প্রকাশিত: ২০/০৫/২০১৯ ৮:১৮ পিএম

সেলিম উদ্দীন,ঈদগাঁও।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও বাজারের বিপণি বিতানগুলোতে ভীড় বাড়ছে ক্রেতাদের। পছন্দের পোশাক কিনতে মার্কেটে ঈদের পোশাক কিনতে ঘুরেছেন রাত অবধি। শুধু পছন্দ হলেই হবে না, দরদামে বনলেই প্যাকেট করছেন বিক্রেতারা।
১৪ রমজান সোমবার রাত থেকে ক্রেতাদের পদচারণায় ও বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে বাজারের মার্কেটগুলোতে।
ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে বিক্রেতাদের পোশাক সংগ্রহেরও কমতি নেই।
১০ রমজানের পর পরই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছে। এমনকি নারী-পুরুষের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্যণীয়।
তবে ক্রেতারা চড়াদাম নিয়ে ফের বিপাকে পড়েছে। এদিকে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকার পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছে রমজানের শুরু থেকে। কিন্তু ১৪ রমজান পার হতে না হতেই ব্যবসা মোটামুটিভাবে জমে উঠায় ব্যবসায়ীদের মাঝে আশার আলো দেখা দিয়েছে।
একাধিক ক্রেতার অভিযোগ, নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ছোট-বড়দের কাপড় চোপড়ে ব্যাপকভাবে দাম হাকাচ্ছে। অথচ বিগত বছরের তুলনায় এবছর একটু ঈদ কাপড়ের দাম বৃদ্ধি বলে জানান অনেকে। আবার অনেকে দামের কারণে দোকান ঘুরে ঘুরে পছন্দের কাপড় দেখছেন। ক্রেতারা একটু দেরিতে হলেও মার্কেটমুখী হচ্ছে।
সোমবার ঈদগাঁও বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদগাঁওর নিউ মার্কেট, রহমানিয়া মার্কেট, শফি সুপার মার্কেট, নুর শপিং কমপ্লেক্স, বেদার মার্কেট, মাতবর মার্কেট, কবিরাজ সিটি সেন্টার, তাজ শপিং কমপ্লেক্স, ফরাজী মার্কেট, ছকিনা মার্কেট, বঙ্গ মার্কেট, হাজী মার্কেট ও বাজারের আলোচিত পশ্চিমের কাপড়ের গলিতে উল্লেখযোগ্য ক্রেতার সমাগম ঘটেছে।
বলতে গেলে ভরা মৌসুমেও মার্কেট ভরপুর হতে যাচ্ছে।
তবে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে লাখ লাখ টাকার মালামাল এনে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভরপুর করে রেখেছে। টার্গেট আসন্ন ঈদ মৌসুমে বিকিকিনির লক্ষ্যে। সে পরিমাণ ক্রেতা বাজারমুখী না হওয়ায় তারা অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছে।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিকিকিনি হলেও বড় অংকের বিকিকিনির এখনো দেখা মেলেনি। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা স্ব স্ব মার্কেটে তাদের নিজ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হরেক রকমের ডেকোরেশন পূর্বক আলোক সজ্জার মাধ্যমে ক্রেতাদের দৃষ্টিনন্দন করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পাশাপাশি নিত্য নতুন ডিজাইনের সব বয়সী লোকজনের কাপড় চোপড়ে ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে ক্রয় করা হয়েছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের ভরা মৌসুম হিসেবে ব্যবসায়ীরা সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা ক্রেতাদের।
তার পাশাপাশি নানা মার্কেটের ন্যায় বিভিন্ন কোম্পানীর উন্নতমানের ব্র্যান্ডের কাপড়ের শো-রুম ও ঈদগাঁও বাজারে উদ্ভোধন করা হয়েছে। যেন বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ৬ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে আসা ক্রেতাদের ভালমানের কাপড় উপহার দিতে পারে।
ব্যবসায়ীর বলেন, বহু টাকার নিত্য নতুন ডিজাইনের মালামাল এনে ঈদ মৌসুমে দোকান ভরপুর করেছি। সে পরিমাণ ক্রেতা দেখা যাচ্ছে না। অপরদিকে নানা মার্কেটের পাশাপাশি হকার কিংবা ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ীরাও তাদের ব্যবসা পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। এককথায় আসন্ন ঈদ মৌসুম উপলক্ষ্যে তাদের এ ফুটপাত ব্যবসা জমে উঠছে।
কেননা অল্পদামে ভাল ও উন্নতমানের কাপড় ক্রয় করতে পারে ক্রেতারা।
প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের হতদরিদ্র লোকজন ঈদ মৌসুমে তাদের সন্তানদেরকে ঈদের কেনাকাটা স্বরূপ কাপড় কিনতে ফুটপাত ব্যবসায় চলে আসছে।
তবে দূর-দূরান্তের ক্রেতাদের দাবী পকেটমার, নকল টাকা, ঝাপটাবাজ, ছিনতাইকারী প্রতিরোধে ঈদগাঁওর ঈদ বাজারে নিরবিচ্ছিন্ন পুলিশী টহলের জোর দাবী জানান প্রশাসনের নিকট।
১৪ রমজান রাত ৮ টার সময় বাজারের নিউ মার্কেট, হকার মার্কেট, মসজিদ গলি, কাপড়ের গলি, বাস ষ্টেশনস্থ জাপান মার্কেটসহ ফুটপাতের দোকানগুলোতেও ক্রেতা সমাগম চোখে পড়ার মতো।
মসজিদ গলির এনাম প্লাস ও মনে রেখ শপিং মলে ক্রেতা সমাগম হচ্ছে রমজানের শুরু থেকে।
নিত্য নতুন বাহারি জামা কাপড়, থান কাপড়, শাড়ী, জুতো, প্রসাধনী সামগ্রী এক বসাতে পাওয়া যায় এ শপিং মলে। তাছাড়া দামেও ক্রেতা সাধারণে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা হয় বলে জানান এনাম প্লাসের পরিচালক নাজিম।
প্রতিবারের মতো এবারের ঈদ উপলক্ষে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন নিত্য নতুন ডিজাইনের পোশাক সংগ্রহে রয়েছে বলে জানান মনে রেখ’র বিক্রয় কর্মীরা।এছাড়া বাজারের বাস ষ্টেশনস্থ জাপান মার্কেট, জসিম মার্কেটে প্রতিদিন ক্রেতাদের ভীড় বাড়ছে বলে জানা গেছে।
পরিবারের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে আসা জেরিন জান্নাত বলেন, পোশাক পছন্দ হলে তো হবে না। বিক্রেতারা পোশাকের যে দাম হাঁকছে তাতে দরদাম করতেও লজ্জা লাগছে। যে পোশাকের দাম ৩শত টাকা হবে, অথচ বিক্রেতারা তার দাম হাঁকছে ১ হাজার টাকা। এতে দর করার সুযোগই পাচ্ছি না।
একই কথা জানলেন নারী ক্রেতা শামীমা শরমিন। তিনি জানান, টাকার সাথে পোশাকের দাম আকাশ পাতাল তফাৎ। পোশাকের নির্ধারিত দামের চেয়ে তিনগুণ-চারগুণ হাঁকলে তো কিছু বলার থাকে না ক্রেতাদের।
তবে বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মো. কালাম বলেন, দাম বিক্রেতারা ক্রেতাদের নাগালে রেখেই দিচ্ছেন। বেশি লাভের সুযোগ নেই। প্রতিযোগীতার ব্যবসায় টিকে থাকতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ৫৯ সেনা-বিজিপি সদস্য

আরাকান আর্মির হামলার মুখে ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ...