প্রকাশিত: ১৭/০৭/২০১৮ ৭:৪৪ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৩৮ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
সংকুচিত কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যানবাহনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে উখিয়া-টেকনাফের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে অভিভাবকেরা। পথচারী পারাপারে মারাত্মক সংকটের সৃষ্টি হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে।

বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, টমটম, ভটভটি, ডাম্পার, চাঁদের গাড়ি, অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ ৫ হাজারেরও অধিক বিভিন্ন ধরনের যানবাহন কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে দিনরাত চলাচল করছে। এসব যানবাহনের মধ্যে অবৈধ যানবাহনও রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা শহর থেকে নিয়ে আসা লক্কর ঝক্কর মার্কা গাড়ীগুলো অবাধে চলাচল করার কারনে এ সড়কে সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তির ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তার উপর সড়কের উপর যত্রতত্র ভাবে বাঁশ বোঝাই ট্রাকগুলোর বেপরোয়া বিচরণ স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে। যে কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে মারাত্মকভাবে। সড়কে গত ১০ মাসে এ সড়কে অর্ধশতাধিক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ হারিয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ভারী বর্ষনের সময় প্রায় ২৫ টন ওজনের বাঁশ বোঝাই একটি ট্রাক ক্যাম্পে যাওয়ার পথে বালুখালী কাষ্টমস মৈত্রি সড়ক এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা যান বাহনকে সাইড দিতে গিয়ে খাদে পড়ে উল্টে যায়। এসময় সড়কে চলাচলরত টমটম সিএনজি ও মাহিন্দ্রাসহ ৭টি ছোট যান বাহন ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে শিশুসহ ৪ জন যাত্রী ঘটনাস্থলে মারা যায়। এসময় আহত হয়েছে আরো ১০ জন যাত্রী। নিহতরা হচ্ছে বালুখালী ক্যাম্পের বাসিন্দা নুর কায়েস (২৫), একই ক্যাম্পের তসরিন (২০), তার শিশু কন্যা মোশরফা আকতার (২৭ দিন), বালুখালী পানবাজার এলাকার রোজিনা আকতার (২৬)। গুরুতর আহত হলদিয়া পালং ইউনিয়নের হেলাল উদ্দিন (২১), টেকনাফ নাইট্যংপাড়া গ্রামের ফাতেমা বেগম (২৭), বালুখালী গ্রামের হামিদুর রহমান (১৬),একই গ্রামের আনোয়ারা বেগম (২৫)। এর আগে মে মাসের শেষের দিকে সড়কের জাদিমুরা এলাকায় ডাম্পারের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা উল্টে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সিরাজুল হক বিএ ও জেলা বিএনপির সদস্য সিরাজুল হক ডালিম নিহত হন। এদিকে গতকালের মর্মান্তিক দূর্ঘটনার পর থেকে ফুসে উঠেছে স্থানীয় জনগন। তারা মালবাহী কোন গাড়ীকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ঢুকতে না দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কেউ কেউ গাড়ী গুলো আটকে রাখারও হুমকি দিয়ে রেখেছেন।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওয়ান ওয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি এমনিতে সংকুচিত। যেখানে দুইটি গাড়ি পারাপারে ঝুঁকি নিতে হয়, সেখানে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করছে। সড়কপথে পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, আর্মড পুলিশ, ব্যাটালিয়ান পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করলেও অদক্ষ, অযোগ্য চালকের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।

সম্প্রতি উখিয়া উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দসহ কোস্টট্রাস্টের পক্ষ থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলেও এর আগে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ ও এলজিইডি সড়কটিতে হালকা যানবাহন চলাচলের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া জানান, সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সওজ বিভাগের জায়গা দখল করে বিভিন্ন উপায়ে তৈরি করা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হওয়া ছোট-বড় খানাখন্দগুলো সংস্কার করে যানবাহন চলাচল নির্বিঘœ করার চেষ্টা চলছে।

পাঠকের মতামত

দৈনিক আজাদী’র কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ পেলেন আজিজ রাসেল

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী’র কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রতিশ্রুতিশীল সংবাদকর্মী এম.এ ...