প্রকাশিত: ২৪/০৫/২০১৮ ৮:৩৪ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৩২ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট: ২০১৭ সালের জুলাই মাসের দিকে বাগেরহাট পিসি কলেজের পাশের নদীতে নৌকাবাইচ দেখতে গিয়েছিল একই এলাকার তাহিদুল ইসলাম ও রাসেল শেখ নয়ন। ওই সময় রাসেলের সাইকেলটি উঠে যায় তাহিদুলের পায়ের ওপর। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে তাহিদুল স্থানীয় বন্ধুদের নিয়ে রাসেলকে মারধরও করে। এতে খুব অপমানিত হয় সে। কিন্তু তখন কিছু

না বললেও প্রায় এক বছর পর সেই তাহিদুলকে খুন করে অপমানের বদলা নেয় রাসেল। গত সোমবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) এটিএম বুথের ভেতর তাহিদুলকে খুন করে রাসেল। মঙ্গলবার গভীর রাতে খুলনা থেকে র‌্যাব-১-এর একটি দল রাসেলকে গ্রেফতার করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। অভিযুক্ত রাসেলও অপর একটি বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের কর্মী।

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে গ্রেফতার রাসেলকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন র‌্যাব কর্মকর্তারা। সেখানে র‌্যাব-১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনজুর মেহেদী ইসলাম বলেন, এটিএম বুথের ভেতর নিরাপত্তা কর্মী খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে র‌্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার গভীর রাতে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকা থেকে রাসেল শেখ নয়নকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থাকলেও রাসেল ও তাহিদুল এক সময়ে গ্লোব সিকিউরিটি সার্ভিস নামে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছে। সর্বশেষ সে আইকন সিকিউরিটি সার্ভিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে রিক্রুটিং এজেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিল। ঘটনার রাতে সে প্রতিষ্ঠানটির হয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পোস্টার নিয়ে ওই এলাকায় যায়। একপর্যায়ে ইবিএল বুথের সামনে গেলে সেখানে তাহিদুলের সঙ্গে তার দেখা হয়। পুরনো সহকর্মী হিসেবে তারা ভেতরে আড্ডাও দেয়। ওই সময় রাসেল তাহিদুলকে পুরনো অপমানের কথা মনে করিয়ে দিলে দু’জনে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বুথের ভেতর সিকিউরিটি গার্ডের কক্ষে একটি ছুরি পেয়ে সেটি দিয়েই তাহিদুলকে খুন করে খুলনায় পালিয়ে যায় রাসেল।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানিয়েছে, ওই রাতে এটিএম বুথে তাহিদুলকে দেখেই তার পুরনো ক্ষোভের কথা মনে পড়ে যায়। বিষয়টি তাহিদুলকে বলতেই সে অনুতপ্ত না হয়ে রেগে যায়। এ নিয়ে আবারও দু’জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বুথের ভেতর থাকা একটি ছুরি নিয়ে সে তাহিদুলকে গলায় আঘাত করে। এরপর বুথের লাইট বন্ধ করে দিয়ে সে ছুরিটি পাশের ড্রেনে ফেলে পালিয়ে যায়।

রাসেল জানিয়েছে, খুনের পর সে গুলশানের শাহজাদপুরে নিজের প্রতিষ্ঠানে যায়। সেখানে পোশাক পরিবর্তন করে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে খুলনায় পালিয়ে যায়।

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাসেলকে গ্রেফতারের পর খুব বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। তবে খুনের পেছনে অন্য কোনো কারণ ছিল কি-না বা এর নেপথ্যে অন্য কেউ ছিল কি-না তা জানতে তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পাঠকের মতামত