প্রকাশিত: ২৫/১২/২০১৭ ৯:১৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৮:৫৯ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক:;

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জেলার ২১ টি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা। সরকারি , বেসরকারি, স্বায়িত্বশাষিত সব প্রতিষ্ঠানেই আদায় করা হচ্ছে ফরম পূরনে বাড়তি ফি আদায়। শহরের এবং শহরের বাইরের কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের সাথে কথা বলে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সরকার নির্ধারিত ফির দ্বিগুন আদায় করছে কোন কোন কলেজে। আবার অনেক কলেজে নির্বাচনি পরীক্ষায় এক বা একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ফি। ফলে টাকার অংক বেশি হওয়ায় মেধাবী দরিদ্র পরীক্ষার্থী অনেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান কর্তৃক গত ১১ ডিসেম্বর এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের ফি পূনঃনির্ধারন করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে । উক্ত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরনের জন্য মানবিক ও বানিজ্য বিভাগের ফি ১৯০০ টাকা। তৎমধ্যে নিয়মিত ফি ১৪৮৫ টাকা, কেন্দ্র ফি ৩০০ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি ১১৫ টাকা। এছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২৩২০ টাকা। তৎমধ্যে নিয়মিত ফি ১৬৩৫ টাকা, কেন্দ্র ফি ৩০০ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি ৩৮৫ টাকা। অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য মানবিক ও ব্যবসায় শাখার জন্য ২০০০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২৪১৯ টাকা। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নির্ধারিত ফি এর বাইরে অতিরিক্ত কোন ফি আদায় করলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের নিদের্শনা উপেক্ষা করে জেলার প্রতিটি কলেজে ফরম পুরণে আদায় করছে বাড়তি টাকা। কক্সবাজার কমার্স কলেজের পরীক্ষার্থীর একজন অভিভাবক জানান, ফরম ফিলাপের সময় কলেজে ৮৯৫০ টাকা আদায় করেছে। এরমধ্যে ৮ মাসের বেতন বাবৎ ৪৮০০ টাকা, বিশেষ ক্লাসের নাম করে ১৩শ টাকা, ফরম পুরণে ১৯০০ টাকার স্থলে ২৮৫০ টাকা। কোচিং ক্লাসের নাম করে বিশেষ ক্লাস বলে যে ১৩০০ টাকা নেয়া হয়েছে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ফরম পুরণ করতে অসমর্থ জানায় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এব্যাপারে কক্সবাজার কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ফজলুল করিম জানান, আমরা নিয়ম অনুযায়ী ফরম পূরণের ফি নিচ্ছি। বিশেষ ক্লাসের নামে যে টাকার কথা বলা হয়েছে তা ৮ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নিয়েছিলাম। কিন্তু গভর্ণির বডির সিদ্ধান্ত মতে পুনরায় উক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফরম পূরণের ২৯শত টাকার মধ্যে ১ হাজার টাকা উন্নয়ন ফি বাবদ নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অপরদিকে রামু কলেজে মানবিক ও বানিজ্য বিভাগে নেয়া হচ্ছে ২৯০০ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৩১০০ টাকা। কক্সবাজার সিটি কলেজের পিএমখালীর এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৩৪০০ টাকা। এক বিষয়ে অকৃতকার্য এ পরীক্ষার্থী জানায়, বাড়িতে পানের বরজের পন বিক্রি করে বাবা ফরম পূরনের টাকা যোগাড় করেছে। অথচ সরকার নির্ধারিত টাকা নিলে আমাদের এত কষ্ট পেতে হতোনা। ডুলহাজারা কলেজ, চকরিয়া ডিগ্রি কলেজ, ঈদগাও ফরিদ আহমেদ কলেজ, নাইক্ষংছড়ি এমএ কালাম ডিগ্রি কলেজে, শহরের কক্সবাজার হার্ভাড কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজ, চকরিয়া সিটি কলেজ, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, উখিয়া ডিগ্রি কলেজ, বদরখালী কলেজ, মহেশখালী ডিগ্রি কলেজ টেকনাফ কলেজসহ জেলার ২১ টি কলেজে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী বলে মনে করেন সচেতনমহল। সুত্র : দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত