প্রকাশিত: ১৪/০৩/২০১৮ ৮:২৯ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:২৮ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওতে কর্মরত নব বিবাহিতা স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধাঁ দিতে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ের শাশুর বাড়ীর লোকজন পরিকল্পিত ভাবে পিঠিয়ে হত্যা করেছে জামাইকে। ঘটনার ধামা-চাপা দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে তার মূখে বিষ ঢেলে একাকি সিএনজি গাড়ী যুগে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জনপদ বালুখালী পশ্চিমপাড়া এলাকায় সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে।

উখিয়া উপজেলার কোটবাজার টেকপাড়া গ্রামের বজলুল রহমানের ছেলে নিহত নুরুল হাশেম (২৮) এর ছোট ভাই মোহাম্মদ ইমরান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী পশ্চিমপাড়া গ্রামের শামসুল আলমের মেয়ে আকলিমা আক্তারের সাথে তার বড় ভাই নুরুল হাশেমের বিয়ে অতি সম্প্রতি সম্পন্ন হলেও তাকে আনুষ্টানিক ভাবে ঘরে তুলে আনা হয়নি। এছাড়াও স্বামী হিসাবে হাশেম প্রতিনিয়ত শ্বশুর বাড়ীতে আসা-যাওয়া ছিল। কোটবাজার মিলিখা মার্কেট ও বালুখালীতে দোকান ছিল তার। এমতাবস্থায় ভাইয়ের অমতে,তার স্ত্রী আকলিমা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও সংস্থা পাল্স বাংলাদেশে চাকুরীতে যোগদান করে। স্ত্রীর চাকুরী নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ চরম আকার ধারণ করে।

সোমবার দুপুরের দিকে নুরুল হাশেম তার বিবাহিতা স্ত্রীকে বাড়ী নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে বালুখালীস্থ শাশুর বাড়ীতে গিয়ে স্ত্রী জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। বিকেলের দিকে আকলিমা ক্যাম্প থেকে বাড়ী ফিরে। এসময় হাশেম তার স্ত্রী আকলিমাকে নিজ বাড়ীতে চলে যাওয়ার জন্য তৈরী হওয়ার কথা বললে ঘটনার সুত্রপাত হয়। শুরু হয় বাক-বিতন্ডা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। এক পর্যায়ে শাশুর বাড়ীর লোকজন মেয়ের পক্ষাবলম্বন করে জামাইয়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এক যুগে মারধর করলে ঘটনাস্থলে হাশেমের মৃত্যু হয়। অবস্থার বেগতিক ভেবে হত্যাকান্ডের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার কু-মানসে শাশুর বাড়ীর লোকজন আবুল হাশেমের মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে একাকি একটি ভাড়া করা সিএনজিতে করে উখিয়া হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

ইমরান আরো জানায়, তার ভাইয়ের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাক-মুখ থেকে রক্ত বেরিয়েছে। তারা ভাইয়ের অন্ডকোষ চেপে মৃত্যু নিশ্চিত করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় আবুল হাশেমের পিতা বজলুল রহমান বাদী হয়ে আকলিমা আক্তার আরো কয়েকজনকে আসামী করে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পালর্স বাংলাদেশ এনজিওতে চাকুরী কর্মরত আকলিমা। চাকুরীস্থলে সহকর্মীর সাথে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ও বেপরোয়া চলাফেরা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একাধিকবার মনোমালন্য ও ঝগড়ার ঘটনাও ঘটে। একাধিকবার চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে ফেরাতে বারবার ব্যর্থ হয়।

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, শ্বশুর বাড়ীর লোকজন ঘটনার দিন উখিয়া থানায় জামাতা আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করে। এ নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে নানা রহস্য।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান নিহত আবুল হাশেমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।
এনজিও কর্মী আকলিমার পিতা শামসুল আলমের উদ্বৃতি দিয়ে ইউপি সদস্য নুরুল আবছার চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, এনজিও’র চাকুরী নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।

পাঠকের মতামত