প্রকাশিত: ০২/১২/২০১৬ ৭:৫৮ এএম

সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া নিউজ ডটকম::
একদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী,পুলিশ ও রাখাইন সম্প্রদায়ের নির্যাতন অন্যদিকে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে উৎপেতে থাকা দালালদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে প্রবেশ।নির্যাতনের যন্ত্রনায় কাতর রোহিঙ্গারা কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে এসে  পড়ছে আরেক বিপদে।এখানে কুতুপালং বস্তির কথিত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিককে টাকা দিয়ে বস্তির মধ্যে প্রবেশ করতে হচ্ছে মিয়ানমার থেকে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের।ভাড়ার নামে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা।নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে বানিজ্য মেতেছে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট।

কথিত চেয়ারম্যান আবু ছিদ্দিক
কথিত চেয়ারম্যান আবু ছিদ্দিক

বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে,মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুলিশ ও রাখাইন সম্প্রদায়ের অমানবিক নির্যাতন ও বর্বরতায় শিকার রোহিঙ্গা মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে।এর অধিকাংশই কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে প্রবেশ করছে।কিন্ত রোহিঙ্গা বস্তির স্বঘোষিত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট নতুন আসা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।তাদের দাবী মত টাকা পরিশোধে ব্যার্থ হলে নতুন আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বস্তিতে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা উক্ত সিন্ডিকেট,তাছাড়া রাতের বেলায় যুবতী মেয়েদেরকে তুলে নেওয়ার হুমকিও দিচ্ছে উক্ত সিন্ডিকেট।ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক ও সেকেন্ড ইন কমান্ড ডিপো জাফরের নেতৃত্বে কুতুপালং বস্তিতে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বনবিভাগের জায়গায় পুরাতন বস্তির আশেপাশে টিন, বাঁশ, কাঠ ও পলিথিন দিয়ে ঘর নির্মান করা হচ্ছে।গাছপালা কেটে ও উঁচু জমি সমতল করে সেখানে এখনো শত শত ঘর নির্মাণকাজ চলছে।কেটে উজার করা হচ্ছে বন।স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ডিপো জাফরের তত্ত্বাবধানে সেখানে ঘর তৈরি করে নতুন রোহিঙ্গাদের ভাড়া দেয়া হচ্ছে। কুতুপালং অনিবন্ধিত শরাণার্থী ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়,শত শত ঘর নির্মাণকাজ চলছে।নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেটের ব্যবসার অংশ হিসেবে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। নির্মান করা ঘরের কোনোটি টিনের লম্বা কলোনি,আবার কোনোটা পলিথিন,বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি।এসব ঘরের জন্য রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পরিমাণ টাকা দিতে হচ্ছে।পরিশোধ করতে হয় মাসিক ভাড়াও।২৭ নভেম্বর কুতুপালং অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পে আসা রোহিঙ্গা আবুল ফয়েজ (৩০) জানান, তার বাড়ি মায়ানমারের নাইশাপুরীতে। এখানে এসে তিনি এক স্বজনের ড্যারায় আশ্রয় নিলেও এখন ১০০০ টাকা দিয়ে এক চিলতে জমিতে পলিথিন,বেড়া ও কাঠ দিয়ে ঘর নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে থাকছেন।এ জন্য চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক সিন্ডিকেটকে সে মোটা অংকের টাকা দিয়েছে বলে জানায়।অপর রোহিঙ্গা মো আসাদ জানান,তার ছোট ভাই মো. নূর (১৮) ও বোন রেহেনা (১৬) সেখানকার সেনাবাহিনীর ও পুলিশের গুলিতে ১৮ নভেম্বর নিহত হয়েছে।তার বোনকে নির্যাতন করা হয়েছে।এরপর তিনি পরিবারের ৪ সদস্যকে নিয়ে এই ক্যাম্পে আসেন।পরে ডিপো জাফরকে ম্যানেজ করে ৫০০ টাকা দিয়ে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকছেন তারা।এমন অভিযোগ শত শত। এছাড়াও বস্তিতে প্রবেশ করে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেটের ইশারায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকেই চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই,ধর্ষণ সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে।বিগত দিনে এসব করে ক্যাম্প মাঝিদের অনেকে নানা কায়দায় সম্পদের মালিক হয়েছেন।এ ব্যাপারে জানতে কথিত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে,মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি।তবে এর বিনিময়ে কোন টাকা নেওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ আরমান শাকিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,রেজিষ্ট্যাড় রোহিঙ্গাদেও ব্যাপারে তিনি জানেন,তার বাইরে কোথায় কি হচ্ছে তার জানা নেই।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...