প্রকাশিত: ০৮/১১/২০১৭ ৯:১৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:২৬ এএম

বিশেষ প্রতিবেদক::
মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের উখিয়ার জিরো লাইন থেকে আজ বুধবার বিকেলে আরও দুই ফরাসি ‘সন্দেহভাজন’ নাগরিককে আটকের পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয়রা। বিদেশি এই নাগরিকদেরকে নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিপাকে পড়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কোনোভাবেই সহযোগিতা করছেন না আটককৃতরা। জিজ্ঞাসাবাদে দুই বিদেশি উল্টো পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সীমান্তে গত কয়েক দিনের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “একদিকে সীমান্ত দিয়ে অব্যাহতভাবে লোক ঢুকছে। অপরদিকে, দিন দিন পরিস্থিতিও পাল্টে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশি-বিদেশি লোকজন নানা ফন্দি নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। ” তিনি এরকম সন্দেহের বিস্তারিত উল্লেখ না করলেও একের পর এক সন্দেহভাজন দেশি- বিদেশি নাগরিকরা সীমান্তের জিরো লাইন এবং রোহিঙ্গা শিবিরমুখী হয়ে অবস্থান নেওয়ার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।

জেলা প্রশাসক বলেন, “সীমান্তে গত তিন দিন ধরেই একের পর এক দেশি-বিদেশি সন্দেহভাজনদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। আজ বুধবারও যে দুইজন ফরাসি নাগরিক পর্যটকের ভিসা নিয়ে সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থান করছিলেন তাদের নিয়েও প্রশাসন পড়েছে বিপাকে। তবু রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনভাবেই কাউকে সীমান্ত এলাকায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না।
দেশের প্রচলিত আইন সবার জন্যই কার্যকর। “খবর কালেরকন্ঠের।

অপরদিকে, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন রাতে বলেন, “ফরাসি নাগরিকরা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে গত ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশে আসেন। তাদের আজ বুধবার বিকেলে উখিয়ার পালংখালী আঞ্জুমান পাড়ার জিরো লাইন থেকে গ্রামবাসী ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। সেই থেকেই এই বিদেশি নাগরিকরা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এমনকি তাদের কাছে কিছু জানতে চাইলেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ”

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান বলেন, “সীমান্তের জিরো লাইনে বিদেশি পর্যটকের উপস্থিতির সংবাদ পেয়ে আমি দ্রুত সেখানে ছুটে যাই। তখন স্থানীয় লোকজন দুই পর্যটককে সীমান্ত এলাকা থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের দিকে আনছিলেন। আমি তাদের নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চাইলে তারা কোনও তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানান। ” পরে বিদেশিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা এগিয়ে যান। ”

উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, “তারা এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন যে, তাদের সঙ্গে কোনও কথাই বলা যাচ্ছে না। উল্টো তারা নাকি বাংলাদেশে আসার জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা কেন দেওয়া হলো- সেটাই জানতে চান? এ প্রতিবেদন লেখার সময় রাত ৮টার দিকে উখিয়া কুতুপালং থেকে বিদেশি পর্যটকদের কোনও রকমে বুঝিয়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়েছে কক্সবাজার শহরের হোটেলে আসার জন্য। তারা কক্সবাজার সাগরপাড়ের হোটেল সি আলিফ নামের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আরো পড়ুন>> উখিয়ার সীমান্তে বিদেশিদের আনাগোনায় সতর্ক প্রশাসন

পাঠকের মতামত