প্রকাশিত: ২৩/১০/২০১৮ ৮:৩৬ পিএম , আপডেট: ২৩/১০/২০১৮ ৮:৫৪ পিএম

শফিক আজাদ,উখিয়া::
মিয়ানমার থেকে গত বছরের ২৫ আগষ্টের পর থেকে এদেশে পালিয়ে এসে সরকারী বন জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৭লাখ রোহিঙ্গা। নতুন-পুরাতন মিলে বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ১১লাখের অধিক রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এসব রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা থেকে শুরু করে সব ধরনের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে ২শতাধিক এনজিও। উক্ত এনজিও গুলোর বিরুদ্ধে শুরু থেকে নানান অভিযোগ উঠে আসলেও মানবতার খাতিরে কেউ কোন দিন প্রতিবাদ করেনি। কিন্তু এবার স্থানীয়দের খতিয়ানভুক্ত জমি জবর দখল করে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কেয়ার বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও সংস্থার বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গা শরণার্থী এলাকা জামতলীস্থ শফিউল্যা কাটা ক্যাম্প-১৬তে এঘটনা ঘটেছে। এসময় ‘কেয়ার’ তাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ার দিয়ে দুটি বসতঘর জোর পূর্বক উচ্ছেদ করেছে এবং জমির মালিকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উক্ত জমির মালিক গুলজার বেগম (৩৭) এবং দিলদার বেগম (৩৫) নামের দুই নারী। ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ওই ২ নারীর সেখানে ৪০ শতক জমি রয়েছে। আবু বক্করের ভিটা নামে পরিচিত এই জমিতে এই ২ নারী দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। গুলজার এবং দিলদার এরা দুজনেই মূলত আবু বক্বরের ওয়ারিশদার। যার খতিয়ান নাম্বার ১৩০,পালংখালী মৌজা এবং জে.এল নাম্বার-১৩। নথি যাচাই করে দেখা গেছে, তারা সর্বশেষ গত ২০১৭ সালেও উক্ত জমির বিপরীতে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেছে।

ভুক্তভোগী দুই বোন জানিয়েছে, কেয়ার বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান তাদের খতিয়ানভূক্ত নিজস্ব জমিটির দিকে কুনজর দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ অক্টোবর সোমবার জোর পূর্বক ক্ষমতা প্রদর্শন করে কেয়ার তাদের নিজেদের ভলান্টিয়ার দিয়ে দীর্ঘদিনের দুটি বসতঘর ভেঙে দিয়ে জায়গাটি তাদের দখলে নেয় এবং সেখানে তারা রোহিঙ্গাদের জন্য শেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও শোনা গেছে।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কেয়ার এবং রিকের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৪০/৫০ জন শ্রমিক পাহাড়ি জমিটি কেটে ছেটে সমতল বানিয়ে ফেলেছে। সেখানে পুরোনো বসত ভিটার আলামতও মিলেছে। বসবাসরত বাসিন্দাদের রোপনকৃত বিভিন্ন চারা গাছ তখনও দেখা যাচ্ছিলো। বসত ঘরের ভাঙচুরকৃত এক সারি ঢেউটিনও দেখা গেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য স্থাপনা তৈরি করতে জমিটির এক অংশে অবস্থিত পাহাড়ে কোদাল চালিয়ে সমতল করতে ব্যাস্ত কয়েকজন শ্রমিক।

এবিষয়ে জানতে কেয়ার বাংলাদেশের সাইট ম্যানেজারের মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগ বলে জানান। এরপরে জেলা তথ্য বাতায়নের সূত্র ধরে এনজিওদের তালিকায় কেয়ার বাংলাদেশের নাম খুঁজে নিয়ে সেখানে উল্লেখিত প্রোগ্রাম ম্যানেজার আতিকুল ইসলামের মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হয়। এসময় প্রতিবেদককে তিনি গত দুই বৎসর ধরে কেয়ারে কর্মরতর নয় বলে দাবী করেন। যার ফলে এবিষয়ে কেয়ার সংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, কারো জোত জমি কোন প্রকার জোর পূর্বক জবর দখল করার ক্ষমতা কারো নেই। এ সংক্রান্ত অভিযোগে পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...