প্রকাশিত: ০৭/০৭/২০২০ ৮:১৬ পিএম

ফারুক আহমদ, উখিয়া ::
উখিয়ার সমুদ্র উপকূলীয় রুপপতি গ্রামে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে মমতাজ মিয়া (৫৫) নামক এক ব্যক্তি কে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। গত ৬ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহতের ছোট ভাই আবদুল আলম।

জানা গেছে, উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রুপপতি এলজিইডি সড়কের বদি আলমের মুদির দোকানের সামনে গত ৪ জুলাই তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মমতাজ মিয়াকে এলোপাতাড়ি মারাত্মক আঘাত করে। শোর চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটে পড়ে তিনি। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উখিয়া হাসপাতাল পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা অবনতি হলে ওইদিন রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৬ জুলাই ভোর সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চমেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন।

নিহতের ভাই বদি আলম ও পুত্র হাসান শরীফ জানান, একই এলাকার মোকাব্বর আহমদ ও তার ভাই মিজানুর রহমান মোজাম্মেল ও মোদাচ্ছের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা দা, কিরিচ লাঠি ও লোহার রড নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মমতাজ মিয়াকে দ্বিতীয় দফা আক্রমণ করে। হত্যার মিশন শেষে বীরদর্পে সন্ত্রাসীরা স্থান ত্যাগ করেন। মারাত্মক আহত মমতাজ ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আমরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েও তাকে শেষ রক্ষা করতে পারিনি। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হন তিনি।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন , পুত্র কামাল উদ্দিন (১৭) প্রকাশ লালাইয়া বাড়ি নারিকেল গাছ থেকে ডাব চুরি করে মোকাব্বর কে বিক্রি করে আসছিল। বিষয়টি জানতে পেরে পিতা মমতাজ মিয়া গত ৪ জুলাই সকালে মৌলভী আবদুস শুক্কুর দোকানের সামনে সি বীচের ডাব বিক্রেতা মোকাব্বর কে ডাব ক্রয় না করার জন্য অনুরোধ করেন। ওই সময় দুজনের মধ্যে তর্ক বিতর্ক ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাদেরকে নিবৃত্ত করে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তাড়িয়ে দেন।

নিহতের ভাতিজা হাবিব উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, চুরিকৃত ডাব ক্রয় না করতে বারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মোকাব্বর ও তার ভাই সহ অপরাপর সহযোগীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দ্বিতীয় দফা আমার চাচাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।

স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এলোপাথাড়ি মারাত্মক জখম করে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে । হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান স্ত্রী। এদিকে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপ পুলিশ পরিদর্শক সহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যাকারীরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এই ব্যাপারে নিহতের ভাই আব্দুল আলম বাদী হয়ে রুপপতি গ্রামের মৃত অলি আহমদের পুত্র মোকাব্বর, মিজানুর রহমান, মোজাম্মেল মোদাচ্ছের ও মোকাব্বির স্ত্রী আরাফা বেগমকে আসামি করে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত