প্রকাশিত: ২৩/০৭/২০১৮ ৮:২২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:২২ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
সরকার জনস্বার্থ ও রাজস্ব আদায়ে উপজেলা ভিত্তিক। ব্যাংকিং সেবা বিকাশ নামের এজেন্ট প্রথা চালু করলেও বর্তমানে তা হতবিপরীত হয়েছে। মিয়ানমার থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা এদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে বিকাশ ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বেড়েছে আশংকাজনক ভাবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক হুন্ডি ও বিকাশ এজেন্ট। যে সব এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসির টাকা সহ ইয়াবা বিক্রির টাকা লেনদেন করা হচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রায়াত্ম ব্যাংক বীমা প্রতিষ্টান গুলোতে রেমিটেন্স কমে গেছে উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বিকাশ ও হুন্ডি ব্যবসা সরকারের আর্থিক প্রতিষ্টানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। তাই এসব ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে,রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিক্তিক সবচেয়ে বেশি বিকাশ ভিক্তক হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে ২০ বিকাশ এজেন্ট। তাদের প্রতিদিনের লেনদেন প্রায় কোটি টাকার উপরে। বিকাশের এজেন্ট সিম ছাড়াও তাদের রয়েছে নামে বেনামে অর্ধশত ব্যাক্তিগত বিকাশ সিম। এসব সিম থেকে প্রতিদিন লেনদেন করা হচ্ছে দোকান ছাড়াও বাড়ী বাড়ী গিয়ে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় যাদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন কুতুপালং বাজারের মৌলভী ছৈয়দুল আমিন,রফিক, বশর, বালুখালী পানবাজারের জাহাঙ্গীর,আনোয়ার, থাইনখালী বাজারের বশর সহ প্রায় ২০ জন বিকাশ এজেন্ট । স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২৫ আগষ্টের আগে এ উপজেলায় ৬/৭ টি বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে দেখা গেছে। তাও খুব সীমিত আকারে। ২৫ আগষ্টের পর থেকে মিয়ানমার হতে পালিয়ে আসা প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়ার ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এসব ক্যাম্প গুলোতে তল্লাশী চালানে দেখা যাবে প্রায় শতাধিক হুন্ডি ও বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হচ্ছে। গত শুক্রবার সকালে অতর্কিত ভাবে কুতুপালং ক্যাম্প বাজারে অভ্যান্তরে একটি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ৭/৮জন লোক ভীড় করছে। এক জন রোহিঙ্গা ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে। এ টাকা কোথা থেকে এসেছে জানতে চাওয়া হলে কুতুপালং বি ব্লকের বাসিন্দা নুরুল্লাহ (৪৫) জানায়, তার ২ ছেলে নুরুল ইসলাম, আলী আকবর দীর্ঘদিন যাবৎ মালয়েশিয়া অবস্থান করছে। তারা এসব টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিকাশে পাঠিয়েছে। এসময় বিকাশ এজেন্ট রোহিঙ্গা নাগরিক ছৈয়দ আমিন অস্বীকার করে বলেন ওই টাকা তার কাজ থেকে নেওয়া হয়নি। অন্যান্য রোহিঙ্গারা সরে পড়তে দেখে বিকাশ এজেন্ট হতভঙ্গ হয়ে পড়ে। পরে স্বীকার করে বলেন, আইনশৃংখলাবাহিনীর লোকজনকে টাকা দিয়ে বিকাশ ও হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারক। এভাবে প্রায় শতাধিক বিকাশ ও হুন্ডি ব্যবসায়ী উখিয়ার বিভিন্ন শরনার্থী ক্যাম্পে প্রকাশ্যে দোকান খোলে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করলেও দেখার কেউ নেই। এছাড়া বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে,বিকাশ এজেন্ট গুলোতে ইয়াবার টাকা লেনদেন হচ্ছে সবচেয়ে বেশী। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা সরকারী বেসরকারি ব্যাংকে জামেলা এড়াতে বিকাশের লেনদেনকেই নিরাপদ হিসেবে বেচে নিয়েছে। অনেক এজেন্ট সরাসরি ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বিকাশে কোটি কোটি টাকার ইয়াবার লেনদেন হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিকাশ এজেন্ট জানান। তাছাড়া প্রতিদিন যে পরিমান টাকা লেনদেন হচ্ছে তা থেকে সহজেই অনুমেয় এখানে কিছু একটা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উখিয়া পুবালি ব্যাংকের ম্যানেজার তাজুল ইসলাম বলেন, যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মতো বিকাশ এজেন্ট গড়ে উঠার কারনে ব্যাংক খাতে সরকারী রেমিটেন্স উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে। তিনি আরো দাবী করে বিকাশ সাইনবোর্ডের আড়ালে হুন্ডির টাকাও লেনদেন হচ্ছে। যত্রতত্র বিকাশ এজেন্ট গড়ে উঠার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের ব্যস্ত থাকার কারণে ভ্রাম্যমান অভিযান চালানো যাচ্ছেনা। তবে তার কাছে কোন বিকাশ থেকে অবৈধ টাকা লেনদেন হচ্ছে তা জানা আছে বলে সাংবাদিকদের জ্ঞাত করেন।

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...

ইসলামপুরে আটক রোহিঙ্গা যুবককে কুতুপালং ক্যাম্পে হস্তান্তর

জামালপুরের ইসলামপুরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার মো. রোবেল (২২) নামের সেই রোহিঙ্গা যুবককে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ...