিত হচ্ছে দলটি।

শুধু কর্মসূচিই নয়, খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবীদের মধ্যে যে সমন্বয়হীনতা ছিল সেটাও দূর করে সমন্বিতভাবে কাজ করতে নিয়মিত বিএনপির সিনিয়র নেতারা আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোর লবিং চালাচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি মানবাধিকার প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাই নতুন কোনো রাজনৈতিক মেরুকরণ না হলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি অনুকূলে রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলের বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচি সরকারের ওপর কতটা চাপ তৈরি করবে- এমন প্রশ্নে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল আউয়াল খান বলেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে জনমত তৈরি হবে, দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হবে। সরকার বাধা না দিলে তিনি শিগগিরই মুক্তি পাবেন।

ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আন্দোলন শুরু হয়েছে। নেত্রী ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে আমরা ঘরে ফিরব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ঈদের আগেই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। তার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টিতে জামিন পেয়েছেন। দুটি মামলায় জামিন হলে তিনি মুক্তি পাবেন।

‘বর্তমানে মামলার বেঞ্চ পরিবর্তন করায় তার মুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করা হয়েছে। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক ছুটিতে থাকায় এ বিলম্ব।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি রাখা হয়েছে। এটা আমরা সবার কাছে তুলে ধরেছি। তার অসুস্থতা নিয়ে ইতোমধ্যে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সরকারের বাধা না থাকলে তিনি দ্রুত মুক্তি পাবেন।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ মুহূর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তিই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে আইনগত লড়াই এবং রাজপথের আন্দোলনসহ যা কিছু করা প্রয়োজন, সবই করব।’২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ওই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে ওই মামলায় সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের দণ্ডাদেশ পান তিনি। এরপর চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পাঠকের মতামত

আশ্রয় নেওয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সদস্যদের ফেরানোর বদলে দেশটির জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা ...